ঢাকা ১২:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তোলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।ক্যাম্পাসভিত্তিক একটি গ্রুপ ‘লিংকার্স ইন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়’ এ দাবি ওঠানো হয়।সেখানে একটি পোল তৈরি করে ভোটাভুটির আয়োজন করা হয়।সেখানে দেখা যায়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি চায়না ৮৫ শতাংশ অর্থাৎ তাঁরা নিষিদ্ধের পক্ষে ভোট প্রদান করে।ছাত্র,শিক্ষক,কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি বন্ধ চায় ১১ শতাংশ।মাত্র ২ শতাংশ ব্যক্তি ছাত্র রাজনীতি থাকার পক্ষে ভোট প্রদান করেন।বাকিরা কোন পক্ষেই ভোট দেয়নি। আজ শনিবার (১০ আগস্ট) বিকাল ৬ টা পর্যন্ত ওই পোলে এই শতাংশিক পরিমাপ করা হয়।এদিকে ছাত্ররাজনীতি রেখে শিক্ষক,কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানায় ববি ইসলামী ছাত্র আন্দোলন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, কোন দলের ছাত্ররাজনীতি ক্যাম্পাসে থাকা উচিৎ হবে না।তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোটে ছাত্র-সংসদ চালু হোক যা সকল শিক্ষার্থীদের হয়ে কথা বলবে।সংঘাত বা কোন নোংরামো তারা (শিক্ষার্থীরা) চায়না।সাধারণ শিক্ষার্থীরা গুলি খেয়েছে রাজনীতি চালু করে নতুন করে সহিংসতা তৈরি করবে তার জন্য নয়।দলীয়,লেজুরভিত্তিক রাজনীতি দ্রুত বন্ধ করতে হবে।ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হলে বৈষম্য ও অপরাধ কমবে। বিগত দিনগুলো থেকে শিক্ষা নিতে পারি আমরা।লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে,সংঘর্ষ,চাঁদাবাজি ও সিট দখল হয়েছে। তাই এইগুলা বন্ধে একতা থাকার কথা জানান শিক্ষার্থীরা।

এদিকে ইংরেজি বিভাগের সিরাজুল ইসলাম একটি গ্রুপে পোস্ট করে লেখেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা চাই ছাত্র,শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সকল ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সিন্ডিকেট সভা ডেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তা কার্যকর করতে হবে।আর এই দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবগত করবে।ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ না হলে সকল শিক্ষার্থী আন্দোলনের ডাক দিবে।

লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ আলিফ রহমান ফাহাদ জানান,মানুষ রাজনৈতিক জীব৷ রাজনীতি করার অধিকার সবার আছে৷ কিন্তু আমরা বিগত সময়গুলোতে দেখেছি দেশের ক্ষমতাসীন এবং অন্যান্য দলসমূহের ছাত্রসংগঠনগুলোর বিভৎসতা৷ রাজনৈতিক ব্যানারে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠগুলো অস্ত্রের ঝনঝনানি৷ ন্যায্য কথা বলা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর চলেছে নির্মম নির্যাতন৷ তাই ক্যাম্পাসগুলোর সুস্থ ও স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের বিকল্প নেই৷ তবে হ্যাঁ,  শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবী-দাওয়া তুলে ধরার জন্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ছাত্র সংসদ গঠন করা যেতে পারে৷

অন্য এক শিক্ষার্থী মতামত দিয়েছেন,ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি দরকার রয়েছে।সন্ত্রাসের রাজনীতি বা দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি আমরা কেউই চায়না। তবে ছাত্রদের মধ্যে সুষ্ঠু রাজনীতির চর্চা হওয়া প্রয়োজন নাহলে তারা নিজেদের এবং গণমানুষের অধিকার নিয়ে সচেতন হবে না। ছাত্ররাজনীতির ইতিহাস(১৯৫২,৬৯,৭১ ও ৯০) ভুলে গেলে চলবে না।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম শাহেদ জানান, আমাদের ৯ দফা দাবির মধ্যে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের কথা বলা ছিলো।আমরা চাই ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্র-সংসদ কার্যকর করা হোক।

বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, শিক্ষার্থীদের জন্যই আমরা।শিক্ষার্থীরা যেটি যৌক্তিক মনে করে, সেটিতে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান আটক

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি

আপডেট সময় ১১:৩৪:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৪

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তোলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।ক্যাম্পাসভিত্তিক একটি গ্রুপ ‘লিংকার্স ইন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়’ এ দাবি ওঠানো হয়।সেখানে একটি পোল তৈরি করে ভোটাভুটির আয়োজন করা হয়।সেখানে দেখা যায়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি চায়না ৮৫ শতাংশ অর্থাৎ তাঁরা নিষিদ্ধের পক্ষে ভোট প্রদান করে।ছাত্র,শিক্ষক,কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি বন্ধ চায় ১১ শতাংশ।মাত্র ২ শতাংশ ব্যক্তি ছাত্র রাজনীতি থাকার পক্ষে ভোট প্রদান করেন।বাকিরা কোন পক্ষেই ভোট দেয়নি। আজ শনিবার (১০ আগস্ট) বিকাল ৬ টা পর্যন্ত ওই পোলে এই শতাংশিক পরিমাপ করা হয়।এদিকে ছাত্ররাজনীতি রেখে শিক্ষক,কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানায় ববি ইসলামী ছাত্র আন্দোলন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, কোন দলের ছাত্ররাজনীতি ক্যাম্পাসে থাকা উচিৎ হবে না।তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোটে ছাত্র-সংসদ চালু হোক যা সকল শিক্ষার্থীদের হয়ে কথা বলবে।সংঘাত বা কোন নোংরামো তারা (শিক্ষার্থীরা) চায়না।সাধারণ শিক্ষার্থীরা গুলি খেয়েছে রাজনীতি চালু করে নতুন করে সহিংসতা তৈরি করবে তার জন্য নয়।দলীয়,লেজুরভিত্তিক রাজনীতি দ্রুত বন্ধ করতে হবে।ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হলে বৈষম্য ও অপরাধ কমবে। বিগত দিনগুলো থেকে শিক্ষা নিতে পারি আমরা।লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে,সংঘর্ষ,চাঁদাবাজি ও সিট দখল হয়েছে। তাই এইগুলা বন্ধে একতা থাকার কথা জানান শিক্ষার্থীরা।

এদিকে ইংরেজি বিভাগের সিরাজুল ইসলাম একটি গ্রুপে পোস্ট করে লেখেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা চাই ছাত্র,শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সকল ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সিন্ডিকেট সভা ডেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তা কার্যকর করতে হবে।আর এই দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবগত করবে।ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ না হলে সকল শিক্ষার্থী আন্দোলনের ডাক দিবে।

লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ আলিফ রহমান ফাহাদ জানান,মানুষ রাজনৈতিক জীব৷ রাজনীতি করার অধিকার সবার আছে৷ কিন্তু আমরা বিগত সময়গুলোতে দেখেছি দেশের ক্ষমতাসীন এবং অন্যান্য দলসমূহের ছাত্রসংগঠনগুলোর বিভৎসতা৷ রাজনৈতিক ব্যানারে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠগুলো অস্ত্রের ঝনঝনানি৷ ন্যায্য কথা বলা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর চলেছে নির্মম নির্যাতন৷ তাই ক্যাম্পাসগুলোর সুস্থ ও স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের বিকল্প নেই৷ তবে হ্যাঁ,  শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবী-দাওয়া তুলে ধরার জন্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ছাত্র সংসদ গঠন করা যেতে পারে৷

অন্য এক শিক্ষার্থী মতামত দিয়েছেন,ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি দরকার রয়েছে।সন্ত্রাসের রাজনীতি বা দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি আমরা কেউই চায়না। তবে ছাত্রদের মধ্যে সুষ্ঠু রাজনীতির চর্চা হওয়া প্রয়োজন নাহলে তারা নিজেদের এবং গণমানুষের অধিকার নিয়ে সচেতন হবে না। ছাত্ররাজনীতির ইতিহাস(১৯৫২,৬৯,৭১ ও ৯০) ভুলে গেলে চলবে না।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম শাহেদ জানান, আমাদের ৯ দফা দাবির মধ্যে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের কথা বলা ছিলো।আমরা চাই ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্র-সংসদ কার্যকর করা হোক।

বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, শিক্ষার্থীদের জন্যই আমরা।শিক্ষার্থীরা যেটি যৌক্তিক মনে করে, সেটিতে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।