ঢাকা ১০:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় আরও একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৪৭৭ Logo দ্যা স্কলারস ফোরাম ঢাকার বৃত্তি পরিক্ষা’২৪ অনুষ্ঠিত Logo  নোয়াখালী স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৪ অনুষ্ঠিত Logo প্রশিক্ষণরত ৫৯ এসআইকে একাডেমিতে শোকজ Logo সিরাজগঞ্জে ২৮ অক্টোবর শহীদদের স্মরণে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo ছাত্রশিবির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ শাখার নবীন বরণ অনুষ্ঠিত Logo টঙ্গীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ইউনিট প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo বেসরকারি খাতের উন্নয়ন সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বব্যাংক : গভর্নর Logo গণতন্ত্রের জন্য অনৈক্যই মূল চ্যালেঞ্জ : আইন উপদেষ্টা Logo বাংলাদেশের জার্সি গায়ে কি আর খেলতে পারবেন সাকিব

বিডিআর বিদ্রোহ নয়, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ছিল: শহীদদের পরিবার

পিলখানায় সংগঠিত বিডিয়ার বিদ্রোহে হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদদের পরিবারবর্গ জানিয়েছেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে যে-সকল দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তা শহীদ হয়েছেন, সে ঘটনাকে বলা হয় ‘বিডিআর বিদ্রোহ’। অথচ এটি কোন বিদ্রোহ ছিল না। বরং এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ ছিল।

শনিবার (১৭ আগস্ট) রাজধানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হত্যাকাণ্ডের শিকার ৫৭ অফিসার ও ১৭ সিভিলিয়ানের পরিবারের সদস্যরা। এসময় তারা নাম এবং পরিচয় উল্লেখ না করে গত ১৫ বছরে নিজেদের অভিজ্ঞতা এবং বঞ্চনার কথা তুলে ধরেন। শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে শহীদ কর্নেল কুদরত ইলাহীর ছেলে সাকুইব রহমানের সঞ্চালনায় বিভিন্ন পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য প্রদান করেন।

নাম উল্লেখ না করে বিডিআর হত্যাকাণ্ডে নিহত একজন সেনা অফিসারের মেয়ে বলেন, আমি একজন শহীদ দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তার সন্তান। আমার বাবার নাম কিংবা আমার নাম এখানে মুখ্য নয়। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটা বিডিআর বিদ্রোহ নয়, এটা সরাসরি হত্যাকাণ্ড ছিল। আপানারা বারংবার বিডিআর বিদ্রোহ শব্দটির উল্লেখ করার কারণে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি হারিয়ে যাচ্ছে। আমি কখনও বলি না আমার বাবা মারা গেছেন, বরং আমি সবসময় বলি আমার বাবা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, প্রতিবছর আপনাদের সাথে আমাদের কবরস্থানে দেখা হয়। তখন আপনারা আমাদের কাছে জানতে চান যে, বাবার হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে কিনা! তখন আপনাদের কথার উত্তর দিতে আমার খুব কষ্ট হয়। বাবার মৃত্যুর সময় আমার বয়স ছিল ১৪ বছর। কিন্তু ১৫ বছর পরে এখনও সেই ঘটনাগুলো নিয়ে কথা বলতে পারি না।

গণমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হেনস্তা হতে হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সংবাদমাধ্যমগুলো সঠিক সংবাদ প্রচারের বিপরীতে নানারকম অপপ্রচার এবং মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছে। আমি বলতে চাই, একজন সন্তানের কাছে তার বাবা কিংবা মায়ের কাছে তার সন্তানের লাশের ক্ষতিপূরণ কোন টাকার অঙ্কে মেলানো যায় না। কাজেই গণমাধ্যম যখন আমাদের কাছে জানতে চায় আমরা কত টাকা পেয়েছি কিংবা কি কি ক্ষতিপূরণ পেয়েছি সেটা আমাদের জন্য কষ্টের কারণ হয়।

এতদিন আমরা মুখ খুলতে পারিনি এবং অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আপনারাও হয়ত সঠিক সংবাদ প্রচার করতে পারেন নি। আমি মনে করি আপনাদের মতো আমাদেরও কোন বাকস্বাধীনতা ছিল না। কাজেই এখন আপনারা সঠিক সংবাদগুলো প্রচার করবেন সেই আহ্বানটুকু আপনাদের প্রতি আমরা রাখতে চাই।

সংবাদ সম্মেলনে শহীদ কর্নেল কুদরত ইলাহীর ছেলে সাকুইব রহমান শহীদদের পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে ৭ টি দাবি তুলে ধরেন। এরমধ্যে রয়েছে: ১. পূর্বে যে-সকল তদন্ত হয়েছে সেগুলোর ফলাফল পাবলিক করতে হবে। ২. হাইকোর্ট ডিভিশনের রায় মোতাবেক যে তিনজন জজের সমন্বয়ে কমিশন গঠনের কথা বলেছেন অবিলম্বে তা গঠন করতে হবে। যেন পর্দার আড়ালে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের নাম বেরিয়ে আসে। ৩ অফিসিয়াল গেজেট করে ২৫ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ সেনা দিবস হিসেবে ঘোষণা করতে হবে এবং গেজেটে শাহাদাৎবরণকারী সকলকে শহীদের মর্যাদা দিতে হবে। ৪. ২৫ ফেব্রুয়ারি দেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করতে হবে। ৫. পিলখানা ট্রাজেডিকে পাঠ্যবইয়ের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, যেন আগামী প্রজন্ম এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস জানতে পারে। ৬. এ ঘটনায় যে-সকল সেনা কর্মকর্তা চাকরি হারিয়েছেন তাদের চাকুরি ফিরিয়ে দিতে হবে অথবা যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। ৭. কোন বিডিআর জওয়ানকে কোনোভাবে যেন সাজা দেওয়া না হয়।

ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় আরও একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৪৭৭

বিডিআর বিদ্রোহ নয়, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ছিল: শহীদদের পরিবার

আপডেট সময় ০৩:৩৭:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪

পিলখানায় সংগঠিত বিডিয়ার বিদ্রোহে হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদদের পরিবারবর্গ জানিয়েছেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে যে-সকল দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তা শহীদ হয়েছেন, সে ঘটনাকে বলা হয় ‘বিডিআর বিদ্রোহ’। অথচ এটি কোন বিদ্রোহ ছিল না। বরং এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ ছিল।

শনিবার (১৭ আগস্ট) রাজধানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হত্যাকাণ্ডের শিকার ৫৭ অফিসার ও ১৭ সিভিলিয়ানের পরিবারের সদস্যরা। এসময় তারা নাম এবং পরিচয় উল্লেখ না করে গত ১৫ বছরে নিজেদের অভিজ্ঞতা এবং বঞ্চনার কথা তুলে ধরেন। শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে শহীদ কর্নেল কুদরত ইলাহীর ছেলে সাকুইব রহমানের সঞ্চালনায় বিভিন্ন পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য প্রদান করেন।

নাম উল্লেখ না করে বিডিআর হত্যাকাণ্ডে নিহত একজন সেনা অফিসারের মেয়ে বলেন, আমি একজন শহীদ দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তার সন্তান। আমার বাবার নাম কিংবা আমার নাম এখানে মুখ্য নয়। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটা বিডিআর বিদ্রোহ নয়, এটা সরাসরি হত্যাকাণ্ড ছিল। আপানারা বারংবার বিডিআর বিদ্রোহ শব্দটির উল্লেখ করার কারণে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি হারিয়ে যাচ্ছে। আমি কখনও বলি না আমার বাবা মারা গেছেন, বরং আমি সবসময় বলি আমার বাবা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, প্রতিবছর আপনাদের সাথে আমাদের কবরস্থানে দেখা হয়। তখন আপনারা আমাদের কাছে জানতে চান যে, বাবার হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে কিনা! তখন আপনাদের কথার উত্তর দিতে আমার খুব কষ্ট হয়। বাবার মৃত্যুর সময় আমার বয়স ছিল ১৪ বছর। কিন্তু ১৫ বছর পরে এখনও সেই ঘটনাগুলো নিয়ে কথা বলতে পারি না।

গণমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হেনস্তা হতে হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সংবাদমাধ্যমগুলো সঠিক সংবাদ প্রচারের বিপরীতে নানারকম অপপ্রচার এবং মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছে। আমি বলতে চাই, একজন সন্তানের কাছে তার বাবা কিংবা মায়ের কাছে তার সন্তানের লাশের ক্ষতিপূরণ কোন টাকার অঙ্কে মেলানো যায় না। কাজেই গণমাধ্যম যখন আমাদের কাছে জানতে চায় আমরা কত টাকা পেয়েছি কিংবা কি কি ক্ষতিপূরণ পেয়েছি সেটা আমাদের জন্য কষ্টের কারণ হয়।

এতদিন আমরা মুখ খুলতে পারিনি এবং অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আপনারাও হয়ত সঠিক সংবাদ প্রচার করতে পারেন নি। আমি মনে করি আপনাদের মতো আমাদেরও কোন বাকস্বাধীনতা ছিল না। কাজেই এখন আপনারা সঠিক সংবাদগুলো প্রচার করবেন সেই আহ্বানটুকু আপনাদের প্রতি আমরা রাখতে চাই।

সংবাদ সম্মেলনে শহীদ কর্নেল কুদরত ইলাহীর ছেলে সাকুইব রহমান শহীদদের পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে ৭ টি দাবি তুলে ধরেন। এরমধ্যে রয়েছে: ১. পূর্বে যে-সকল তদন্ত হয়েছে সেগুলোর ফলাফল পাবলিক করতে হবে। ২. হাইকোর্ট ডিভিশনের রায় মোতাবেক যে তিনজন জজের সমন্বয়ে কমিশন গঠনের কথা বলেছেন অবিলম্বে তা গঠন করতে হবে। যেন পর্দার আড়ালে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের নাম বেরিয়ে আসে। ৩ অফিসিয়াল গেজেট করে ২৫ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ সেনা দিবস হিসেবে ঘোষণা করতে হবে এবং গেজেটে শাহাদাৎবরণকারী সকলকে শহীদের মর্যাদা দিতে হবে। ৪. ২৫ ফেব্রুয়ারি দেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করতে হবে। ৫. পিলখানা ট্রাজেডিকে পাঠ্যবইয়ের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, যেন আগামী প্রজন্ম এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস জানতে পারে। ৬. এ ঘটনায় যে-সকল সেনা কর্মকর্তা চাকরি হারিয়েছেন তাদের চাকুরি ফিরিয়ে দিতে হবে অথবা যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। ৭. কোন বিডিআর জওয়ানকে কোনোভাবে যেন সাজা দেওয়া না হয়।