ঢাকা ০৭:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটা আন্দোলনে সহিংসতার দায়ে নিষিদ্ধ হলো জামায়াত-শিবির

চলমান বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলার ঘটনার দোষী সাব্যস্ত করে সরকারের নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করা হলো দেশের ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরকে।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে সই করেছেন মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব জাহাংগীর আলম।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যেহেতু, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত কয়েকটি মামলার রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (পূর্বনাম জামায়াত-ই- ইসলামী/জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ) এবং তার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির (পূর্বনাম ইসলামী ছাত্রসংঘ)-কে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ী হিসেবে গণ্য করা হইয়াছে; এবং যেহেতু, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ রিট পিটিশন নং-৬৩০/২০০৯-এ ১ আগস্ট ২০১৩ তারিখের প্রদত্ত রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এর রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত/প্রাপ্ত নিবন্ধন বাতিল করিয়া দিয়াছে এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগের ওই রায়কে বহাল রাখিয়াছে; এবং যেহেতু, সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রহিয়াছে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং তার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাম্প্রতিককালে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সরাসরি এবং উসকানির মাধ্যমে জড়িত ছিল।

এতে আরও বলা হয়েছে, যেহেতু সরকার বিশ্বাস করে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সব অঙ্গ সংগঠন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সহিত জড়িত রহিয়াছে সেহেতু, সরকার, সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ তার সব অঙ্গ সংগঠনকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করিল এবং উক্ত আইনের তফসিল-২ এ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ তার সব অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসেবে তালিকাভুক্ত করিল। ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

এর আগে সকালে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর কক্ষের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করার একটা আইনি প্রক্রিয়া আছে, সেটা আমরা গত পরশু শুরু করে দিয়েছিলাম। এর মধ্যে এই নিষিদ্ধের যে গেজেট প্রকাশ করা হবে, সেটারও কিছু আইনি বাধ্যবাধকতা আছে, সেগুলো পূরণ করতে হবে।

‘যে কারণে গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সেই আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করে আমার মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগে পাঠিয়েছে, এরপর সেটিকে ভেটিং করে আবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি, আমার মনে হয়ে, কিছুক্ষণের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই গেজেট প্রকাশ করে দেবে।’

তিনি বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮/১ ধারায় জামায়াত-শিবির ও অন্যান্য যে অঙ্গ সংগঠন নিষিদ্ধ, এটা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের যে দ্বিতীয় তফসিল আছে, সেখানে এগুলো তালিকাভুক্ত হবে। এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত, আপনারা মনে হয় কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রজ্ঞাপন পেয়ে যাবেন। এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ চালু করলো পাকিস্তান

কোটা আন্দোলনে সহিংসতার দায়ে নিষিদ্ধ হলো জামায়াত-শিবির

আপডেট সময় ০৪:৪৩:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪

চলমান বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলার ঘটনার দোষী সাব্যস্ত করে সরকারের নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করা হলো দেশের ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরকে।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে সই করেছেন মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব জাহাংগীর আলম।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যেহেতু, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত কয়েকটি মামলার রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (পূর্বনাম জামায়াত-ই- ইসলামী/জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ) এবং তার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির (পূর্বনাম ইসলামী ছাত্রসংঘ)-কে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ী হিসেবে গণ্য করা হইয়াছে; এবং যেহেতু, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ রিট পিটিশন নং-৬৩০/২০০৯-এ ১ আগস্ট ২০১৩ তারিখের প্রদত্ত রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এর রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত/প্রাপ্ত নিবন্ধন বাতিল করিয়া দিয়াছে এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগের ওই রায়কে বহাল রাখিয়াছে; এবং যেহেতু, সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রহিয়াছে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং তার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাম্প্রতিককালে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সরাসরি এবং উসকানির মাধ্যমে জড়িত ছিল।

এতে আরও বলা হয়েছে, যেহেতু সরকার বিশ্বাস করে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সব অঙ্গ সংগঠন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সহিত জড়িত রহিয়াছে সেহেতু, সরকার, সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ তার সব অঙ্গ সংগঠনকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করিল এবং উক্ত আইনের তফসিল-২ এ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ তার সব অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসেবে তালিকাভুক্ত করিল। ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

এর আগে সকালে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর কক্ষের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করার একটা আইনি প্রক্রিয়া আছে, সেটা আমরা গত পরশু শুরু করে দিয়েছিলাম। এর মধ্যে এই নিষিদ্ধের যে গেজেট প্রকাশ করা হবে, সেটারও কিছু আইনি বাধ্যবাধকতা আছে, সেগুলো পূরণ করতে হবে।

‘যে কারণে গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সেই আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করে আমার মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগে পাঠিয়েছে, এরপর সেটিকে ভেটিং করে আবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি, আমার মনে হয়ে, কিছুক্ষণের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই গেজেট প্রকাশ করে দেবে।’

তিনি বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮/১ ধারায় জামায়াত-শিবির ও অন্যান্য যে অঙ্গ সংগঠন নিষিদ্ধ, এটা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের যে দ্বিতীয় তফসিল আছে, সেখানে এগুলো তালিকাভুক্ত হবে। এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত, আপনারা মনে হয় কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রজ্ঞাপন পেয়ে যাবেন। এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব