ঢাকা ০৮:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
দুই মন্ত্রী’র কারণে আন্দোলন সমাধান করা সম্ভব হয়নি

বিদ্যুৎ খাতে ইচ্ছামতো লুট

আজকের প্রত্রিকা গুলোর প্রধান প্রধান সংবাদ

কালবেলা:

বিদ্যুৎ খাতে ইচ্ছামতো লুট
ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আমলে চরম দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটে বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ খাত। সাড়ে ১৫ বছরে কোনো দরপত্র ছাড়াই বেসরকারি খাতে শতাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। এর বেশিরভাগই কোনো কাজে আসেনি। সরকারি হিসাবে উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার মেগাওয়াট বলা হলেও লোডশেডিং থেকে মুক্তি মেলেনি। এমনকি দেশে বিদ্যুতের প্রকৃত চাহিদা কত, তারও সঠিক কোনো হিসাব নেই বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে। সবার জন্য সরবরাহ নিশ্চিত না করে শুধু সংযোগ দিয়েই শতভাগ বিদ্যুতায়নের কৃতিত্ব জাহির করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদ্যুৎ বিভাগ

এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ আমলের দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে কাজ শুরু করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

প্রাপ্ত হিসাবে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদে বিদ্যুৎ খাতে মোট ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৮৩০ কোটি ডলার। বর্তমান বিনিময় হার বিবেচনায় (১ ডলার সমান ১১৮ টাকা) বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। একই সময় শুধু ক্যাপাসিটি চার্জের নামেই লুটপাট হয়েছে ১ লাখ কোটি টাকা। অর্থাৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে শুধু সক্ষমতা দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ এই টাকা নিয়ে গেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। এসব কেন্দ্রের বেশিরভাগের মালিক আওয়ামী লীগ নেতা কিংবা তাদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা।অন্যদিকে বিদ্যুৎ খাতের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ক্রয় এবং ভূমি অধিগ্রহণ ও রক্ষণাবেক্ষণেও চরম অনিয়ম এবং লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। গত বছর বিদ্যুৎ খাতের লুটপাটের তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) দুই কর্মকর্তাকেও বরখাস্ত করা হয়েছে।

সাড়ে ১৫ বছর ধরে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে শেষ দুই মেয়াদে তার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আবাসন ব্যবসায়ী নসরুল হামিদ বিপু। সংশ্লিষ্টরা জানান, যোগ্যতা বিবেচনা না করেই তিনি নিজের পছন্দের লোকজনকে বিদ্যুৎ খাতের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে বসিয়েছেন। এর সর্বশেষ উদাহরণ পিডিবির বর্তমান চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান। বুয়েট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পাস করা এই কর্মকর্তা নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই গণমাধ্যম এড়িয়ে চলতেন

দেশরুপান্তর:

দুই মন্ত্রী’র কারণে আন্দোলন সমাধান করা সম্ভব হয়নি
রাজধানীর নিউ মার্কেট থানায় হওয়া হকার শাহজাহান আলী হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। রিমান্ডের প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদে তারা দেশে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি তৈরির জন্য সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ওপর দায় চাপিয়েছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে আনিসুল হক পুলিশকে বলেছেন, ‘দেশে ছাত্র আন্দোলন শুরু হওয়ার পর আমি একটি সমাধানের দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। আন্দোলন দমনে তারা খুবই অ্যাগ্রেসিভ ছিলেন। তাছাড়া তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও বাস্তবতা বোঝানো যাচ্ছিল না। এ কারণে আন্দোলন একপর্যায়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।’

হকার শাহজাহান আলী হত্যার ঘটনায় নিউ মার্কেট থানায় করা মামলায় গত মঙ্গলবার সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গত বুধবার তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তারা এখন ডিবি হেফাজতে আছেন।

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, যে মামলায় সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেই মামলার ভিকটিম গুলিতে মারা গেছেন। অথচ এজাহারে কোটাবিরোধী জামায়াত-শিবির এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের এলোপাতাড়ি আঘাতে ভিকটিম শাহজাহান মারা গেছেন বলা হয়েছে। মামলায় কেন মিথ্যাচার করা হয়েছে, সেই বিষয় নিয়েও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ডিএমপি কমিশনার মাইনুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক প্রথম দিনের রিমান্ডে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। কখনো তাদের আলাদা জিজ্ঞাসাবাদ করে, আবার কখনো মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের কাছে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হবে। আরও যে কদিন রিমান্ড বাকি আছে, ওই সময়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।

প্রথম আলে:

বিক্ষোভে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

● মানবাধিকার লঙ্ঘনে দায়ীদের জবাবদিহির তাগিদ।

● আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করাসহ নানা সুপারিশ।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক

হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর) ১০ পৃষ্ঠার

এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

● ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট ৬৫০ জন নিহত।

● অবকাঠামো ক্ষতির কারণে নয়, সরকারই ইন্টারনেট বন্ধ করে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিক্ষোভ ও বিক্ষোভের পর সংঘাত দমনের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘অপ্রয়োজনীয়’ ও ‘মাত্রাতিরিক্ত’ বলপ্রয়োগের গুরুতর ও বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ এবং সহিংসতার ঘটনার ক্ষেত্রে নির্বিচার বল প্রয়োগ করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডের পাশাপাশি পাখি শিকারে ব্যবহৃত অস্ত্র, বুলেটসহ নানা রকম প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছেন।

‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও অস্থিরতা বিষয়ে প্রাথমিক বিশ্লেষণ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। গণমাধ্যম এবং আন্দোলনে যুক্তদের দেওয়া তথ্য উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত বিক্ষোভ এবং পরবর্তী সহিংসতায় অন্তত ৬৫০ জন বাংলাদেশি প্রাণ দিয়েছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর) ১০ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন গতকাল শুক্রবার জেনেভা থেকে প্রকাশ করেছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলের পতন হয়। এ পরিস্থিতি নিয়ে এই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করল।

প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক গতকাল জেনেভা থেকে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘বাংলাদেশের এই সন্ধিক্ষণে মানবাধিকার ও আইনের শাসনের ওপর ভিত্তি করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সংঘাতের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে জোর দিচ্ছি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি পুনর্বহালকে কেন্দ্র করে জুনের মাঝামাঝি বাংলাদেশে প্রাথমিক পর্যায়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও বেকারত্বের উচ্চ হার এ আন্দোলনে প্রভাব ফেলে। এই আন্দোলনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহিংসতা আর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে অন্তত ৩২ শিশুসহ কয়েক শ মানুষ নিহত এবং কয়েক

বনিকবার্ত:

জেল খেটে খালেদা জিয়াই জিতলেন, পালিয়ে দলকে বিপদে ফেললেন শেখ হাসিনা

ছাত্র-জনতার ব্যাপক অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে দেশত্যাগ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। স্বৈরশাসকের তকমা নিয়ে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী আশ্রয় নেন প্রতিবেশী দেশ ভারতে। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পরদিনই রাষ্ট্রপতির আদেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শাস্তি মওকুফ ও মুক্তির ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তাকে এ দণ্ড দিয়েছিলেন আদালত।

 

দলের প্রধানের মুক্তিতে ১৮ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দল বিএনপির কর্মীদের মধ্যে এখন বেশ চাঙ্গা ভাব। খালেদা জিয়ার মুক্তির পরদিন ৭ আগস্টেই এক মহাসমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। জেলমুক্ত খালেদা জিয়াকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে এখন বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে দলটি। দীর্ঘদিন আটক থাকা নেতাকর্মীরা ছাড়া পেয়ে রাজনীতির ময়দানে সক্রিয় হয়েছেন।

বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, দলের প্রধানকে ঘিরে নতুন করে সংগঠিত হচ্ছেন তারা। দলের শীর্ষ পর্যায় পুনর্গঠন থেকে শুরু করে যেকোনো কর্মসূচি বা কার্যক্রমে তার কাছ থেকে সরাসরি নির্দেশনাও নিচ্ছেন।

অন্যদিকে আকস্মিক ক্ষমতাচ্যুতি ও শেখ হাসিনার দেশত্যাগে আওয়ামী লীগ এখন এক প্রকার বিপর্যস্ত। শেখ হাসিনা দেশে নেই। দলের কেন্দ্রীয় ও সিনিয়র নেতারাও আত্মগোপনে। পুরোপুরি নেতৃত্বশূন্য অবস্থায় রাজনীতির ময়দানে সংগঠিত হতে পারছেন না দলটির নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীতেও দলটির নেতাকর্মীদের তেমন কোনো কর্মসূচির আয়োজন করতে দেখা যায়নি। দলটির কেন্দ্রীয় কোনো নেতাকেও সেখানে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে কিছু মানুষ জড়ো হলেও সেখানে আগে থেকে উপস্থিত অনেকের বাধার মুখে তারাও শোক জানাতে পারেননি। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগ এখন একপ্রকার অস্তিত্বের সংকটে পড়ে গেছে।

তাদের কারো কারো ভাষ্যমতে, শেখ হাসিনার দেশত্যাগের সিদ্ধান্তটি ছিল একপ্রকার রাজনৈতিক আত্মহত্যার শামিল। দেশে থেকে গিয়ে তিনি যদি কারাবরণও করতেন, তাকে মুক্তির দাবি তুলে আওয়ামী লীগের মাঠে নামার সুযোগ ছিল। দলের নেতাকর্মীদের কাছেও বার্তা যেত যে কঠিন পরিস্থিতিতেও তাদের ত্যাগ করেননি তিনি। কিন্তু তার দেশত্যাগের সিদ্ধান্তে তারা এখন পুরোপুরি নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীদেরও বড় অংশের আস্থা হারিয়েছেন তিনি। যদিও শেখ হাসিনা নিজেই এক সময় বারবার বলেছেন ‘‌আমরা যারা রাজনীতি করি, তাদের জন্য ক্ষমতার চেয়ার ও কারাগার পাশাপাশি থাকে’।

দ্য ডেইলি স্টার:

‘ওরা আমার ছেলেকে ছয়বার গুলি করেছে’
‘আমার ছেলে কোনো অন্যায় করেনি; কেন তাকে গুলি করে হত্যা করা হলো? আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

কথাগুলো বলছিলেন পটুয়াখালী সদর উপজেলার চৌলাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা রেহানা। গত ৫ আগস্ট ঢাকার বাড্ডা এলাকায় তার ছেলে রায়হান (১৭) গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান।

জুলাই মাসের শুরুতে রায়হান বাড্ডায় তার চাচাতো ভাইয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন এবং সিদ্ধান্ত নেন, শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি ফিরবেন না।

পটুয়াখালীর একটি মাদ্রাসা থেকে আগামী বছর রায়হানের দাখিল পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।

তার বাবা কামাল আকন দিনমজুরের কাজ করেন এবং মা রেহেনা গৃহিণী। ছোট বোন জান্নাতির বয়স মাত্র পাঁচ বছর।

গত ৫ আগস্ট সকালে বাড্ডা এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যখন গুলি চলায়, সে সময় রায়হানের বুকে ও পায়ে মোট ছয়টি গুলি লাগে। তাকে দ্রুততম সময়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রায়হানকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই রাতেই ময়নাতদন্ত ছাড়া রায়হানের মরদেহ পটুয়াখালীতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরদিন পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

চৌলাবুনিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রায়হানের পরিবারে এখন কেবলই হতাশা। রেহানা ছেলের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন।
ইত্তেফাক:রায় জালিয়াতি করে নির্বাচন ব্যবস্থা সংকটে ফেলার কারিগর যিনিhttps://www.ittefaq.com.bd/696752/
নির্বাচনব্যবস্থা তছনছের কারণে দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের শুরুটা হয়েছিল আপিল বিভাগ কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি সম্পর্কিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে। আর এই সংকট সৃষ্টির অন্যতম প্রধান কারিগর ছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের কারণেই পরপর তিনটি ভোটারবিহীন ও বিতর্কিত নির্বাচন কর্তৃত্ববাদী করে তুলেছিল আওয়ামী লীগ সরকারকে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সংকট গভীর থেকে গভীরতম হওয়ার পরিণতি ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে টানা সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা সরকারের পতন।

রায় নিয়েও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছিলেন বিচারপতি খায়রুল হক। আপিল বিভাগের ২০১১ সালের ১০ মে প্রদত্ত (৪-৩) বিভক্ত সংক্ষিপ্ত আদেশে বলা হয়েছিল, ‘সংসদ চাইলে আরো দুটি নির্বাচন এ ব্যবস্থায় (তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে) হতে পারে। তবে এতে বিচার বিভাগকে জড়িত করা যাবে না। বিদায়ী প্রধান বিচারপতি এবং আপিল বিভাগের বিচারপতিদের বাদ রেখে সংসদ এ সরকার পদ্ধতি সংস্কার করতে পারে।’

সংক্ষিপ্ত রায়কে ‘শিরোধার্য’ হিসেবে প্রচার চালিয়ে এবং পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের বহু আগেই ২০১১ সালের ৩০ জুন নবম সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাশের মাধ্যমে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বিলুপ্ত করে দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা সংবিধান থেকে বাদ দেওয়ার প্রায় ১৬ মাস পর, অর্থাৎ ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পায়। যখন এই পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পায় তখন খায়রুল হক আর প্রধান বিচারপতি ছিলেন না। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ রায়ে দেখা যায়—সংক্ষিপ্ত রায়ে থাকা আরো দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে পারার কথাটি নেই। এমনকি, সরকারের মেয়াদ শেষ হলেও সংসদ বহাল থাকার কথাও যুক্ত হয় পূর্ণাঙ্গ রায়ে। সংক্ষিপ্ত রায়ের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ রায়ের এই ভয়াবহ অসংগতি নিয়ে তখনই জোরালো বিতর্ক উঠেছিল।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় প্রদানকারী বাকি ছয় বিচারপতির মধ্যে তিন জন খায়রুল হকের সঙ্গে একমত পোষণ করেন। ৩৪২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সঙ্গে একমত হয়েছেন মো. মোজাম্মেল হোসেন, বিচারপতি এস কে সিনহা ও বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা। তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা। তবে বিচারপতি মো. ইমান আলী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে বা বিপক্ষে মত না দিয়ে বিষয়টি জাতীয় সংসদের ওপর ছেড়ে দেন।

নয়াদিগন্ত:

উপদেষ্টাদের দায়িত্ব পুনর্বণ্টন
– নতুন ৪ উপদেষ্টার শপথ
– স্বরাষ্ট্র পেলেন জাহাঙ্গীর
– সাখাওয়াত বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) সাখাওয়াত হোসেনকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বর্তমান উপদেষ্টাদের দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নতুন শপথ নেয়া লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। একই সাথে কৃষি মন্ত্রণালয়ও সামলাবেন তিনি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ নেয়া নতুন চার উপদেষ্টার মধ্যে দফতর বণ্টন করেছে সরকার। আর বর্তমান ৮ উপদেষ্টার দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
এতে বলা হয়েছে, নতুন উপদেষ্টাদের মধ্যে ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদকে পরিকল্পনা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে দেয়া হয়েছে তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। সেগুলো হলো- বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেল মন্ত্রণালয়। নতুন করে সরকারে যুক্ত হওয়া আলী ইমাম মজুমদারকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।

আর বর্তমান উপদেষ্টাদের মধ্যে দায়িত্ব পুনর্বণ্টন হয়েছে আট উপদেষ্টার। সালেহ উদ্দিন আহমেদ অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখবেন। আসিফ নজরুল আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। আদিলুর রহমান খান শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় দেখবেন। রিজওয়ানা হাসান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসেবে থাকবেন। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা নাহিদ ইসলাম তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ও দেখবেন। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পাশাপাশি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় পেয়েছেন। ফারুকী আজম মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন।

যুগান্তর:

ছাত্র আন্দোলনে ৩২ শিশুসহ নিহত ৬৫০
অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করেছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা * দায়ীদের জবাবদিহি করতে হবে, ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে
বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনে ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত ৩২ শিশুসহ ৬৫০ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার জেনেভা থেকে প্রকাশিত জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের (ইউএনএইচসিআর) প্রাথমিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

১০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত গণমাধ্যম ও অন্যান্য সূত্রের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে ৬০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ৪০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া সরকার পতনের পর ৫ থেকে ৭ আগস্টের মধ্যে বিক্ষোভের নতুন ধাক্কায় ২৫০ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নিহতদের মধ্যে আছেন বিক্ষোভকারী, পথচারী, সাংবাদিক এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্যও। এতে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে গুরুতর এবং বিশ্বাসযোগ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত সরকার শক্তি প্রয়োগ করে আন্দোলনকারীদের দমন করার চেষ্টা করেছে। জাতিসংঘ বলছে, আওয়ামী লীগ সরকার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নির্বিচারে বলপ্রয়োগে রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড এবং প্রাণঘাতী গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে।

এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সার্বিক শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বেশকিছু পরামর্শও দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। এজন্য কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক পক্ষগুলো, অন্তর্বর্তী সরকার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বেশ কিছু সুপারিশও করা হয়েছে।

প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষ্যে এক বার্তায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ দমনে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করেছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, এমন ইঙ্গিত পেয়েছে জাতিসংঘ। তিনি উল্লেখ করেন, আরও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা সাপেক্ষে বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

মানবজমিন:

সাবেক সচিবের বাসা থেকে ৩ কোটি টাকা উদ্ধার
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামালের মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে শাহ কামালের রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাবর রোডের এফ-ব্লকের ২৯/২ ও ৩ নম্বর বাড়ি থেকে এসব অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৩ কোটি ১ লাখ ১০ হাজার ১৬৬ বাংলাদেশি টাকা ও ৭৪ হাজার ৪শ’ টাকা সমমূল্যের প্রাইজবন্ড। এছাড়াও ১০ লাখ ৩ হাজার ৩০৬ টি বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে। এসব বিদেশি মুদ্রার মধ্যে, ৩ হাজার ডলার, ১৩শ’ ২০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, ২ হাজার ৯৬৯ সৌদি রিয়াল, ৪ হাজার ১২২ সিংগাপুর ডলার, ১৯শ’ ১৫ অস্ট্রেলিয়ান ডলার, ৩৫ হাজার কোরিয়ান ইয়ান ও ১৯৯ চীনা মুদ্রা রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে শাহ কামাল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব থাকাকালে বিভিন্ন বদলি, কেনাকাটা ও উন্নয়ন কাজসহ বিভিন্ন উৎস থেকে অবৈধ এসব অর্থগ্রহণ করেছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ওবায়দুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাবর রোডের ওই বাসায় অভিযান চালানো হয়। তবে টাকা উদ্ধার করা হলেও এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তিনি বলেন, অবৈধভাবে উপার্জিত এসব অর্থ সাবেক সচিব শাহ কামাল বাসায় রেখেছিলেন। সরকার পরিবর্তনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে গেছেন, তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডারড:

আয়নাঘর, ২০১৩ সালে হেফাজতের ওপর হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন জিয়াউল: দাবি পুলিশের

রিমান্ড আবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের সহিংস দমন-পীড়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল জিয়াউলের, যা তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।

 

সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের ওপর আক্রমণ ও নিধন, আড়িপাতার যন্ত্র পেগাসাস সফটওয়্যার ক্রয় ও আয়নাঘরের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে করা আবেদনে এমনটাই দাবি করেছে পুলিশ। এতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এসব ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

তবে আদালতে শুনানির সময় এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জিয়াউল আহসান। আজ শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে রিমান্ড আবেদনের বিষয়ে শুনানির জন্য তাকে আদালতে আনা হয়।

রিমান্ড আবেদনে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, জিয়াউল ইসরায়েলি সফটওয়্যার পেগাসাস কেনার কথা স্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে আদালতে জিজ্ঞাসা করা হলে জিয়াউল বলেন, ‘পেগাসাস বলে কিছু নেই। আমি কারো ফোন ট্র্যাক করিনি।’

পুলিশ আরও দাবি করে, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক এই মহাপরিচালক ‘আয়নাঘর’র সঙ্গেও জড়িত।

তবে জিয়াউল আহসান আদালতে বলেন, ‘আমি কোনো হত্যাকাণ্ড বা গুমের সঙ্গে জড়িত নই। যারা আয়নাঘর থেকে মুক্তি পেয়েছে তাদের কাউকে জিজ্ঞাসা করেন যে আমি তাদের সেখানে আটকে রেখেছি কি না।’

পুলিশের দাবির পাল্টা জবাবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ৭ আগস্ট তাকে তার বাড়ি থেকে ডিজিএফআই তুলে নিয়ে গিয়েছিল এবং আট দিন আয়নাঘরে বন্দি করে রেখেছিল।

রিমান্ড আবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের সহিংস দমন-পীড়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল জিয়াউলের, যা তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।

রাজধানীর নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় চাকরি থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত জিয়াউল আহসানকে গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ (১৬ আগস্ট) সকালে তাকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গত ৬ আগস্ট মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

তিনি ২০২২ সাল থেকে এনটিএমসির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর আগে তিনি ওই কোম্পানির পরিচালক ছিলেন। এর আগে ২০০৯ সালে তিনি র‌্যাব-২ এর ভাইস-ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পান। একই বছর তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি পেয়ে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক নিযুক্ত হন।

 

 

পাকিস্তানের ৪৩ প্রেক্ষাগৃহে বাংলাদেশের ‘তুফান’

দুই মন্ত্রী’র কারণে আন্দোলন সমাধান করা সম্ভব হয়নি

বিদ্যুৎ খাতে ইচ্ছামতো লুট

আপডেট সময় ০৭:৪৮:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪

আজকের প্রত্রিকা গুলোর প্রধান প্রধান সংবাদ

কালবেলা:

বিদ্যুৎ খাতে ইচ্ছামতো লুট
ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আমলে চরম দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটে বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ খাত। সাড়ে ১৫ বছরে কোনো দরপত্র ছাড়াই বেসরকারি খাতে শতাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। এর বেশিরভাগই কোনো কাজে আসেনি। সরকারি হিসাবে উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার মেগাওয়াট বলা হলেও লোডশেডিং থেকে মুক্তি মেলেনি। এমনকি দেশে বিদ্যুতের প্রকৃত চাহিদা কত, তারও সঠিক কোনো হিসাব নেই বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে। সবার জন্য সরবরাহ নিশ্চিত না করে শুধু সংযোগ দিয়েই শতভাগ বিদ্যুতায়নের কৃতিত্ব জাহির করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদ্যুৎ বিভাগ

এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ আমলের দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে কাজ শুরু করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

প্রাপ্ত হিসাবে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদে বিদ্যুৎ খাতে মোট ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৮৩০ কোটি ডলার। বর্তমান বিনিময় হার বিবেচনায় (১ ডলার সমান ১১৮ টাকা) বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। একই সময় শুধু ক্যাপাসিটি চার্জের নামেই লুটপাট হয়েছে ১ লাখ কোটি টাকা। অর্থাৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে শুধু সক্ষমতা দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ এই টাকা নিয়ে গেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। এসব কেন্দ্রের বেশিরভাগের মালিক আওয়ামী লীগ নেতা কিংবা তাদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা।অন্যদিকে বিদ্যুৎ খাতের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ক্রয় এবং ভূমি অধিগ্রহণ ও রক্ষণাবেক্ষণেও চরম অনিয়ম এবং লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। গত বছর বিদ্যুৎ খাতের লুটপাটের তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) দুই কর্মকর্তাকেও বরখাস্ত করা হয়েছে।

সাড়ে ১৫ বছর ধরে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে শেষ দুই মেয়াদে তার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আবাসন ব্যবসায়ী নসরুল হামিদ বিপু। সংশ্লিষ্টরা জানান, যোগ্যতা বিবেচনা না করেই তিনি নিজের পছন্দের লোকজনকে বিদ্যুৎ খাতের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে বসিয়েছেন। এর সর্বশেষ উদাহরণ পিডিবির বর্তমান চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান। বুয়েট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পাস করা এই কর্মকর্তা নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই গণমাধ্যম এড়িয়ে চলতেন

দেশরুপান্তর:

দুই মন্ত্রী’র কারণে আন্দোলন সমাধান করা সম্ভব হয়নি
রাজধানীর নিউ মার্কেট থানায় হওয়া হকার শাহজাহান আলী হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। রিমান্ডের প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদে তারা দেশে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি তৈরির জন্য সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ওপর দায় চাপিয়েছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে আনিসুল হক পুলিশকে বলেছেন, ‘দেশে ছাত্র আন্দোলন শুরু হওয়ার পর আমি একটি সমাধানের দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। আন্দোলন দমনে তারা খুবই অ্যাগ্রেসিভ ছিলেন। তাছাড়া তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও বাস্তবতা বোঝানো যাচ্ছিল না। এ কারণে আন্দোলন একপর্যায়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।’

হকার শাহজাহান আলী হত্যার ঘটনায় নিউ মার্কেট থানায় করা মামলায় গত মঙ্গলবার সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গত বুধবার তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তারা এখন ডিবি হেফাজতে আছেন।

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, যে মামলায় সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেই মামলার ভিকটিম গুলিতে মারা গেছেন। অথচ এজাহারে কোটাবিরোধী জামায়াত-শিবির এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের এলোপাতাড়ি আঘাতে ভিকটিম শাহজাহান মারা গেছেন বলা হয়েছে। মামলায় কেন মিথ্যাচার করা হয়েছে, সেই বিষয় নিয়েও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ডিএমপি কমিশনার মাইনুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক প্রথম দিনের রিমান্ডে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। কখনো তাদের আলাদা জিজ্ঞাসাবাদ করে, আবার কখনো মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের কাছে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হবে। আরও যে কদিন রিমান্ড বাকি আছে, ওই সময়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।

প্রথম আলে:

বিক্ষোভে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

● মানবাধিকার লঙ্ঘনে দায়ীদের জবাবদিহির তাগিদ।

● আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করাসহ নানা সুপারিশ।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক

হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর) ১০ পৃষ্ঠার

এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

● ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট ৬৫০ জন নিহত।

● অবকাঠামো ক্ষতির কারণে নয়, সরকারই ইন্টারনেট বন্ধ করে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিক্ষোভ ও বিক্ষোভের পর সংঘাত দমনের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘অপ্রয়োজনীয়’ ও ‘মাত্রাতিরিক্ত’ বলপ্রয়োগের গুরুতর ও বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ এবং সহিংসতার ঘটনার ক্ষেত্রে নির্বিচার বল প্রয়োগ করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডের পাশাপাশি পাখি শিকারে ব্যবহৃত অস্ত্র, বুলেটসহ নানা রকম প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছেন।

‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও অস্থিরতা বিষয়ে প্রাথমিক বিশ্লেষণ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। গণমাধ্যম এবং আন্দোলনে যুক্তদের দেওয়া তথ্য উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত বিক্ষোভ এবং পরবর্তী সহিংসতায় অন্তত ৬৫০ জন বাংলাদেশি প্রাণ দিয়েছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর) ১০ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন গতকাল শুক্রবার জেনেভা থেকে প্রকাশ করেছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলের পতন হয়। এ পরিস্থিতি নিয়ে এই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করল।

প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক গতকাল জেনেভা থেকে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘বাংলাদেশের এই সন্ধিক্ষণে মানবাধিকার ও আইনের শাসনের ওপর ভিত্তি করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সংঘাতের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে জোর দিচ্ছি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি পুনর্বহালকে কেন্দ্র করে জুনের মাঝামাঝি বাংলাদেশে প্রাথমিক পর্যায়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও বেকারত্বের উচ্চ হার এ আন্দোলনে প্রভাব ফেলে। এই আন্দোলনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহিংসতা আর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে অন্তত ৩২ শিশুসহ কয়েক শ মানুষ নিহত এবং কয়েক

বনিকবার্ত:

জেল খেটে খালেদা জিয়াই জিতলেন, পালিয়ে দলকে বিপদে ফেললেন শেখ হাসিনা

ছাত্র-জনতার ব্যাপক অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে দেশত্যাগ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। স্বৈরশাসকের তকমা নিয়ে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী আশ্রয় নেন প্রতিবেশী দেশ ভারতে। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পরদিনই রাষ্ট্রপতির আদেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শাস্তি মওকুফ ও মুক্তির ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তাকে এ দণ্ড দিয়েছিলেন আদালত।

 

দলের প্রধানের মুক্তিতে ১৮ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দল বিএনপির কর্মীদের মধ্যে এখন বেশ চাঙ্গা ভাব। খালেদা জিয়ার মুক্তির পরদিন ৭ আগস্টেই এক মহাসমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। জেলমুক্ত খালেদা জিয়াকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে এখন বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে দলটি। দীর্ঘদিন আটক থাকা নেতাকর্মীরা ছাড়া পেয়ে রাজনীতির ময়দানে সক্রিয় হয়েছেন।

বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, দলের প্রধানকে ঘিরে নতুন করে সংগঠিত হচ্ছেন তারা। দলের শীর্ষ পর্যায় পুনর্গঠন থেকে শুরু করে যেকোনো কর্মসূচি বা কার্যক্রমে তার কাছ থেকে সরাসরি নির্দেশনাও নিচ্ছেন।

অন্যদিকে আকস্মিক ক্ষমতাচ্যুতি ও শেখ হাসিনার দেশত্যাগে আওয়ামী লীগ এখন এক প্রকার বিপর্যস্ত। শেখ হাসিনা দেশে নেই। দলের কেন্দ্রীয় ও সিনিয়র নেতারাও আত্মগোপনে। পুরোপুরি নেতৃত্বশূন্য অবস্থায় রাজনীতির ময়দানে সংগঠিত হতে পারছেন না দলটির নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীতেও দলটির নেতাকর্মীদের তেমন কোনো কর্মসূচির আয়োজন করতে দেখা যায়নি। দলটির কেন্দ্রীয় কোনো নেতাকেও সেখানে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে কিছু মানুষ জড়ো হলেও সেখানে আগে থেকে উপস্থিত অনেকের বাধার মুখে তারাও শোক জানাতে পারেননি। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগ এখন একপ্রকার অস্তিত্বের সংকটে পড়ে গেছে।

তাদের কারো কারো ভাষ্যমতে, শেখ হাসিনার দেশত্যাগের সিদ্ধান্তটি ছিল একপ্রকার রাজনৈতিক আত্মহত্যার শামিল। দেশে থেকে গিয়ে তিনি যদি কারাবরণও করতেন, তাকে মুক্তির দাবি তুলে আওয়ামী লীগের মাঠে নামার সুযোগ ছিল। দলের নেতাকর্মীদের কাছেও বার্তা যেত যে কঠিন পরিস্থিতিতেও তাদের ত্যাগ করেননি তিনি। কিন্তু তার দেশত্যাগের সিদ্ধান্তে তারা এখন পুরোপুরি নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীদেরও বড় অংশের আস্থা হারিয়েছেন তিনি। যদিও শেখ হাসিনা নিজেই এক সময় বারবার বলেছেন ‘‌আমরা যারা রাজনীতি করি, তাদের জন্য ক্ষমতার চেয়ার ও কারাগার পাশাপাশি থাকে’।

দ্য ডেইলি স্টার:

‘ওরা আমার ছেলেকে ছয়বার গুলি করেছে’
‘আমার ছেলে কোনো অন্যায় করেনি; কেন তাকে গুলি করে হত্যা করা হলো? আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

কথাগুলো বলছিলেন পটুয়াখালী সদর উপজেলার চৌলাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা রেহানা। গত ৫ আগস্ট ঢাকার বাড্ডা এলাকায় তার ছেলে রায়হান (১৭) গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান।

জুলাই মাসের শুরুতে রায়হান বাড্ডায় তার চাচাতো ভাইয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন এবং সিদ্ধান্ত নেন, শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি ফিরবেন না।

পটুয়াখালীর একটি মাদ্রাসা থেকে আগামী বছর রায়হানের দাখিল পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।

তার বাবা কামাল আকন দিনমজুরের কাজ করেন এবং মা রেহেনা গৃহিণী। ছোট বোন জান্নাতির বয়স মাত্র পাঁচ বছর।

গত ৫ আগস্ট সকালে বাড্ডা এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যখন গুলি চলায়, সে সময় রায়হানের বুকে ও পায়ে মোট ছয়টি গুলি লাগে। তাকে দ্রুততম সময়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রায়হানকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই রাতেই ময়নাতদন্ত ছাড়া রায়হানের মরদেহ পটুয়াখালীতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরদিন পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

চৌলাবুনিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রায়হানের পরিবারে এখন কেবলই হতাশা। রেহানা ছেলের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন।
ইত্তেফাক:রায় জালিয়াতি করে নির্বাচন ব্যবস্থা সংকটে ফেলার কারিগর যিনিhttps://www.ittefaq.com.bd/696752/
নির্বাচনব্যবস্থা তছনছের কারণে দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের শুরুটা হয়েছিল আপিল বিভাগ কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি সম্পর্কিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে। আর এই সংকট সৃষ্টির অন্যতম প্রধান কারিগর ছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের কারণেই পরপর তিনটি ভোটারবিহীন ও বিতর্কিত নির্বাচন কর্তৃত্ববাদী করে তুলেছিল আওয়ামী লীগ সরকারকে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সংকট গভীর থেকে গভীরতম হওয়ার পরিণতি ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে টানা সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা সরকারের পতন।

রায় নিয়েও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছিলেন বিচারপতি খায়রুল হক। আপিল বিভাগের ২০১১ সালের ১০ মে প্রদত্ত (৪-৩) বিভক্ত সংক্ষিপ্ত আদেশে বলা হয়েছিল, ‘সংসদ চাইলে আরো দুটি নির্বাচন এ ব্যবস্থায় (তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে) হতে পারে। তবে এতে বিচার বিভাগকে জড়িত করা যাবে না। বিদায়ী প্রধান বিচারপতি এবং আপিল বিভাগের বিচারপতিদের বাদ রেখে সংসদ এ সরকার পদ্ধতি সংস্কার করতে পারে।’

সংক্ষিপ্ত রায়কে ‘শিরোধার্য’ হিসেবে প্রচার চালিয়ে এবং পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের বহু আগেই ২০১১ সালের ৩০ জুন নবম সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাশের মাধ্যমে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বিলুপ্ত করে দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা সংবিধান থেকে বাদ দেওয়ার প্রায় ১৬ মাস পর, অর্থাৎ ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পায়। যখন এই পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পায় তখন খায়রুল হক আর প্রধান বিচারপতি ছিলেন না। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ রায়ে দেখা যায়—সংক্ষিপ্ত রায়ে থাকা আরো দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে পারার কথাটি নেই। এমনকি, সরকারের মেয়াদ শেষ হলেও সংসদ বহাল থাকার কথাও যুক্ত হয় পূর্ণাঙ্গ রায়ে। সংক্ষিপ্ত রায়ের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ রায়ের এই ভয়াবহ অসংগতি নিয়ে তখনই জোরালো বিতর্ক উঠেছিল।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় প্রদানকারী বাকি ছয় বিচারপতির মধ্যে তিন জন খায়রুল হকের সঙ্গে একমত পোষণ করেন। ৩৪২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সঙ্গে একমত হয়েছেন মো. মোজাম্মেল হোসেন, বিচারপতি এস কে সিনহা ও বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা। তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা। তবে বিচারপতি মো. ইমান আলী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে বা বিপক্ষে মত না দিয়ে বিষয়টি জাতীয় সংসদের ওপর ছেড়ে দেন।

নয়াদিগন্ত:

উপদেষ্টাদের দায়িত্ব পুনর্বণ্টন
– নতুন ৪ উপদেষ্টার শপথ
– স্বরাষ্ট্র পেলেন জাহাঙ্গীর
– সাখাওয়াত বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) সাখাওয়াত হোসেনকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বর্তমান উপদেষ্টাদের দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নতুন শপথ নেয়া লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। একই সাথে কৃষি মন্ত্রণালয়ও সামলাবেন তিনি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ নেয়া নতুন চার উপদেষ্টার মধ্যে দফতর বণ্টন করেছে সরকার। আর বর্তমান ৮ উপদেষ্টার দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
এতে বলা হয়েছে, নতুন উপদেষ্টাদের মধ্যে ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদকে পরিকল্পনা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে দেয়া হয়েছে তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। সেগুলো হলো- বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেল মন্ত্রণালয়। নতুন করে সরকারে যুক্ত হওয়া আলী ইমাম মজুমদারকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।

আর বর্তমান উপদেষ্টাদের মধ্যে দায়িত্ব পুনর্বণ্টন হয়েছে আট উপদেষ্টার। সালেহ উদ্দিন আহমেদ অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখবেন। আসিফ নজরুল আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। আদিলুর রহমান খান শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় দেখবেন। রিজওয়ানা হাসান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসেবে থাকবেন। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা নাহিদ ইসলাম তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ও দেখবেন। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পাশাপাশি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় পেয়েছেন। ফারুকী আজম মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন।

যুগান্তর:

ছাত্র আন্দোলনে ৩২ শিশুসহ নিহত ৬৫০
অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করেছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা * দায়ীদের জবাবদিহি করতে হবে, ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে
বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনে ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত ৩২ শিশুসহ ৬৫০ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার জেনেভা থেকে প্রকাশিত জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের (ইউএনএইচসিআর) প্রাথমিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

১০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত গণমাধ্যম ও অন্যান্য সূত্রের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে ৬০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ৪০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া সরকার পতনের পর ৫ থেকে ৭ আগস্টের মধ্যে বিক্ষোভের নতুন ধাক্কায় ২৫০ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নিহতদের মধ্যে আছেন বিক্ষোভকারী, পথচারী, সাংবাদিক এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্যও। এতে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে গুরুতর এবং বিশ্বাসযোগ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত সরকার শক্তি প্রয়োগ করে আন্দোলনকারীদের দমন করার চেষ্টা করেছে। জাতিসংঘ বলছে, আওয়ামী লীগ সরকার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নির্বিচারে বলপ্রয়োগে রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড এবং প্রাণঘাতী গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে।

এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সার্বিক শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বেশকিছু পরামর্শও দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। এজন্য কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক পক্ষগুলো, অন্তর্বর্তী সরকার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বেশ কিছু সুপারিশও করা হয়েছে।

প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষ্যে এক বার্তায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ দমনে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করেছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, এমন ইঙ্গিত পেয়েছে জাতিসংঘ। তিনি উল্লেখ করেন, আরও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা সাপেক্ষে বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

মানবজমিন:

সাবেক সচিবের বাসা থেকে ৩ কোটি টাকা উদ্ধার
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামালের মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে শাহ কামালের রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাবর রোডের এফ-ব্লকের ২৯/২ ও ৩ নম্বর বাড়ি থেকে এসব অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৩ কোটি ১ লাখ ১০ হাজার ১৬৬ বাংলাদেশি টাকা ও ৭৪ হাজার ৪শ’ টাকা সমমূল্যের প্রাইজবন্ড। এছাড়াও ১০ লাখ ৩ হাজার ৩০৬ টি বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে। এসব বিদেশি মুদ্রার মধ্যে, ৩ হাজার ডলার, ১৩শ’ ২০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, ২ হাজার ৯৬৯ সৌদি রিয়াল, ৪ হাজার ১২২ সিংগাপুর ডলার, ১৯শ’ ১৫ অস্ট্রেলিয়ান ডলার, ৩৫ হাজার কোরিয়ান ইয়ান ও ১৯৯ চীনা মুদ্রা রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে শাহ কামাল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব থাকাকালে বিভিন্ন বদলি, কেনাকাটা ও উন্নয়ন কাজসহ বিভিন্ন উৎস থেকে অবৈধ এসব অর্থগ্রহণ করেছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ওবায়দুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাবর রোডের ওই বাসায় অভিযান চালানো হয়। তবে টাকা উদ্ধার করা হলেও এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তিনি বলেন, অবৈধভাবে উপার্জিত এসব অর্থ সাবেক সচিব শাহ কামাল বাসায় রেখেছিলেন। সরকার পরিবর্তনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে গেছেন, তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডারড:

আয়নাঘর, ২০১৩ সালে হেফাজতের ওপর হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন জিয়াউল: দাবি পুলিশের

রিমান্ড আবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের সহিংস দমন-পীড়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল জিয়াউলের, যা তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।

 

সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের ওপর আক্রমণ ও নিধন, আড়িপাতার যন্ত্র পেগাসাস সফটওয়্যার ক্রয় ও আয়নাঘরের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে করা আবেদনে এমনটাই দাবি করেছে পুলিশ। এতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এসব ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

তবে আদালতে শুনানির সময় এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জিয়াউল আহসান। আজ শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে রিমান্ড আবেদনের বিষয়ে শুনানির জন্য তাকে আদালতে আনা হয়।

রিমান্ড আবেদনে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, জিয়াউল ইসরায়েলি সফটওয়্যার পেগাসাস কেনার কথা স্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে আদালতে জিজ্ঞাসা করা হলে জিয়াউল বলেন, ‘পেগাসাস বলে কিছু নেই। আমি কারো ফোন ট্র্যাক করিনি।’

পুলিশ আরও দাবি করে, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক এই মহাপরিচালক ‘আয়নাঘর’র সঙ্গেও জড়িত।

তবে জিয়াউল আহসান আদালতে বলেন, ‘আমি কোনো হত্যাকাণ্ড বা গুমের সঙ্গে জড়িত নই। যারা আয়নাঘর থেকে মুক্তি পেয়েছে তাদের কাউকে জিজ্ঞাসা করেন যে আমি তাদের সেখানে আটকে রেখেছি কি না।’

পুলিশের দাবির পাল্টা জবাবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ৭ আগস্ট তাকে তার বাড়ি থেকে ডিজিএফআই তুলে নিয়ে গিয়েছিল এবং আট দিন আয়নাঘরে বন্দি করে রেখেছিল।

রিমান্ড আবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের সহিংস দমন-পীড়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল জিয়াউলের, যা তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।

রাজধানীর নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় চাকরি থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত জিয়াউল আহসানকে গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ (১৬ আগস্ট) সকালে তাকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গত ৬ আগস্ট মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

তিনি ২০২২ সাল থেকে এনটিএমসির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর আগে তিনি ওই কোম্পানির পরিচালক ছিলেন। এর আগে ২০০৯ সালে তিনি র‌্যাব-২ এর ভাইস-ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পান। একই বছর তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি পেয়ে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক নিযুক্ত হন।