কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এতে শহরের পুরো যান চলাচল একরকম স্থবির হয়ে পড়েছে। পায়ে হাঁটা ছাড়া গন্তব্যে পৌঁছানোর বিকল্প এ মুহূর্তে নেই বললেই চলে। তবে বিচ্ছিন্নভাবে রিকশা চলাচল করায় ভেঙ্গে ভেঙ্গে কিছু পথ এগোনোর চেষ্টা করছেন পথচারীরা। আর এ সুযোগে অতিরিক্ত ভাড়া ছাড়া রিকশাচালকরা কথাই শুনছেন না বলে অভিযোগ তাদের।
বুধবার (১০ জুলাই) সকাল থেকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শাহবাগ মোড় ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের ব্যারিকেডে এ এলাকার চারপাশে যান চলাচল একেবারেই বন্ধ। তবে ব্যারিকেড থেকে পরবর্তী মোড়ের ব্যারিকেড পর্যন্ত রিকশা চলাচল করছে। কিন্তু রিকশার ভাড়া দেড় থেকে দ্বিগুণ পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে।
সারেজমিনে দেখা যায়, শাহবাগ মোড় থেকে মৎস্য ভবন পর্যন্ত ভাড়া চাওয়া হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। সাধারণ সময়ে এ পথের ভাড়া ৩০ টাকা। শাহবাগ মোড় থেকে গুলিস্তান, চানখারপুলের ভাড়া চাওয়া হচ্ছে ৮০-১২০ টাকা পর্যন্ত।
তবে এ পথের ভাড়া ৬০-৭০ টাকার বেশি নয়। এদিকে শাহবাগ মোড় থেকে সায়েন্সল্যাবের ভাড়া গুনতে হচ্ছে ৭০-১০০ টাকা পর্যন্ত। বাধ্য হয়ে তা-ও যাচ্ছেন মানুষ। তবে রিকশাচালকদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়াতে হচ্ছে তাদের।
মৎস্য ভবনগামী যাত্রী রুবেল শেখ বলেন, ৩০ টাকার ভাড়া ৬০ টাকায় যাচ্ছি; তা-ও তো যেতে পারছি। জরুরি না হলে হেঁটেই যেতাম। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যৌক্তিক। তাই কষ্ট হলেও মেনে নিচ্ছি।
রিকশাচালক কাইয়ুম বলেন, ‘মামা না পোষাইলে মেট্রোতে যান’। আরেক রিকশাচালক আসলাম বলেন, যাত্রী অনেক, কিন্তু রিকশা কম। তাছাড়া কোথাও কোথাও জ্যামও লেগে রয়েছে। এতে সময় বেশি লাগায় ভাড়াও বেশি চাওয়া হচ্ছে।
মূলত সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ (বুধবার, ১০ জুলাই) থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
এদিকে, কোটা বহাল করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি হয়। এতে সরকারি চাকরিতে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল করে হাইকোর্টের দেয়া রায় চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা দিয়েছেন আপিল বিভাগ। চার সপ্তাহ পর পূর্ণাঙ্গ রায় দেয়া হবে।
তবে আপিল বিভাগের সিদ্ধান্তের পর শাহবাগে অবস্থান নেয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের কাছে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তারা জানান, আদালতের প্রতি সম্মান আছে। তবে কমিশন গঠন করে কোটা পদ্ধতির সংস্কার ও স্থায়ী সমাধান হওয়ার আগ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।