আপনার বাসার রান্নার কাজে কোন তেল ব্যবহার করবেন, সরিষা নাকি সয়াবিন? যাঁদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি, তাঁদের খাওয়াদাওয়ায় থাকে হাজার রকমের বিধি-নিষেধ। পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুয়ায়ী, তাঁদের ক্ষেত্রে স্নেহ পদার্থযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলাই দস্তুর। চিজ, মাখন, ঘি বাদ দিলেও রান্না থেকে তেল একেবারে বাদ দিয়ে দেওয়া সম্ভব হয় না। রোজ রোজ সেদ্ধ খাবার খেলে মুখে অরুচি আসে। ফলে কী তেল খাবেন, তা ভেবে পান না অনেকেই। রইল এমন কিছু তেলের সন্ধান, যা কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভোগা মানুষদের রসনাতৃপ্তিতে আসতে পারে কাজে।
১) অলিভ অয়েল: জলপাই থেকে নিষ্কাশিত এই তেল, বিশেষত এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভাল। প্রসঙ্গত, ভার্জিন অলিভ অয়েল নিষ্কাশনের সময় কোনও ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় না। এতে ফেনল জাতীয় যৌগের সংখ্যা প্রায় তিরিশটি। এই উপাদানটি একই সঙ্গে প্রদাহনাশক এবং সংবহনতন্ত্রের স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য বেশ উপকারী। চিকিৎসকদের মতে অন্যান্য তেলের তুলনায় এই তেলে মোনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকে, যা খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
২) সয়াবিন তেল: চিকিৎসকদের মতে, যাঁদের কোলেস্টেরল বেশি, তাঁরা সয়াবিন তেলেও রান্না করতে পারেন। মাছ ছাড়া সয়াবিন তেল কিন্তু ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ভাল উৎস। যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ ভাল। সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতি দিন দেড় চামচ সয়াবিন তেল শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় না, বরং তা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া, সয়াবিন তেলে থাকা ফাইটোস্টেরল এলডিএল কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে।
৩) তিসির তেল: গ্রাম বাংলায় এক সময় খুবই প্রচলিত ছিল এই তেল। কিন্তু শহুরে অঞ্চলে বিশেষ জনপ্রিয়তা নেই এই তেলের। অথচ খাদ্যগুণের দিক থেকে এই তেল কিন্তু অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভোগা রোগীদের জন্য ভাল বিকল্প হতে পারে। এটি আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিডের একটি ভাল উৎস। ক্যানসার প্রতিরোধ করতে ও আর্থ্রাইটিসের উপসর্গ কমাতেও এটি অত্যন্ত উপযোগী। তবে এই তেল গরম করলে নষ্ট হয়ে যায় এর খাদ্যগুণ। স্যালাড খেতে যাঁরা ভালবাসেন, তাঁদের জন্য খুব ভাল একটি বিকল্প হতে পারে এই তেল।
তবে মনে রাখবেন, প্রত্যেকের শরীর স্বতন্ত্র। কাজেই কোলেস্টেরলের সমস্যার গভীরতাও সকলের ক্ষেত্রে সমান নয়, ফলে নিজের জন্য তেল বেছে নিতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়াই বিচক্ষণতার পরিচয়।