ঢাকা ০২:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

পলকের নির্দেশে বন্ধ করা হয় ইন্টারনেট

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান সংবাদ

কালবেলা:

পলকের নির্দেশে বন্ধ করা হয় ইন্টারনেট
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট শাটডাউন-সংক্রান্ত প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের মৌখিক আদেশে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদের নির্দেশে কয়েক দফা ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়। এ ছাড়া ইন্টারনেট বন্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) নির্দেশনাও ছিল। প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনের বরাতে গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়।

গত রোববার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (টেলিকম) এ কে এম আমিরুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। সেই প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে বলে কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ১৫ ও ১৬ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট এবং গত ১৮ থেকে ২৩ জুলাই ও ৫ আগস্ট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ ও চালুর বিষয়টি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রশাসনিক অনুমোদন ব্যতিরেকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের মৌখিক নির্দেশক্রমে বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদের নির্দেশনায় করা হয়।

এ ছাড়া ১৭ থেকে ২৮ জুলাই এবং ৫ আগস্ট মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ও চালু করার বিষয়টি এনটিএমসির নির্দেশনায় করা হয়। ওই সময়ে ডাটা সেন্টারে আগুন লাগার সঙ্গে ইন্টারনেট বন্ধের কোনো সম্পর্ক ছিল না। ইন্টারনেট বন্ধের সঙ্গে ডাটা সেন্টারে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি সম্পৃক্ত করে প্রচারণার মাধ্যমে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জাতির সঙ্গে মিথ্যাচার ও প্রতারণা করেছেন। এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত চলছে।

মানবজমিন:

জিহাদ বলেছিল আর একদিনই আন্দোলনে যাবো মা
কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিল কলেজ শিক্ষার্থী জিহাদ হাসান মাহিম। আন্দোলন যখন একদফায় গড়ায় তখন যাত্রাবাড়ী এলাকায় ছিল টানা সংঘাত সহিংসতা। ভয় থেকে মাহিমের মা কোহিনুর বেগম ছেলেকে বারণ করেছিলেন আর আন্দোলনে না যেতে। মাহিম বলেছিল মা আর একদিন মাত্র আন্দোলনে যাবো। ৫ই আগস্ট মাকে লুকিয়ে আন্দোলনে যায় সে। এরপর আর ঘরে ফিরতে পারেনি। ঘরে ফিরে মাহিমের গুলিবিদ্ধ লাশ। গত ৫ই আগস্ট দুপুরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন জিহাদ হাসান মাহিম। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রাণ হারানো শিক্ষার্থী মাহিমের বাবা মোহাম্মদ আলম মিয়া ছেলের শোক বয়ে বেড়াচ্ছেন। তবে তিনি গর্বও বোধ করেন ছেলের আত্মত্যাগে। যাত্রাবাড়ী থানাধীন শনির আখড়া এলাকায় তাদের বাসায় গিয়ে দেখা যায় শোকবিহ্বল পরিস্থিতি।
তার বই খাতা, খেলার সরঞ্জাম বুকে আঁকড়ে ধরে যেন ছেলের স্পর্শ অনুভব করতে চাইছেন শোকার্ত পিতামাতা। কান্নায় ভেঙে পড়ে পিতা মোহাম্মদ আলম মিয়া বলেন, ‘গত ১৯শে জুলাই আন্দোলনে গিয়ে সে ছররা গুলিতে আহত হয়েছিল। আমি তাকে বলি, আন্দোলনে গিয়ে তোর কিছু হলে আমাদের কী হবে? ছেলে উত্তর দিলো, আমরা ঘরে বসে থাকলেই বা তোমাদের কী হবে! দেশটাকে পরিষ্কার করতে হবে। সেটা আমরা ঘরে বসে থাকলে হবে না। আমি বলি, তাহলে তুই একা যাবি না। আমি আর তোর ছোট ভাইও সঙ্গে যাবো।

যুগান্তর:

হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় রাজধানীর মোহাম্মদপুর বসিলা এলাকায় পুলিশের গুলিতে মুদি দোকানি আবু সায়েদের মৃত্যুর ঘটনায় এ মামলা হয়।

মামলায় অন্য আসামিরা হলেন-সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।

সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন আগস্টের শুরুতে সরকার পতনের আন্দোলনে পরিণত হয়। জেলায় জেলায় সহিংসতায় মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে কয়েকশ মানুষ প্রাণ হারায়। ৫ আগস্ট আন্দোলনকারীদের ঢাকামুখী লংমার্চের মধ্যে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন এবং পালিয়ে ভারতে চলে যান। এরপর তার বিরুদ্ধে এটাই প্রথম মামলা দায়ের।

মামলার বাদী আদাবর এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী এসএম আমীর হামজা শাতিল। তিনি সচেতন নাগরিক হিসাবে একজন নিরীহ নাগরিক হত্যার বিচার চেয়ে এ মামলা করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। পরে শুনানি শেষে আদালত শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা এজাহার হিসাবে গ্রহণ করতে মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দেন।

মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেন, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে বিকাল ৪টার দিকে মোহাম্মদপুর থানাধীন বসিলায় ৪০ ফিট চৌরাস্তায় মুদি দোকানি আবু সায়েদ নিহত হন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলন চলাকালে শক্ত হাতে দমন করার নির্দেশ দিয়েছেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পুলিশকে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি করার নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে মামলার বাদী এসএম আমীর হামজা যুগান্তরকে বলেন, ভিকটিম আবু সায়েদ একজন নিরীহ মানুষ। তিনি রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশের গুলিতে সঙ্গে সঙ্গে মারা যান। পুলিশের গুলিতে গরিব আবু সায়েদের মৃত্যুতে কোনো মামলা হয়নি। আবু সায়েদের পরিবার অত্যন্ত গরিব। তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না।

এ কারণে সচেতন নাগরিক হিসাবে আবু সায়েদ হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করেছি। আশা করছি ন্যায়বিচার পাব। তিনি আরও বলেন, মামলা করার পর আমাকে ফ্রান্স থেকে এক ব্যক্তি হত্যার হুমকি দিয়েছেন। আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘আমি কার বিরুদ্ধে মামলা করছি তার কনসিকুয়েন্স জানি কিনা। আমাকে জানে মেরে ফেলবে।’ তবে আমি এসব ভয় পাই না। পরবর্তী সময়ে যদি কোনো হুমকি আসে তাহলে আমি আইনের আশ্রয় নেব।

সমকাল:

এবার ৪ দফা দাবিতে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে জড়িতদের বিচারে বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠনসহ চার দফা দাবিতে ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কর্মসূচির অংশ হিসেবে আন্দোলন চলাকালে যেসব স্থানে ছাত্র-জনতা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, সে স্থানগুলোতে ‘রোডমার্চ’ কর্মসূচি নিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং শহীদদের জন্য প্রার্থনা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে একটি মিছিল নিয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া ঘুরে ভিসি চত্বর ও ফুলার রোড হয়ে শহীদ মিনারে সমাবেশ করেন।

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম চার দফা দাবি উপস্থাপন করেন।

সেগুলো হলো
১. ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দল ও সরকার যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।

২. সংখ্যালঘুদের উপর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী মহাজোটের শরিক দলগুলোর পরিকল্পিত হত্যা, ডাকাতি ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সংখ্যালঘুদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে।

৩. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হামলা, মামলা, এবং হত্যাযজ্ঞকে বৈধতা দিয়েছে এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বারংবার কায়েমের চেষ্টা করছে, তাদের দ্রুততম সময়ে অপসারণ ও নূতন সরকারে তাদের নিয়োগ বাতিল করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ৪. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছে, তাদের জন্য দ্রুততম সময়ে সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে হবে।

সমাবেশে ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, আমাদের শহীদ ভাইদের রক্তের বিনিময়ে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে সেই অভ্যুত্থানকে আমরা যেকোনো মূল্যে রক্ষা করব। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ফ্যাসিবাদের দোসররা যতক্ষণ পর্যন্ত থাকবে, দেশের ছাত্র-জনতা ততক্ষণ পর্যন্ত রাজপথে অবস্থান করবে। তিনি ধর্মবর্ণ-নির্বিশেষে সব জনতাকে ফ্যাসিবাদের ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে আহ্বান জানান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, যারা এই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে বুধবার থেকে মামলা করার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বলতে চাই, দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যত আমলা ও কমিশনের প্রধান ও হাসিনার দোসর রয়েছে তাদের আজকের মধ্যেই পদত্যাগ করতে হবে। তাছাড়া যারা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ও ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছেন তাদের যোগ্য স্থানে পদায়ন করতে হবে।

প্রথম আলো:

ইসলামী ব্যাংকের ৫০ হাজার কোটি টাকাই এস আলমের পকেটে
মাত্র বছর দশেক আগেও দেশের শীর্ষ ব্যাংক ছিল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি। আইনকানুন পরিপালন, গ্রাহককে সেবা দেওয়া ও আর্থিক সূচকে অন্য সব ব্যাংককে ছাড়িয়ে গিয়েছিল এই ব্যাংক। গ্রাহকের আস্থার কারণে স্থানীয় আমানত কিংবা বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহে এটি সবচেয়ে এগিয়ে ছিল। ব্যাংকটির আকার এতটাই বড় হয়ে উঠেছিল যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বলা হতো—ইসলামী ব্যাংক ঝুঁকিতে পড়লে পুরো খাতে ‘পদ্ধতিগত ঝুঁকি’ তৈরি হবে, যা রোধ করা সম্ভব হবে না।

কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে ২০১৭ সাল থেকে। ওই বছর সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ইসলামী ব্যাংককে ‘জামায়াতমুক্ত’ করার উদ্যোগ হিসেবে এর মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নেয় সদ্য বিদায় নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপ। এরপর সাড়ে সাত বছরে নামে-বেনামে ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এই ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাজশাহীর নাবিল গ্রুপ। এই অর্থ ব্যাংকটির মোট ঋণের এক–তৃতীয়াংশ। এই টাকা বের করতে কোনো নিয়মকানুন মানা হয়নি। ঋণের যে তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে, ব্যাংক থেকে পাচার করা অর্থের প্রকৃত পরিমাণ তার চেয়ে বেশি বলেই মনে করেন কর্মকর্তারা।

এই টাকা বের করা হয়েছে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, তাঁর স্ত্রী, মেয়ের স্বামী, আত্মীয়সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে। ঋণ হিসেবে অর্থ বের করতে তৈরি করা হয় নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান। আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে যেভাবে টাকা বের করেছিলেন, অনেকটা একই কায়দায় ইসলামী ব্যাংক থেকেও অর্থ বের করা হয়। এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন বন্ধের উপক্রম, আমানতকারীরা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। পি কে হালদার ছিলেন এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন আভিভা ফাইন্যান্স ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)।

ইসলামী ব্যাংক থেকে পাচার হওয়া টাকা এখন আদায় করা যাচ্ছে না, ফলে ব্যাংকটি তারল্যসংকটে ভুগছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকে চাহিদামতো তারল্য জমা রাখতে না পারায় প্রতিদিন জরিমানা দিচ্ছে। আবার একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদ্য সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার নিজের বিশেষ ক্ষমতাবলে ‘টাকা ছাপিয়ে’ দেড় বছর ধরে ব্যাংকটিকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন; কিন্তু ব্যাংকটির খারাপ অবস্থার জন্য যাঁরা দায়ী, তাঁদের কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর ইসলামী ব্যাংকে প্রায় ১০ হাজার কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে এস আলম গ্রুপ। এসব কর্মকর্তার বেশির ভাগই সাইফুল আলমের নিজের এলাকা পটিয়া উপজেলার। ফলে ব্যাংকটির অর্ধেক কর্মকর্তাই এখন পটিয়ার। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই ২০১৭ সালের আগে নিয়োগ পাওয়া পুরোনো কর্মকর্তারা আন্দোলন শুরু করেছেন ব্যাংকটিকে ‘এস আলম ও পটিয়ামুক্ত’ করতে। এর মধ্যে বিবদমান দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গুলি বর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হচ্ছেন। এই পদে তাঁর নিয়োগসংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হওয়ার আগে গতকাল সকালে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ব্যাংকটি খেয়ে ফেলার জন্য এস আলম গ্রুপের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। তারা সেই কাজই করেছে, ব্যাংকটি ধ্বংস করে দিয়েছে। আর এই ব্যাংকের টাকা ডলার হয়ে

সংগ্রাম:

আমরা ফ্যাসিবাদের পক্ষে নই ফ্যাসিবাদ দেখতেও চাই না ————ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর দেশকে অর্থবহ, স্থিতিশীল ও উন্নয়নের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য দল হিসেবে আমাদের করণীয় আছে। সর্বোপরি আমরা নাগরিক। নাগরিক হিসেবে আমরা চাই বৈষম্যহীন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে। তিনি বলেন, হাজারো মানুষের তাজা রক্ত ভাসছে। রক্তাক্ত লাশের কথা মানুষ ভুলতে পারে না। আমরা ফ্যাসিবাদের পক্ষে নই। আমরা ফ্যাসিবাদ দেখতেও চাই না।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মগবাজারে গণঅধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় জামায়াত নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, এইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হামিদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন।

গণঅধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সভাপতি কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান, সদস্য সচিব ফারুক হাসান, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ওয়াজি উল্লাহ, আরিফুর রহমান তুহিন, যুগ্ম সদস্য সচিব আতাউল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক জাকারিয়া পলাশ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সেক্রেটারি মুনতাসির মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তুহিন আহাদ। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর দেশকে অর্থবহ, স্থিতিশীল ও উন্নয়নের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য দল হিসেবে আমাদের করণীয় আছে। সর্বোপরি আমরা নাগরিক। নাগরিক হিসেবে আমরা চাই বৈষম্যহীন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে।

 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন দল গোছানোর দায়িত্ব কোন উপদেষ্টার নয়। তাদের উচিত, তাদের কাজে মনোযোগ দেয়া।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের মজলুম জনগণ ঠিক করবে, তারা কী করবে। জনগণই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবে। হাজারো মানুষের তাজা রক্ত ভাসছে। রক্তাক্ত লাশের কথা মানুষ ভুলতে পারে না। আমরা ফ্যাসিবাদের পক্ষে নই। আমরা ফ্যাসিবাদ দেখতেও চাই না।

নয়াদিগন্ত:

শেষ তিন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারের বেহিসেবি ঋণ
দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে সাইফুল আলম মাসুদ ওরফে এস আলম, সালমান এফ রহমানসহ সরকারের সমর্থিত ব্যবসায়ীরা হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে অর্থ বের করে নিয়েছে, তেমনি সরকারও দেদার নিয়েছে ব্যাংকঋণ। শুধু ব্যাংক খাত থেকেই নয়, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও বিদায়ী অর্থবছরের শেষ তিন মাসে মাত্রাতিরিক্ত ঋণ নিয়েছে সরকার। যেখানে প্রতিদিন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জরুরি প্রয়োজনে ঋণ নিতে পারে আট হাজার কোটি টাকা, সেখানে এক দিনে ঋণ নিয়েছে ৭১ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত। এভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে শেষ সময়ে সরকারের ঋণের জোগান দিতে গিয়ে বেড়ে গেছে মুদ্রাসরবরাহ। আর এ কারণে মূল্যস্ফীতির পাগলা ঘোড়ার ঊর্ধ্বমুখী ঠেকানো যায়নি, বরং বেড়ে গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সরকার তার আয় অতিরিক্ত ব্যয় মেটাতে ঋণ নিয়ে থাকে। এ ঋণ নেয়া হয় দেশের ভেতর থেকে ও দেশের বাইরে থেকে। দেশের ভেতর থেকে ঋণ নেয়া হয় ব্যাংকিং খাত থেকে ও ব্যাংক বহির্ভূত খাত বিশেষ করে সঞ্চয়পত্র থেকে। জানা গেছে, দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা আর ফেরত দিচ্ছেন না সরকার সমর্থিত ব্যবসায়ী গ্রুপ। আর এ কারণে দেশের ব্যাংকিং খাতে টাকার সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ দিকে সবধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ তার অর্জিত আয় দিয়ে ব্যয় নির্বাহ করতে পারছে না। এর ফলে কাক্সিক্ষত হারে আমানত আসছে না বরং ক্ষেত্র বিশেষ জমানো টাকা ভেঙে খাচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং খাতে নগদ টাকার সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ সঙ্কট মেটাতে ব্যাংকগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা যেমন কলমানি মার্কেট থেকে প্রয়োজনীয় টাকা ধার পাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থেক জোগান দেয়া হয়েছে। অর্থবছরের শেষ দিনগুলোতে ২৮ হাজার কোটি টাকা ধার দেয়ার রেকর্ড রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে।

ব্যাংকগুলোর টাকার সঙ্কটের মাঝে বছরের শেষ সময়ে কাক্সিক্ষত হারে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারেনি সরকার। এ কারণে বাধ্য হয়ে তাদের ব্যয় ঠিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার নিয়েছে। সাধারণত ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মাধ্যমে পর্যাপ্ত অর্থ সরকার ধার করতে না পারলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার নিয়ে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের জরুরি প্রয়োজন মেটাতে আট হাজার কোটি টাকা এক দিনে ধার দিতে (ওভার ড্রাফট) পারে। কিন্তু অর্থবছরের শেষ তিন মাস অর্থাৎ ৯০ দিনের মধ্যে ৬২ দিনই সরকার তার কোটার অতিরিক্ত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে। এক এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত এ অতিরিক্ত ঋণ নেয়া হলেও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে তা অনুমোদন দেয়া হয়েছে এক আগস্ট।

কালের কন্ঠ:

সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক গ্রেপ্তার
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন থানা ও বন্দরে যে মেসেজ দিয়েছিলাম, সেই মেসেজের ভিত্তিতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, রাজধানীর নিউ মার্কেট থানায় করা একটি মামলায় এই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগ (মিডিয়া) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নৌপথে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে সালমান এফ রহমান ঢাকা-১ আসন থেকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে নিজের বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেন।

দেশ রুপান্তর:

লাপাত্তা পুলিশের ঊর্ধ্বতন ৫৭ কর্তা
বাংলাদেশ পুলিশের উচ্চাভিলাষী ও অপেশাদার অর্ধশতাধিক কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যারা সম্প্রতি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ‘অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ’ করেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই কর্মকর্তাদের অনেকে ছাত্র-জনতার ওপর প্রাণঘাতী গুলি ছোড়ারও নির্দেশ দিয়েছেন। চিহ্নিত এই কর্মকর্তারা নিজেদের ‘বিশেষ মতাদর্শে’র অনুসারী হিসেবে পরিচয় দিতেন। পুলিশের নিজস্ব গোয়েন্দা কার্যক্রম ও বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে।

যাদের মধ্যে বাহিনীটির সাবেক মহাপরিদর্শকও (আইজিপি) রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে নিয়োগে দুর্নীতি, অনিয়ম, গ্রেপ্তার বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ। ইতিমধ্যে এই কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এরই মধ্যে তাদের দুজনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি ও তিনজনকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে।

 

 

টঙ্গীতে ২৮ শে অক্টোবর শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান

হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

পলকের নির্দেশে বন্ধ করা হয় ইন্টারনেট

আপডেট সময় ০৭:০৯:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান সংবাদ

কালবেলা:

পলকের নির্দেশে বন্ধ করা হয় ইন্টারনেট
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট শাটডাউন-সংক্রান্ত প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের মৌখিক আদেশে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদের নির্দেশে কয়েক দফা ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়। এ ছাড়া ইন্টারনেট বন্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) নির্দেশনাও ছিল। প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনের বরাতে গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়।

গত রোববার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (টেলিকম) এ কে এম আমিরুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। সেই প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে বলে কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ১৫ ও ১৬ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট এবং গত ১৮ থেকে ২৩ জুলাই ও ৫ আগস্ট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ ও চালুর বিষয়টি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রশাসনিক অনুমোদন ব্যতিরেকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের মৌখিক নির্দেশক্রমে বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদের নির্দেশনায় করা হয়।

এ ছাড়া ১৭ থেকে ২৮ জুলাই এবং ৫ আগস্ট মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ও চালু করার বিষয়টি এনটিএমসির নির্দেশনায় করা হয়। ওই সময়ে ডাটা সেন্টারে আগুন লাগার সঙ্গে ইন্টারনেট বন্ধের কোনো সম্পর্ক ছিল না। ইন্টারনেট বন্ধের সঙ্গে ডাটা সেন্টারে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি সম্পৃক্ত করে প্রচারণার মাধ্যমে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জাতির সঙ্গে মিথ্যাচার ও প্রতারণা করেছেন। এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত চলছে।

মানবজমিন:

জিহাদ বলেছিল আর একদিনই আন্দোলনে যাবো মা
কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিল কলেজ শিক্ষার্থী জিহাদ হাসান মাহিম। আন্দোলন যখন একদফায় গড়ায় তখন যাত্রাবাড়ী এলাকায় ছিল টানা সংঘাত সহিংসতা। ভয় থেকে মাহিমের মা কোহিনুর বেগম ছেলেকে বারণ করেছিলেন আর আন্দোলনে না যেতে। মাহিম বলেছিল মা আর একদিন মাত্র আন্দোলনে যাবো। ৫ই আগস্ট মাকে লুকিয়ে আন্দোলনে যায় সে। এরপর আর ঘরে ফিরতে পারেনি। ঘরে ফিরে মাহিমের গুলিবিদ্ধ লাশ। গত ৫ই আগস্ট দুপুরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন জিহাদ হাসান মাহিম। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রাণ হারানো শিক্ষার্থী মাহিমের বাবা মোহাম্মদ আলম মিয়া ছেলের শোক বয়ে বেড়াচ্ছেন। তবে তিনি গর্বও বোধ করেন ছেলের আত্মত্যাগে। যাত্রাবাড়ী থানাধীন শনির আখড়া এলাকায় তাদের বাসায় গিয়ে দেখা যায় শোকবিহ্বল পরিস্থিতি।
তার বই খাতা, খেলার সরঞ্জাম বুকে আঁকড়ে ধরে যেন ছেলের স্পর্শ অনুভব করতে চাইছেন শোকার্ত পিতামাতা। কান্নায় ভেঙে পড়ে পিতা মোহাম্মদ আলম মিয়া বলেন, ‘গত ১৯শে জুলাই আন্দোলনে গিয়ে সে ছররা গুলিতে আহত হয়েছিল। আমি তাকে বলি, আন্দোলনে গিয়ে তোর কিছু হলে আমাদের কী হবে? ছেলে উত্তর দিলো, আমরা ঘরে বসে থাকলেই বা তোমাদের কী হবে! দেশটাকে পরিষ্কার করতে হবে। সেটা আমরা ঘরে বসে থাকলে হবে না। আমি বলি, তাহলে তুই একা যাবি না। আমি আর তোর ছোট ভাইও সঙ্গে যাবো।

যুগান্তর:

হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় রাজধানীর মোহাম্মদপুর বসিলা এলাকায় পুলিশের গুলিতে মুদি দোকানি আবু সায়েদের মৃত্যুর ঘটনায় এ মামলা হয়।

মামলায় অন্য আসামিরা হলেন-সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।

সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন আগস্টের শুরুতে সরকার পতনের আন্দোলনে পরিণত হয়। জেলায় জেলায় সহিংসতায় মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে কয়েকশ মানুষ প্রাণ হারায়। ৫ আগস্ট আন্দোলনকারীদের ঢাকামুখী লংমার্চের মধ্যে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন এবং পালিয়ে ভারতে চলে যান। এরপর তার বিরুদ্ধে এটাই প্রথম মামলা দায়ের।

মামলার বাদী আদাবর এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী এসএম আমীর হামজা শাতিল। তিনি সচেতন নাগরিক হিসাবে একজন নিরীহ নাগরিক হত্যার বিচার চেয়ে এ মামলা করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। পরে শুনানি শেষে আদালত শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা এজাহার হিসাবে গ্রহণ করতে মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দেন।

মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেন, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে বিকাল ৪টার দিকে মোহাম্মদপুর থানাধীন বসিলায় ৪০ ফিট চৌরাস্তায় মুদি দোকানি আবু সায়েদ নিহত হন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলন চলাকালে শক্ত হাতে দমন করার নির্দেশ দিয়েছেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পুলিশকে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি করার নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে মামলার বাদী এসএম আমীর হামজা যুগান্তরকে বলেন, ভিকটিম আবু সায়েদ একজন নিরীহ মানুষ। তিনি রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশের গুলিতে সঙ্গে সঙ্গে মারা যান। পুলিশের গুলিতে গরিব আবু সায়েদের মৃত্যুতে কোনো মামলা হয়নি। আবু সায়েদের পরিবার অত্যন্ত গরিব। তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না।

এ কারণে সচেতন নাগরিক হিসাবে আবু সায়েদ হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করেছি। আশা করছি ন্যায়বিচার পাব। তিনি আরও বলেন, মামলা করার পর আমাকে ফ্রান্স থেকে এক ব্যক্তি হত্যার হুমকি দিয়েছেন। আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘আমি কার বিরুদ্ধে মামলা করছি তার কনসিকুয়েন্স জানি কিনা। আমাকে জানে মেরে ফেলবে।’ তবে আমি এসব ভয় পাই না। পরবর্তী সময়ে যদি কোনো হুমকি আসে তাহলে আমি আইনের আশ্রয় নেব।

সমকাল:

এবার ৪ দফা দাবিতে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে জড়িতদের বিচারে বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠনসহ চার দফা দাবিতে ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কর্মসূচির অংশ হিসেবে আন্দোলন চলাকালে যেসব স্থানে ছাত্র-জনতা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, সে স্থানগুলোতে ‘রোডমার্চ’ কর্মসূচি নিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং শহীদদের জন্য প্রার্থনা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে একটি মিছিল নিয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া ঘুরে ভিসি চত্বর ও ফুলার রোড হয়ে শহীদ মিনারে সমাবেশ করেন।

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম চার দফা দাবি উপস্থাপন করেন।

সেগুলো হলো
১. ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দল ও সরকার যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।

২. সংখ্যালঘুদের উপর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী মহাজোটের শরিক দলগুলোর পরিকল্পিত হত্যা, ডাকাতি ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সংখ্যালঘুদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে।

৩. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হামলা, মামলা, এবং হত্যাযজ্ঞকে বৈধতা দিয়েছে এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বারংবার কায়েমের চেষ্টা করছে, তাদের দ্রুততম সময়ে অপসারণ ও নূতন সরকারে তাদের নিয়োগ বাতিল করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ৪. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছে, তাদের জন্য দ্রুততম সময়ে সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে হবে।

সমাবেশে ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, আমাদের শহীদ ভাইদের রক্তের বিনিময়ে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে সেই অভ্যুত্থানকে আমরা যেকোনো মূল্যে রক্ষা করব। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ফ্যাসিবাদের দোসররা যতক্ষণ পর্যন্ত থাকবে, দেশের ছাত্র-জনতা ততক্ষণ পর্যন্ত রাজপথে অবস্থান করবে। তিনি ধর্মবর্ণ-নির্বিশেষে সব জনতাকে ফ্যাসিবাদের ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে আহ্বান জানান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, যারা এই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে বুধবার থেকে মামলা করার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বলতে চাই, দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যত আমলা ও কমিশনের প্রধান ও হাসিনার দোসর রয়েছে তাদের আজকের মধ্যেই পদত্যাগ করতে হবে। তাছাড়া যারা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ও ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছেন তাদের যোগ্য স্থানে পদায়ন করতে হবে।

প্রথম আলো:

ইসলামী ব্যাংকের ৫০ হাজার কোটি টাকাই এস আলমের পকেটে
মাত্র বছর দশেক আগেও দেশের শীর্ষ ব্যাংক ছিল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি। আইনকানুন পরিপালন, গ্রাহককে সেবা দেওয়া ও আর্থিক সূচকে অন্য সব ব্যাংককে ছাড়িয়ে গিয়েছিল এই ব্যাংক। গ্রাহকের আস্থার কারণে স্থানীয় আমানত কিংবা বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহে এটি সবচেয়ে এগিয়ে ছিল। ব্যাংকটির আকার এতটাই বড় হয়ে উঠেছিল যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বলা হতো—ইসলামী ব্যাংক ঝুঁকিতে পড়লে পুরো খাতে ‘পদ্ধতিগত ঝুঁকি’ তৈরি হবে, যা রোধ করা সম্ভব হবে না।

কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে ২০১৭ সাল থেকে। ওই বছর সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ইসলামী ব্যাংককে ‘জামায়াতমুক্ত’ করার উদ্যোগ হিসেবে এর মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নেয় সদ্য বিদায় নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপ। এরপর সাড়ে সাত বছরে নামে-বেনামে ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এই ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাজশাহীর নাবিল গ্রুপ। এই অর্থ ব্যাংকটির মোট ঋণের এক–তৃতীয়াংশ। এই টাকা বের করতে কোনো নিয়মকানুন মানা হয়নি। ঋণের যে তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে, ব্যাংক থেকে পাচার করা অর্থের প্রকৃত পরিমাণ তার চেয়ে বেশি বলেই মনে করেন কর্মকর্তারা।

এই টাকা বের করা হয়েছে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, তাঁর স্ত্রী, মেয়ের স্বামী, আত্মীয়সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে। ঋণ হিসেবে অর্থ বের করতে তৈরি করা হয় নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান। আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে যেভাবে টাকা বের করেছিলেন, অনেকটা একই কায়দায় ইসলামী ব্যাংক থেকেও অর্থ বের করা হয়। এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন বন্ধের উপক্রম, আমানতকারীরা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। পি কে হালদার ছিলেন এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন আভিভা ফাইন্যান্স ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)।

ইসলামী ব্যাংক থেকে পাচার হওয়া টাকা এখন আদায় করা যাচ্ছে না, ফলে ব্যাংকটি তারল্যসংকটে ভুগছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকে চাহিদামতো তারল্য জমা রাখতে না পারায় প্রতিদিন জরিমানা দিচ্ছে। আবার একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদ্য সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার নিজের বিশেষ ক্ষমতাবলে ‘টাকা ছাপিয়ে’ দেড় বছর ধরে ব্যাংকটিকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন; কিন্তু ব্যাংকটির খারাপ অবস্থার জন্য যাঁরা দায়ী, তাঁদের কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর ইসলামী ব্যাংকে প্রায় ১০ হাজার কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে এস আলম গ্রুপ। এসব কর্মকর্তার বেশির ভাগই সাইফুল আলমের নিজের এলাকা পটিয়া উপজেলার। ফলে ব্যাংকটির অর্ধেক কর্মকর্তাই এখন পটিয়ার। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই ২০১৭ সালের আগে নিয়োগ পাওয়া পুরোনো কর্মকর্তারা আন্দোলন শুরু করেছেন ব্যাংকটিকে ‘এস আলম ও পটিয়ামুক্ত’ করতে। এর মধ্যে বিবদমান দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গুলি বর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হচ্ছেন। এই পদে তাঁর নিয়োগসংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হওয়ার আগে গতকাল সকালে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ব্যাংকটি খেয়ে ফেলার জন্য এস আলম গ্রুপের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। তারা সেই কাজই করেছে, ব্যাংকটি ধ্বংস করে দিয়েছে। আর এই ব্যাংকের টাকা ডলার হয়ে

সংগ্রাম:

আমরা ফ্যাসিবাদের পক্ষে নই ফ্যাসিবাদ দেখতেও চাই না ————ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর দেশকে অর্থবহ, স্থিতিশীল ও উন্নয়নের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য দল হিসেবে আমাদের করণীয় আছে। সর্বোপরি আমরা নাগরিক। নাগরিক হিসেবে আমরা চাই বৈষম্যহীন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে। তিনি বলেন, হাজারো মানুষের তাজা রক্ত ভাসছে। রক্তাক্ত লাশের কথা মানুষ ভুলতে পারে না। আমরা ফ্যাসিবাদের পক্ষে নই। আমরা ফ্যাসিবাদ দেখতেও চাই না।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মগবাজারে গণঅধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় জামায়াত নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, এইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হামিদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন।

গণঅধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সভাপতি কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান, সদস্য সচিব ফারুক হাসান, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ওয়াজি উল্লাহ, আরিফুর রহমান তুহিন, যুগ্ম সদস্য সচিব আতাউল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক জাকারিয়া পলাশ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সেক্রেটারি মুনতাসির মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তুহিন আহাদ। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর দেশকে অর্থবহ, স্থিতিশীল ও উন্নয়নের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য দল হিসেবে আমাদের করণীয় আছে। সর্বোপরি আমরা নাগরিক। নাগরিক হিসেবে আমরা চাই বৈষম্যহীন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে।

 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন দল গোছানোর দায়িত্ব কোন উপদেষ্টার নয়। তাদের উচিত, তাদের কাজে মনোযোগ দেয়া।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের মজলুম জনগণ ঠিক করবে, তারা কী করবে। জনগণই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবে। হাজারো মানুষের তাজা রক্ত ভাসছে। রক্তাক্ত লাশের কথা মানুষ ভুলতে পারে না। আমরা ফ্যাসিবাদের পক্ষে নই। আমরা ফ্যাসিবাদ দেখতেও চাই না।

নয়াদিগন্ত:

শেষ তিন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারের বেহিসেবি ঋণ
দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে সাইফুল আলম মাসুদ ওরফে এস আলম, সালমান এফ রহমানসহ সরকারের সমর্থিত ব্যবসায়ীরা হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে অর্থ বের করে নিয়েছে, তেমনি সরকারও দেদার নিয়েছে ব্যাংকঋণ। শুধু ব্যাংক খাত থেকেই নয়, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও বিদায়ী অর্থবছরের শেষ তিন মাসে মাত্রাতিরিক্ত ঋণ নিয়েছে সরকার। যেখানে প্রতিদিন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জরুরি প্রয়োজনে ঋণ নিতে পারে আট হাজার কোটি টাকা, সেখানে এক দিনে ঋণ নিয়েছে ৭১ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত। এভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে শেষ সময়ে সরকারের ঋণের জোগান দিতে গিয়ে বেড়ে গেছে মুদ্রাসরবরাহ। আর এ কারণে মূল্যস্ফীতির পাগলা ঘোড়ার ঊর্ধ্বমুখী ঠেকানো যায়নি, বরং বেড়ে গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সরকার তার আয় অতিরিক্ত ব্যয় মেটাতে ঋণ নিয়ে থাকে। এ ঋণ নেয়া হয় দেশের ভেতর থেকে ও দেশের বাইরে থেকে। দেশের ভেতর থেকে ঋণ নেয়া হয় ব্যাংকিং খাত থেকে ও ব্যাংক বহির্ভূত খাত বিশেষ করে সঞ্চয়পত্র থেকে। জানা গেছে, দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা আর ফেরত দিচ্ছেন না সরকার সমর্থিত ব্যবসায়ী গ্রুপ। আর এ কারণে দেশের ব্যাংকিং খাতে টাকার সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ দিকে সবধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ তার অর্জিত আয় দিয়ে ব্যয় নির্বাহ করতে পারছে না। এর ফলে কাক্সিক্ষত হারে আমানত আসছে না বরং ক্ষেত্র বিশেষ জমানো টাকা ভেঙে খাচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং খাতে নগদ টাকার সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ সঙ্কট মেটাতে ব্যাংকগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা যেমন কলমানি মার্কেট থেকে প্রয়োজনীয় টাকা ধার পাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থেক জোগান দেয়া হয়েছে। অর্থবছরের শেষ দিনগুলোতে ২৮ হাজার কোটি টাকা ধার দেয়ার রেকর্ড রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে।

ব্যাংকগুলোর টাকার সঙ্কটের মাঝে বছরের শেষ সময়ে কাক্সিক্ষত হারে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারেনি সরকার। এ কারণে বাধ্য হয়ে তাদের ব্যয় ঠিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার নিয়েছে। সাধারণত ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মাধ্যমে পর্যাপ্ত অর্থ সরকার ধার করতে না পারলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার নিয়ে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের জরুরি প্রয়োজন মেটাতে আট হাজার কোটি টাকা এক দিনে ধার দিতে (ওভার ড্রাফট) পারে। কিন্তু অর্থবছরের শেষ তিন মাস অর্থাৎ ৯০ দিনের মধ্যে ৬২ দিনই সরকার তার কোটার অতিরিক্ত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে। এক এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত এ অতিরিক্ত ঋণ নেয়া হলেও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে তা অনুমোদন দেয়া হয়েছে এক আগস্ট।

কালের কন্ঠ:

সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক গ্রেপ্তার
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন থানা ও বন্দরে যে মেসেজ দিয়েছিলাম, সেই মেসেজের ভিত্তিতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, রাজধানীর নিউ মার্কেট থানায় করা একটি মামলায় এই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগ (মিডিয়া) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নৌপথে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে সালমান এফ রহমান ঢাকা-১ আসন থেকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে নিজের বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেন।

দেশ রুপান্তর:

লাপাত্তা পুলিশের ঊর্ধ্বতন ৫৭ কর্তা
বাংলাদেশ পুলিশের উচ্চাভিলাষী ও অপেশাদার অর্ধশতাধিক কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যারা সম্প্রতি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ‘অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ’ করেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই কর্মকর্তাদের অনেকে ছাত্র-জনতার ওপর প্রাণঘাতী গুলি ছোড়ারও নির্দেশ দিয়েছেন। চিহ্নিত এই কর্মকর্তারা নিজেদের ‘বিশেষ মতাদর্শে’র অনুসারী হিসেবে পরিচয় দিতেন। পুলিশের নিজস্ব গোয়েন্দা কার্যক্রম ও বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে।

যাদের মধ্যে বাহিনীটির সাবেক মহাপরিদর্শকও (আইজিপি) রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে নিয়োগে দুর্নীতি, অনিয়ম, গ্রেপ্তার বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ। ইতিমধ্যে এই কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এরই মধ্যে তাদের দুজনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি ও তিনজনকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে।