ঢাকা ০৩:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন ২৮ অক্টোবর

বঙ্গবন্ধু টানেল

আগামী ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে দেশের প্রথম টানেল উদ্বোধন ও জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৮ অক্টোবর নগরীর পতেঙ্গা প্রান্তে বঙ্গবন্ধু টানেলের নামফলক উন্মোচনের পর অপর প্রান্তে কাফকো কলোনি সংলগ্ন কেইপিজেড মাঠে জনসভায় যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। জনসভা ঘিরে চলছে সাজসজ্জা। মাঠে জনসভার মঞ্চ তৈরি করা হবে নৌকার আদলে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে ১০ লাখ মানুষের জনসমাগম ঘটাতে তৎপরতা শুরু করেছে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ। জনসভার জন্য প্রস্তুত প্রায় ৯ লাখ ঘনফুট আয়তনের মাঠ।

এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে টানেলের পতেঙ্গা ও আনোয়ারা প্রান্তে চলছে সাজসজ্জার কাজ। সমতল করা হচ্ছে জনসভার স্থান। সংস্কারের পাশাপাশি রং করা হচ্ছে সড়কগুলো। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে নগরী ও আনোয়ারা প্রান্তে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে পথঘাট।

টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ বলেন, ‘যানবাহন চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত টানেল। আগামী ২৮ অক্টোবর এ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পরদিন ২৯ অক্টোবর থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য টানেল উন্মুক্ত করা হবে। ইতোমধ্যে একাধিকবার পরীক্ষামূলক গাড়ি চলাচল করা হয়েছে। এখন সাজসজ্জার কাজ হচ্ছে। নিরাপত্তা তথা খুঁটিনাটি বিষয়গুলো দেখা হচ্ছে। বর্তমানে প্রকল্পের অগ্রগতি ৯৯ শতাংশ। কিছু ভবন নির্মাণের কাজ বাকি আছে। সেগুলো ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে।’

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়া তথা দেশের প্রথম টানেল উদ্বোধন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে আসছেন। ওইদিন টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে কেইপিজেড মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী। চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বান্দরবান, কক্সবাজার, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি থেকেও নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দেবেন। বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের মধ্য দিয়ে ওয়ান সিটি টু টাউনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। শহরের খুব কাছে থাকা সত্ত্বেও শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে অবহেলিত ছিল আনোয়ারা প্রান্ত। টানেল নির্মাণের মধ্যে কর্ণফুলী-আনোয়ারা আরেকটি শহরে রূপ নিয়েছে।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম বলেন, ‘দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীর এ জনসভার আয়োজন করা হলেও উত্তর এবং মহানগরী থেকে সর্বোচ্চ জনসমাগমের প্রস্তুতি থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় উপস্থিতি বাড়াতে প্রস্তুতি চলছে।’

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরে টানেলটি নির্মাণ করা হয়েছে। মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। চার লেনবিশিষ্ট দু’টি টিউবের প্রতিটির দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। এছাড়া মূল টানেলের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং আনোয়ারা প্রান্তে ৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি ফ্লাইওভার থাকবে। এ প্রকল্পের শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮ হাজার ৪৪৬ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা। পরে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে ১০ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৪২ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। এর মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ সুদে ৫ হাজার ৯১৩ দশমিক ১৯ কোটি টাকা এবং বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

গত বছরের ২৬ নভেম্বর টানেলের দক্ষিণ প্রান্তের একটি টিউবের পূর্ত কাজের সমাপ্তি উদযাপন করা হয়েছে। এই উদযাপন অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়লি যুক্ত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১৫ সালের নভেম্বরে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইকুয়েডরকে ৭ গোল দিল আর্জেন্টিনা

বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন ২৮ অক্টোবর

আপডেট সময় ০১:০২:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৩

আগামী ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে দেশের প্রথম টানেল উদ্বোধন ও জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৮ অক্টোবর নগরীর পতেঙ্গা প্রান্তে বঙ্গবন্ধু টানেলের নামফলক উন্মোচনের পর অপর প্রান্তে কাফকো কলোনি সংলগ্ন কেইপিজেড মাঠে জনসভায় যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। জনসভা ঘিরে চলছে সাজসজ্জা। মাঠে জনসভার মঞ্চ তৈরি করা হবে নৌকার আদলে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে ১০ লাখ মানুষের জনসমাগম ঘটাতে তৎপরতা শুরু করেছে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ। জনসভার জন্য প্রস্তুত প্রায় ৯ লাখ ঘনফুট আয়তনের মাঠ।

এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে টানেলের পতেঙ্গা ও আনোয়ারা প্রান্তে চলছে সাজসজ্জার কাজ। সমতল করা হচ্ছে জনসভার স্থান। সংস্কারের পাশাপাশি রং করা হচ্ছে সড়কগুলো। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে নগরী ও আনোয়ারা প্রান্তে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে পথঘাট।

টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ বলেন, ‘যানবাহন চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত টানেল। আগামী ২৮ অক্টোবর এ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পরদিন ২৯ অক্টোবর থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য টানেল উন্মুক্ত করা হবে। ইতোমধ্যে একাধিকবার পরীক্ষামূলক গাড়ি চলাচল করা হয়েছে। এখন সাজসজ্জার কাজ হচ্ছে। নিরাপত্তা তথা খুঁটিনাটি বিষয়গুলো দেখা হচ্ছে। বর্তমানে প্রকল্পের অগ্রগতি ৯৯ শতাংশ। কিছু ভবন নির্মাণের কাজ বাকি আছে। সেগুলো ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে।’

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়া তথা দেশের প্রথম টানেল উদ্বোধন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে আসছেন। ওইদিন টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে কেইপিজেড মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী। চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বান্দরবান, কক্সবাজার, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি থেকেও নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দেবেন। বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের মধ্য দিয়ে ওয়ান সিটি টু টাউনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। শহরের খুব কাছে থাকা সত্ত্বেও শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে অবহেলিত ছিল আনোয়ারা প্রান্ত। টানেল নির্মাণের মধ্যে কর্ণফুলী-আনোয়ারা আরেকটি শহরে রূপ নিয়েছে।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম বলেন, ‘দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীর এ জনসভার আয়োজন করা হলেও উত্তর এবং মহানগরী থেকে সর্বোচ্চ জনসমাগমের প্রস্তুতি থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় উপস্থিতি বাড়াতে প্রস্তুতি চলছে।’

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরে টানেলটি নির্মাণ করা হয়েছে। মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। চার লেনবিশিষ্ট দু’টি টিউবের প্রতিটির দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। এছাড়া মূল টানেলের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং আনোয়ারা প্রান্তে ৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি ফ্লাইওভার থাকবে। এ প্রকল্পের শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮ হাজার ৪৪৬ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা। পরে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে ১০ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৪২ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। এর মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ সুদে ৫ হাজার ৯১৩ দশমিক ১৯ কোটি টাকা এবং বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

গত বছরের ২৬ নভেম্বর টানেলের দক্ষিণ প্রান্তের একটি টিউবের পূর্ত কাজের সমাপ্তি উদযাপন করা হয়েছে। এই উদযাপন অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়লি যুক্ত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১৫ সালের নভেম্বরে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।