ঢাকা ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo অনির্দিষ্টকালের জন্য বাকৃবি বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ Logo চবিতে সংঘর্ষ নিয়ে প্রায় ৪ ঘণ্টার বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত নিলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন Logo টেকনাফে ৫ লক্ষ টাকার ইয়াবা ও দেশিয় অস্ত্র সহ ১আটক Logo মুন্সিগঞ্জে সেপ্টিকট্যাংকে কাজ করতে গিয়ে তিন শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু   Logo ৩০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি বিএনপি’ নেতা-কর্মীদের, নিরাপত্তাহীনতায় সিআইপি ব্যবসায়ী পরিবার Logo টিভিতে যে খেলা দেখবেন আজ Logo মুন্সিগঞ্জে সেপ্টিকট্যাংকে কাজ করতে গিয়ে তিন শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু   Logo আমরা দুইটা ভুল করেছি, একটা স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে : ফাতিমা তাসনীম Logo জামায়াতের অমুসলিম শাখায় যোগ দিলেন ১১ হিন্দু ধর্মাবলম্বী Logo আমি যে ছাত্রীসংস্থা নই, এটা প্রমাণে কি ঘন ঘন হিজাব ছাড়া ছবি আপলোড দিতে হবে?

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশেই আমাদের আটকে রাখা হয়েছিল: ছয় সমন্বয়ক

  • ফখরুল ইসলাম
  • আপডেট সময় ০৩:০৬:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ অগাস্ট ২০২৪
  • 237

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নির্দেশেই আমাদের অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছি: ছয় সমন্বয়ক

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নির্দেশেই আমাদের অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছিল। সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ছাত্র-নাগরিকের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ডিবির হেফাজত থেকে ছাড়া পাওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক। তাছাড়া আন্দোলন প্রত্যাহারের নামে প্রচারিত ভিডিও স্টেটমেন্টটিও তাঁরা স্বেচ্ছায় দেননি বলে দাবি করেন। আজ শুক্রবার (২ আগস্ট) সকালে গণমাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ অভিযোগ করে ডিবি কার্যালয়ে যা ঘটেছিল তার বিবরণ দেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘মূলত আন্দোলন ও নেতৃত্বকে ছত্রভঙ্গ করতেই গত ১৯ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের গুম, গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও হয়রানি করা হচ্ছে।

এর ধারাবাহিকতায় নিরাপত্তার নামে ছয় সমন্বয়ককে সাত দিন ধরে ডিবি হেফাজতে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডিবি প্রধান নিরাপত্তার কথা বললেও আমাদের আন্দোলন থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার জন্যই ডিবি হেফাজতে রাখা হয়েছিল। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘আন্দোলন প্রত্যাহার করে ডিবি অফিস থেকে প্রচারিত ছয় সমন্বয়ককের ভিডিও স্টেটমেন্টটি আমরা স্বেচ্ছায় দেইনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সিদ্ধান্ত ডিবি অফিস থেকে আসতে পারে না।

সারাদেশের সব সমন্বয়ক ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গৃহীত হবে না।’
বিবৃতিতে ছয় সমন্বয়ক বলেন, ‘ডিবি অফিসে আমাদের জোর করে খাবার টেবিলে বসিয়ে ভিডিও করা হয়। আমাদের ছেড়ে দেবার আশ্বাস দিয়ে পরিবারকে ডেকে ১৩ ঘন্টা বসিয়ে রাখা হয় এবং মিডিয়ায় মিথ্যা স্টেটমেন্ট দেওয়ানো হয়। আমাদের শিক্ষকরা দেখা করতে আসলে, দেখা করতে দেওয়া হয়নি।

অনশন কর্মসূচির ব্যাপারে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অন্যায়ভাবে সমন্বয়কদের আটক, সারাদেশে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে গত ৩০ জুলাই রাত থেকে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের ডিবি অফিসে আটক অবস্থায় অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। পরবর্তীতে ওই খবর জানামাত্র সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুলাহ ও নুসরাত তাবাসসুমও অনশন শুরু করেন।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘অনশনের কথা পরিবার ও মিডিয়া থেকে গোপন করা হয়। প্রায় ৩২ ঘণ্টারও বেশি সময় অনশনের পর ডিবি প্রধান ছয় সমন্বয়ককে মুক্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিলে অনশন ভাঙা হয়। এরপর আমাদেরকে ১ অগাস্ট দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

গত সাতদিন ডিবি অফিসে আমাদের ও আমাদের পরিবারের সঙ্গে নানা হয়রানি, নির্যাতন ও নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
ডিবি হেফাজতে রাখা প্রসঙ্গে বিবৃতিতে আরো, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশেই আমাদের অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছিল। সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ছাত্র-নাগরিকের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সরকার এখনো শিক্ষার্থীদের ওপর দমননীতি অব্যাহত রেখেছে এবং সারাদেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করছে এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে বাধা দিয়েছে।’

কর্মসূচি অব্যাহত রাখা নিয়ে বিবৃতিতে ছয় সমন্বয়ক বলেন, ‘ছাত্র-নাগরিক হত্যার বিচার ও আটককৃত নিরপরাধ ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে। সারাদেশে ছাত্র-নাগরিকদের প্রতি আহ্বান থাকবে সরকারের মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা ও দমন-পীড়নকে তোয়াক্কা না করে রাজপথে নেমে আসুন। শহীদের রক্ত বৃথা যাবে না।

অনির্দিষ্টকালের জন্য বাকৃবি বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশেই আমাদের আটকে রাখা হয়েছিল: ছয় সমন্বয়ক

আপডেট সময় ০৩:০৬:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ অগাস্ট ২০২৪

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নির্দেশেই আমাদের অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছিল। সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ছাত্র-নাগরিকের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ডিবির হেফাজত থেকে ছাড়া পাওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক। তাছাড়া আন্দোলন প্রত্যাহারের নামে প্রচারিত ভিডিও স্টেটমেন্টটিও তাঁরা স্বেচ্ছায় দেননি বলে দাবি করেন। আজ শুক্রবার (২ আগস্ট) সকালে গণমাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ অভিযোগ করে ডিবি কার্যালয়ে যা ঘটেছিল তার বিবরণ দেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘মূলত আন্দোলন ও নেতৃত্বকে ছত্রভঙ্গ করতেই গত ১৯ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের গুম, গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও হয়রানি করা হচ্ছে।

এর ধারাবাহিকতায় নিরাপত্তার নামে ছয় সমন্বয়ককে সাত দিন ধরে ডিবি হেফাজতে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডিবি প্রধান নিরাপত্তার কথা বললেও আমাদের আন্দোলন থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার জন্যই ডিবি হেফাজতে রাখা হয়েছিল। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘আন্দোলন প্রত্যাহার করে ডিবি অফিস থেকে প্রচারিত ছয় সমন্বয়ককের ভিডিও স্টেটমেন্টটি আমরা স্বেচ্ছায় দেইনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সিদ্ধান্ত ডিবি অফিস থেকে আসতে পারে না।

সারাদেশের সব সমন্বয়ক ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গৃহীত হবে না।’
বিবৃতিতে ছয় সমন্বয়ক বলেন, ‘ডিবি অফিসে আমাদের জোর করে খাবার টেবিলে বসিয়ে ভিডিও করা হয়। আমাদের ছেড়ে দেবার আশ্বাস দিয়ে পরিবারকে ডেকে ১৩ ঘন্টা বসিয়ে রাখা হয় এবং মিডিয়ায় মিথ্যা স্টেটমেন্ট দেওয়ানো হয়। আমাদের শিক্ষকরা দেখা করতে আসলে, দেখা করতে দেওয়া হয়নি।

অনশন কর্মসূচির ব্যাপারে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অন্যায়ভাবে সমন্বয়কদের আটক, সারাদেশে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে গত ৩০ জুলাই রাত থেকে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের ডিবি অফিসে আটক অবস্থায় অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। পরবর্তীতে ওই খবর জানামাত্র সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুলাহ ও নুসরাত তাবাসসুমও অনশন শুরু করেন।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘অনশনের কথা পরিবার ও মিডিয়া থেকে গোপন করা হয়। প্রায় ৩২ ঘণ্টারও বেশি সময় অনশনের পর ডিবি প্রধান ছয় সমন্বয়ককে মুক্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিলে অনশন ভাঙা হয়। এরপর আমাদেরকে ১ অগাস্ট দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

গত সাতদিন ডিবি অফিসে আমাদের ও আমাদের পরিবারের সঙ্গে নানা হয়রানি, নির্যাতন ও নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
ডিবি হেফাজতে রাখা প্রসঙ্গে বিবৃতিতে আরো, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশেই আমাদের অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছিল। সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ছাত্র-নাগরিকের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সরকার এখনো শিক্ষার্থীদের ওপর দমননীতি অব্যাহত রেখেছে এবং সারাদেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করছে এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে বাধা দিয়েছে।’

কর্মসূচি অব্যাহত রাখা নিয়ে বিবৃতিতে ছয় সমন্বয়ক বলেন, ‘ছাত্র-নাগরিক হত্যার বিচার ও আটককৃত নিরপরাধ ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে। সারাদেশে ছাত্র-নাগরিকদের প্রতি আহ্বান থাকবে সরকারের মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা ও দমন-পীড়নকে তোয়াক্কা না করে রাজপথে নেমে আসুন। শহীদের রক্ত বৃথা যাবে না।