ঢাকা ০১:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আবু সাঈদ হত্যা মামলার দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ Logo চবি ছাত্রদলের নেতা মামুনকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করল কেন্দ্রীয় ছাত্রদল Logo নর্থসাউথ শিক্ষার্থীর কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে হরগঙ্গায় কোরআন বিতরণ Logo দিনাজপুরে শিবিরকর্মী হত্যা মামলায় উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ৫ জন কারাগারে Logo ঢাকায় আসছেন জাকির নায়েক Logo হাজার হাজার দেশপ্রেমিকের হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন হাসিনা: চিফ প্রসিকিউটর Logo ১৩টি ড্রেজারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ আ.লীগ-বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে Logo টিভিতে যে খেলা থাকছে আজ Logo মধ্যরাতে ঢাবি ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সং’ঘর্ষ Logo ১৭ বছর আন্দোলন করেছি বাসস্ট্যান্ড দখলের জন্য নয়: ইশরাক

‘শেখ মুজিব হত্যার ট্যাগ’ নিয়েও আ.লীগ সরকারে ছিলেন ইনু

টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরই লাগাতার অবরোধের ডাক দেয় বিএনপি। প্রায় তিন মাস ধরে চলে সেই অবরোধ। অবরোধ চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা শুরু হয়। অনেকেই আগুনে পুড়ে মারা যান সেই সময়। যদিও পেট্রোল বোমা হামলায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারছিল না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেই সময় আওয়ামী লীগ সরকারের তথ্যমন্ত্রী ছিলেন হাসানুল হক ইনু।

সাংবাদিকরা নিয়মিতই তাকে এসব হামলার বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেন। একদিন তিনি বললেন, এটাকে বলে অগ্নিসন্ত্রাস। বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের অগ্নি-সন্ত্রাসীরা দেশে অরাজকতার জন্য এমন অগ্নিসন্ত্রাস চালাচ্ছে।

প্রায় সব অনুষ্ঠানেই তিনি এই শব্দটি ব্যবহার করতেন। একে একে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এমনকি প্রধানমন্ত্রীও অগ্নিসন্ত্রাস শব্দটি ব্যবহার শুরু করেন। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন ইনু। সেখানে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার কথা উল্লেখ করে তিনি ‘আগুন-সন্ত্রাসীদের মাইনাসের পক্ষে’ মতামত দেন।

শেখ হাসিনা সরকার পতনের আগে গত ৩০ জুলাই জামায়াত-শিবিরকে ‘অগ্নি সন্ত্রাসী’ উল্লেখ করে তাদের নিষিদ্ধের বিষয়ে মতামত দিয়েছিলেন ইনু। সোমবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক এই তথ্যমন্ত্রীকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ইনুর বিরুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর উল্লাস করার অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিনের। ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে এমপি নির্বাচিত হলেও ২০২৪ এর নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়েও জয়লাভ করতে পারেননি। আওয়ামী লীগের অনেকেই ইনু বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ তুলতেন। তাদের একজন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যিনি একাধিকবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন।

২০২১ সালে বিএমএ ভবনে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় শেখ সেলিম বলেন, ৭৫-এর ১৫ আগস্ট ব্রিগেড কমান্ডারদের কেউ বঙ্গবন্ধুর লাশটা দেখতে যায়নি। সবাই রেডিও স্টেশনে গেছে। সেদিন যারা রেডিও স্টেশনে গেছে, তারা সবাই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। খুনিদের সমর্থন করতে তারা গিয়েছিল। ইনু-তাহের, যারা বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের কথা বলেছিল, তারাও গিয়েছিল খুনিদের সমর্থন করতে। বঙ্গভবনে গিয়ে তারা খুনি মোশতাককে অভিনন্দন জানিয়েছিল।

সর্বশেষ ২০২৩ সালেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে একই কথা বলেন শেখ সেলিম। তবে, বরাবরই জাসদের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে এই কথা অস্বীকার করা হতো।

ইনুকে বর্তমানে ডিবি কার্যালয়ে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় তিনটি হত্যা মামলা এবং রাজধানীর মিরপুরে শিক্ষার্থী আলভী হত্যায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়েছে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে মঙ্গলবার আদালতে তুলে রিমান্ডে চাইবে ডিবি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আবু সাঈদ হত্যা মামলার দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

‘শেখ মুজিব হত্যার ট্যাগ’ নিয়েও আ.লীগ সরকারে ছিলেন ইনু

আপডেট সময় ০৭:৩৮:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৪

টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরই লাগাতার অবরোধের ডাক দেয় বিএনপি। প্রায় তিন মাস ধরে চলে সেই অবরোধ। অবরোধ চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা শুরু হয়। অনেকেই আগুনে পুড়ে মারা যান সেই সময়। যদিও পেট্রোল বোমা হামলায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারছিল না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেই সময় আওয়ামী লীগ সরকারের তথ্যমন্ত্রী ছিলেন হাসানুল হক ইনু।

সাংবাদিকরা নিয়মিতই তাকে এসব হামলার বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেন। একদিন তিনি বললেন, এটাকে বলে অগ্নিসন্ত্রাস। বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের অগ্নি-সন্ত্রাসীরা দেশে অরাজকতার জন্য এমন অগ্নিসন্ত্রাস চালাচ্ছে।

প্রায় সব অনুষ্ঠানেই তিনি এই শব্দটি ব্যবহার করতেন। একে একে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এমনকি প্রধানমন্ত্রীও অগ্নিসন্ত্রাস শব্দটি ব্যবহার শুরু করেন। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন ইনু। সেখানে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার কথা উল্লেখ করে তিনি ‘আগুন-সন্ত্রাসীদের মাইনাসের পক্ষে’ মতামত দেন।

শেখ হাসিনা সরকার পতনের আগে গত ৩০ জুলাই জামায়াত-শিবিরকে ‘অগ্নি সন্ত্রাসী’ উল্লেখ করে তাদের নিষিদ্ধের বিষয়ে মতামত দিয়েছিলেন ইনু। সোমবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক এই তথ্যমন্ত্রীকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ইনুর বিরুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর উল্লাস করার অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিনের। ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে এমপি নির্বাচিত হলেও ২০২৪ এর নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়েও জয়লাভ করতে পারেননি। আওয়ামী লীগের অনেকেই ইনু বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ তুলতেন। তাদের একজন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যিনি একাধিকবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন।

২০২১ সালে বিএমএ ভবনে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় শেখ সেলিম বলেন, ৭৫-এর ১৫ আগস্ট ব্রিগেড কমান্ডারদের কেউ বঙ্গবন্ধুর লাশটা দেখতে যায়নি। সবাই রেডিও স্টেশনে গেছে। সেদিন যারা রেডিও স্টেশনে গেছে, তারা সবাই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। খুনিদের সমর্থন করতে তারা গিয়েছিল। ইনু-তাহের, যারা বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের কথা বলেছিল, তারাও গিয়েছিল খুনিদের সমর্থন করতে। বঙ্গভবনে গিয়ে তারা খুনি মোশতাককে অভিনন্দন জানিয়েছিল।

সর্বশেষ ২০২৩ সালেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে একই কথা বলেন শেখ সেলিম। তবে, বরাবরই জাসদের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে এই কথা অস্বীকার করা হতো।

ইনুকে বর্তমানে ডিবি কার্যালয়ে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় তিনটি হত্যা মামলা এবং রাজধানীর মিরপুরে শিক্ষার্থী আলভী হত্যায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়েছে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে মঙ্গলবার আদালতে তুলে রিমান্ডে চাইবে ডিবি।