ঢাকা ০৭:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আপাতত নিশ্চুপ থাকতে চায় আওয়ামী লীগ

গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর একের পর এক মামলা হচ্ছে। সেসব মামলার আসামি হচ্ছেন পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রীসহ প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপিরা। অনেককে আবার নেওয়া হচ্ছে রিমান্ডে। আবার অনেক নেতাকর্মীর বাড়ি কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হচ্ছে। এ অবস্থায় আপাতত কোনো কর্মসূচিতে যাবে না ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগ। আরেকটু সময় নিয়ে কর্মসূচি দেবে ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা দলটি।

গত কয়েকদিনে আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় হতাহতের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। হামলা হচ্ছে বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত দলের নেতাকর্মীরা আতঙ্কে রয়েছেন। কখন যে কার নামে মামলা-হামলা হয়, সেটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় নেতাকর্মীরা। ৫ আগস্টের আগেও যারা মাঠে বেশ সক্রিয় ছিলেন, তারা এখন বেশি আতঙ্কে। একদিকে মামলার ভয়, অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াতের হামলা।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, আমরা একটু সময় নিচ্ছি। কীভাবে এগোনো যায়, তা নিয়ে ভাবছি। আমাদের পরবর্তী কর্মপদ্ধতি বা পদক্ষেপ কী হতে পারে, সেগুলো নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। আমরা চাচ্ছি— আমাদের নেতাকর্মীরা আর যেন কোনোরকম ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন না হয়। কারণ, এখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি এবং প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে। নতুন করে আমাদের কোনো নেতাকর্মী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য আমরা কিছুটা সময় নিচ্ছি।

দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা হয়েছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কথা হয়েছে। সব নেতাকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য, সাহস দেওয়ার জন্য, মনোবল ধরে রাখার জন্য আমাদের বলা হয়েছে। যেন নতুন করে আর ক্ষয়ক্ষতি না হয়। এখন সেটার ওপরে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।”

কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা এখন কোনো কর্মসূচিতে যেতে চাই না। আপাতত কয়েক মাস আমাদের নিশ্চুপ থাকতে হবে। একটা বিপ্লব হয়েছে, এত তাড়াতাড়ি প্রতিবিপ্লব করা সহজ না। আগে আমাদের সংগঠিত হতে হবে। দলের নেতাকর্মীরা আমার মতো আত্মগোপনে আছেন। আমাদের নেতা বাহার ভাইও গোপনে রয়েছেন। এখন সক্রিয় হলে মামলা-হামলার শিকার ছাড়া আর কিছু হবে না।

মামলা ও হামলা থেকে রক্ষা পেতেই এখন নেতাকর্মীদের মাঠে না থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

গত ১৫ আগস্ট শোক দিবস উপলক্ষ্যে দলের নেতাকর্মীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে আহ্বান করা হয়। আগের দিন সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক কর্মীরা মোমবাতি প্রজ্বলন শেষ করার পর তাদের ওপর চড়াও হয় সাধারণ জনগণ। পরদিন ৩২ নম্বরের আশপাশে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ চালু করলো পাকিস্তান

আপাতত নিশ্চুপ থাকতে চায় আওয়ামী লীগ

আপডেট সময় ০৭:২৭:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৪

গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর একের পর এক মামলা হচ্ছে। সেসব মামলার আসামি হচ্ছেন পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রীসহ প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপিরা। অনেককে আবার নেওয়া হচ্ছে রিমান্ডে। আবার অনেক নেতাকর্মীর বাড়ি কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হচ্ছে। এ অবস্থায় আপাতত কোনো কর্মসূচিতে যাবে না ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগ। আরেকটু সময় নিয়ে কর্মসূচি দেবে ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা দলটি।

গত কয়েকদিনে আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় হতাহতের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। হামলা হচ্ছে বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত দলের নেতাকর্মীরা আতঙ্কে রয়েছেন। কখন যে কার নামে মামলা-হামলা হয়, সেটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় নেতাকর্মীরা। ৫ আগস্টের আগেও যারা মাঠে বেশ সক্রিয় ছিলেন, তারা এখন বেশি আতঙ্কে। একদিকে মামলার ভয়, অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াতের হামলা।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, আমরা একটু সময় নিচ্ছি। কীভাবে এগোনো যায়, তা নিয়ে ভাবছি। আমাদের পরবর্তী কর্মপদ্ধতি বা পদক্ষেপ কী হতে পারে, সেগুলো নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। আমরা চাচ্ছি— আমাদের নেতাকর্মীরা আর যেন কোনোরকম ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন না হয়। কারণ, এখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি এবং প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে। নতুন করে আমাদের কোনো নেতাকর্মী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য আমরা কিছুটা সময় নিচ্ছি।

দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা হয়েছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কথা হয়েছে। সব নেতাকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য, সাহস দেওয়ার জন্য, মনোবল ধরে রাখার জন্য আমাদের বলা হয়েছে। যেন নতুন করে আর ক্ষয়ক্ষতি না হয়। এখন সেটার ওপরে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।”

কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা এখন কোনো কর্মসূচিতে যেতে চাই না। আপাতত কয়েক মাস আমাদের নিশ্চুপ থাকতে হবে। একটা বিপ্লব হয়েছে, এত তাড়াতাড়ি প্রতিবিপ্লব করা সহজ না। আগে আমাদের সংগঠিত হতে হবে। দলের নেতাকর্মীরা আমার মতো আত্মগোপনে আছেন। আমাদের নেতা বাহার ভাইও গোপনে রয়েছেন। এখন সক্রিয় হলে মামলা-হামলার শিকার ছাড়া আর কিছু হবে না।

মামলা ও হামলা থেকে রক্ষা পেতেই এখন নেতাকর্মীদের মাঠে না থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

গত ১৫ আগস্ট শোক দিবস উপলক্ষ্যে দলের নেতাকর্মীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে আহ্বান করা হয়। আগের দিন সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক কর্মীরা মোমবাতি প্রজ্বলন শেষ করার পর তাদের ওপর চড়াও হয় সাধারণ জনগণ। পরদিন ৩২ নম্বরের আশপাশে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।