আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির সরকার হটানোর আন্দোলন করছে। আমি পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই, আন্দোলনের নামে সহিংসতা হলে খবর আছে।
তিনি বলেন, আবারো খেলা হবে। দুর্নীতি বিরুদ্ধে। অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে খেলা হবে। সবাই প্রস্তুত। হাত তুলে বলেন। আজকে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শপথ। আমরা মাঠে আছি। বাংলাদেশের দুর্নীতিবাজদের মোকাবিলা করব। বিএনপি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোন কথা বলার সুযোগ থাকে না। বিএনপি মানেই দুর্নীতিগ্রস্ত। জাতীয়তাবাদী দুর্নীতিবাজ দল। তারেক রহমান দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। আপনাদের এক নম্বর নেতাই তো দুর্নীতিবাজ। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে লন্ডনে বসে আরাম আয়েশ করছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
শনিবার (২৯ জুন) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতাদের আন্দোলনে তত জোর নেই। মুখে যত জোর। তাদের আন্দোলন ভুয়া। এই আন্দোলন দুই ফুলের গান। এতে আওয়ামী লীগ সরকার একটুও বিচলিত নয়। বিএনপিতে এখন আতঙ্কের নাম তারেক রহমান। তারেক রহমান আতঙ্কের নাম। মধ্যরাতে টেমস নদীর পাড় থেকে ফরমান আসে। মধ্যরাতে ফরমান তারেক রহমান। এই ফরমানের ফখরুল সাহেব গয়েশ্বর সাহেব কোথায় যান কেউ জানে না। কর্মসূচির নাম মেড ইন লন্ডন। নতুন নেতৃত্ব পাঠান ফরমান আকারে। এই নতুন নেতৃত্বের নাম মেড ইন লন্ডন। লন্ডনে বসে কর্মসূচি দেয়। এই কর্মসূচি কেউ মানে? বাংলাদেশের জনগণ এই মেইড ইন লন্ডন কমিটি মানে না। খেলা কিন্তু হবে ছেড়ে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতা আসার পরের দিন ভারতের হাইকমিশন বন্ধ। কিন্তু ফুলের মালা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আপনারা দাসত্ব মেনে নিতে যে কোন অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকেন। আমাদের সবাই বন্ধু। আমাদের প্রভু কেউ নেই। আপনাদের প্রভু আছে। প্রভুরাম আপনাদের ক্ষমতায় বসাতে পারেনি। কথায় কথায় নিষেধাজ্ঞা। কোথায় কোথায় ভিসা নীতি। মিয়া আরিফিনকে বাইডেনের বন্ধু সাজিয়ে সামনে নিয়ে আসা। পরে দেখা গেল বাইডেনের বন্ধু ভুয়া। মিয়া আরেফিন পালিয়ে যেতে লাগলো। এয়ারপোর্টে পুলিশের ডান্ডা গায়ে লাগার পরে বরিশালের ভাষায় বাংলা বলা শুরু করছে। আপনি তো বাইরে। মিয়ান আরেফীনের মুক্তি চান না কেন। আপনাদের জন্যই তো তার আজকের জেল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে জীবনের জয় গান গাই। ধ্বংস স্তূপে দাঁড়িয়ে সৃষ্টির পতাকা উড়াই। আমাদের শিকড় মাটির অনেক গভীরে। আওয়ামী লীগ অস্ত্র উঠিয়ে শেষ রাতে ক্ষমতা দখরকারি দল নয়। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব। আমরা ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি আগে থেকেই বলেছি, আমরা প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সারা বছর কর্মসূচি পালন করব। এখানে কেন পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি বলা হলো। আগস্ট মাসের পরে জেলা পর্যায়ে সমাবেশ হবে। জেলা পর্যায়ের সমাবেশে আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ড. মোহাম্মদ আব্দর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, সদস্য মো. সাঈদ খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রুহুল, হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, দফতর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ প্রমুখ।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বাংলাদেশে থাকতে হলে বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার করতে হবে। কিছু হলেই বিএনপি শেখ হাসিনাকে মারতে চায়। তাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করেছে। ঘুমন্ত মানুষকে তারা হত্যা করেছে। মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগ যতদিন থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন থাকবেন এদেশের মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারবে। বিএনপির যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো।
ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপি শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। খালেদা জিয়ার মুক্তি আমরা দেবো না। আদালত মুক্তি দিলে আমাদের আপত্তি নেই। তবে আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না। বাংলাদেশ উন্নয়নের নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।
কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তি চায় না বলেই আদালতে যায় না। মুক্ত করতে চাইলে রাষ্ট্রপতির কাছে যেতে হবে। আন্দোলনের হুমকি দিয়ে কোনো লাভ নেই। আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করলে দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়া হবে। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি।
আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপি জামায়াতের দুর্নীতিবাজরা লন্ডনে বসে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন। চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের গ্ৰেফতার করতে হবে। তবেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রকান্তরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী দিনেও এক ও অভিন্ন ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিএনপি জামায়াত সাম্প্রদায়িক শক্তিকে বলতে চাই, আমরা রাজপথে আছি।
মাহবুব উল আলম বলেন, এই বাংলাদেশে যা কিছু অর্জন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। বাংলাদেশ নিয়ে এক সময় বিশ্ব হতাশা প্রকাশ করেছে। আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের পথ প্রদর্শক। আজকে বিএনপি কর্মসূচি দিয়েছে, তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য। বেগম খালেদা জিয়ার নামে মামলা হয়েছে, ১/১১ এর সময়। বরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বাসায় থাকার সুযোগ দিয়েছেন। এখানে আওয়ামী লীগ সরকারের দোষ কি? আপনারা আইনের লড়াইয়ে যেতে চান না। তারা আওয়ামী লীগের ঘাড়ে দায় চাপাতে চান।