ঢাকা ০৭:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুলিবিদ্ধ হয়ে বিনা চিকিৎসায় পড়ে আছেন পাবিপ্রবির মাসুম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ নেতার গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে এখনো বিনা চিকিৎসায় পড়ে আছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ। গত ৪ আগস্ট অসহযোগ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকালে পাবনা শহরের লতিফ টাওয়ারের সামনে ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হন এই শিক্ষার্থী। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(পাবিপ্রবি) ইতিহাস বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে অধ্যয়নরত৷ 

মাসুম জানান, এই আন্দোলনে শুরু থেকেই নিয়মিত অংশগ্রহণ করে আসছি । ঘটনার দিন গত ৪ আগস্ট দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিতে মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ঘর থেকে বের হই। বেঁচে ফিরবো সেই আশা ছিল না। পাবনা শহরে যখন গোলাগুলি শুরু হয়,তখন আমি সামনের দিকেই ছিলাম। আমার পাশেই কয়েকজনের মাথায় ও বুকে গুলি লাগে। একই সময়ে আমার পায়েও গুলি লাগে। গুলি লাগাতে পা বেয়ে রক্ত পড়তে থাকে এবং আমি সেখানেই লুটিয়ে পড়ি। পাশে থাকা কয়েকজন আমাকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে প্রাথমিকভাবে একটা ইনজেকশন দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেয়। তারপর আরো অনেকে ছিল যাদের মাথায় ও বুকে গুলি লেগেছে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু, আমাদের কাউকেই হাসপাতালে থাকতে দেওয়া হয় নি। উপর থেকে নাকি চাপ আসছিল যে, গুলিবিদ্ধ কাউকে হাসাপাতালে রাখা যাবে না। আহত সবাইকে হাসপাতাল থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেয় তারা। বাসায় ফেরার রাত ১০ টার দিকে আমার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। সারা শরীর অবশ হয়ে যেতে থাকে। তখন আবার আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় আমার চাচাতো ভাই। সেখানে নিয়ে স্যালাইন দিলে তারপর একটু ভালো বোধ করি। তবে আবারো হাসপাতাল থেকে জানানো হয় যে, এনএসআই থেকে নাকি নিষেধাজ্ঞা আছে গুলিবিদ্ধ কাউকে হাসাপাতালে রাখা যাবে না। তাই আমাকে আবারো ফেরত পাঠানো হয় হাসপাতাল থেকে। ফেরার সময় আমাকে ডাক্তার বলে দেয় যে, দু’সপ্তাহের মধ্যে অপারেশন করে গুলি বের করে ফেলতে হবে। আমার পায়ের ভেতরে এখনো গুলি রয়ে গেছে। অপারেশন করতে হবে। 

তিনি আরো বলেন, একদিকে আমি বিনা চিকিৎসায় পড়ে আছি, অন্যদিকে আমার এলাকা সুজানগর থানায় আমার নামে মামলা করেছে আওয়ামী লীগ নেতারা। এলাকায় গেলে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে। তাই বাড়িতেও যেতে পারি নি। গত ৫ তারিখে যখন সবাই বিজয় মিছিল করে, তখন আমার খুব ইচ্ছে করছিলো মিছিলে থাকার। কিন্তু কেউ ছিলো না আমাকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার।

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশ–ভারত ,বার্সেলোনা,আর্সেনালসহ টিভিতে যা দেখবেন আজ

গুলিবিদ্ধ হয়ে বিনা চিকিৎসায় পড়ে আছেন পাবিপ্রবির মাসুম

আপডেট সময় ০৪:২৫:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ নেতার গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে এখনো বিনা চিকিৎসায় পড়ে আছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ। গত ৪ আগস্ট অসহযোগ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকালে পাবনা শহরের লতিফ টাওয়ারের সামনে ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হন এই শিক্ষার্থী। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(পাবিপ্রবি) ইতিহাস বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে অধ্যয়নরত৷ 

মাসুম জানান, এই আন্দোলনে শুরু থেকেই নিয়মিত অংশগ্রহণ করে আসছি । ঘটনার দিন গত ৪ আগস্ট দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিতে মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ঘর থেকে বের হই। বেঁচে ফিরবো সেই আশা ছিল না। পাবনা শহরে যখন গোলাগুলি শুরু হয়,তখন আমি সামনের দিকেই ছিলাম। আমার পাশেই কয়েকজনের মাথায় ও বুকে গুলি লাগে। একই সময়ে আমার পায়েও গুলি লাগে। গুলি লাগাতে পা বেয়ে রক্ত পড়তে থাকে এবং আমি সেখানেই লুটিয়ে পড়ি। পাশে থাকা কয়েকজন আমাকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে প্রাথমিকভাবে একটা ইনজেকশন দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেয়। তারপর আরো অনেকে ছিল যাদের মাথায় ও বুকে গুলি লেগেছে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু, আমাদের কাউকেই হাসপাতালে থাকতে দেওয়া হয় নি। উপর থেকে নাকি চাপ আসছিল যে, গুলিবিদ্ধ কাউকে হাসাপাতালে রাখা যাবে না। আহত সবাইকে হাসপাতাল থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেয় তারা। বাসায় ফেরার রাত ১০ টার দিকে আমার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। সারা শরীর অবশ হয়ে যেতে থাকে। তখন আবার আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় আমার চাচাতো ভাই। সেখানে নিয়ে স্যালাইন দিলে তারপর একটু ভালো বোধ করি। তবে আবারো হাসপাতাল থেকে জানানো হয় যে, এনএসআই থেকে নাকি নিষেধাজ্ঞা আছে গুলিবিদ্ধ কাউকে হাসাপাতালে রাখা যাবে না। তাই আমাকে আবারো ফেরত পাঠানো হয় হাসপাতাল থেকে। ফেরার সময় আমাকে ডাক্তার বলে দেয় যে, দু’সপ্তাহের মধ্যে অপারেশন করে গুলি বের করে ফেলতে হবে। আমার পায়ের ভেতরে এখনো গুলি রয়ে গেছে। অপারেশন করতে হবে। 

তিনি আরো বলেন, একদিকে আমি বিনা চিকিৎসায় পড়ে আছি, অন্যদিকে আমার এলাকা সুজানগর থানায় আমার নামে মামলা করেছে আওয়ামী লীগ নেতারা। এলাকায় গেলে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে। তাই বাড়িতেও যেতে পারি নি। গত ৫ তারিখে যখন সবাই বিজয় মিছিল করে, তখন আমার খুব ইচ্ছে করছিলো মিছিলে থাকার। কিন্তু কেউ ছিলো না আমাকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার।