জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনসংলগ্ন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের জবাবে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছেন শিক্ষার্থীরা। টানা দুই ঘণ্টার সংঘর্ষে অন্তত ৭০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর।
তারা সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বুধবার (১৭ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে এই সংঘর্ষের শুরু। শিক্ষার্থীরা বটতলা নামক স্থানের সামনে অবস্থান নেন। বিপুলসংখ্যক পুলিশ রেজিস্ট্রার ভবনের কাছে অবস্থান নেয়।
টানা দুই ঘণ্টার সংঘর্ষের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। শিক্ষার্থীরা হল বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এতে উপাচার্যসহ প্রশাসনের অনেকেই অবরুদ্ধ হয়ে যান। শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর একের পর এক সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা আবার বটতলা নামক স্থানে জড়ো হন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলাম। হল বন্ধের ঘোষণার প্রতিবাদ করছিলাম। আমরা এখন যাব কোথায়, আমাদের নিরাপত্তা দেবে কে? বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের তথ্য মতে, এখন অবধি পুলিশের হামলায় ৭০ জন আহত হয়েছেন।
এর মধ্যে পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভারের এনাম মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের উপপরিচালক রেজওয়ান আহমেদ বলেন, ‘আহত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ৭০ জনের মতো। আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করছি। এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের সাভার এনাম মেডিক্যালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছি।’
আজ সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এক সিন্ডিকেট মিটিংয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করেন রেজিস্ট্রার আবু হাসান। পরে এক বিজ্ঞাপ্তিতে সিদ্ধান্তগুলো জানানো হয়। এতে বলা হয়, বিকেল ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে হবে। এতে আরো বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রকার শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসগুলো যথারীতি খোলা থাকবে।
প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় তাৎক্ষণিকভাবে বিভিন্ন হল থেকে স্লোগান নিয়ে শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার ভবেনে জড়ো হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত তারা প্রত্যাখ্যান করেন। আন্দোলনের সমন্বয়ক আরিফ সোহেল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।