ঢাকা ০৪:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সুন্দরবনে বিএনপি’র কমিটিতে আওয়ামী লীগের কর্মীদের নাম Logo বাংলাদেশে ঢুকে আম গাছ কাটল বিএসএফ, সীমান্তে উত্তেজনা Logo দেশের মানুষ চায় তরুণরা সংসদে প্রতিনিধিত্ব করুক: সারজিস Logo ইডেন কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo বিএনপির ভাবনায় শুধুই ভোট Logo ‘লাল সন্ত্রাস’চায় ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন নেতা, মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Logo শীত নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস Logo ইসরায়েলের পূর্ণ মন্ত্রিসভায় যুদ্ধবিরতি অনুমোদন, কার্যকরের দিন ঘোষণা Logo বিএনপির অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিলেন ছাত্রহত্যা আসামি শ্রমিকলীগ নেতা, খুঁজে পায় না পুলিশ Logo বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জামায়াতের লড়াই চালু থাকবে : জামায়াতের আমীর

সিলেটে বন্যা, জমে উঠেছে নৌকা ব্যবসা

সিলেটে নৌকার হাট

হাওর অঞ্চলের একটি প্রচলিত কথা হলো-‘বর্ষায় নাও, শুকনায় পাও’। অর্থাৎ বর্ষাকালে নৌকা ছাড়া গতি নেই। শুকনায় পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হয়। পথঘাট, সেতু হয়ে হাওর অঞ্চলের যোগাযোগের পুরনো ছবিটা অনেকটা পাল্টে গেলেও নৌকার ঐতিহ্য পাল্টায়নি। এখনো হাওরাঞ্চলে নৌকার কদর আগের মতই। এর মধ্যে বন্যা আতঙ্কে যাতায়াতের জন্য নৌকা ক্রয় করছেন জনসাধারন।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের হাওরে এখন চারদিকে থইথই পানি গত কয়েক দিনের পাহাড়ী ঢল ও অতি বৃষ্টিতে পানি বৃদ্ধিতে নৌকার কদর বাড়ছে । এ কারণে জমে উঠেছে জগন্নাথপুর উপজেলার শতবর্ষী নৌকার হাট। বৃহত্তর হাওর অঞ্চলের মতোই এ এলাকার বেশির ভাগ মানুষের জীবন-জীবিকার অপরিহার্য অনুষঙ্গ নৌকা বর্ষা মৌসম আসলে নৌকা নিয়ে মাছ ধরা ও যাতায়াতের জন্য এই পরিবহন ব্যবহার করেন। হাওর অঞ্চলের সুপরিচিত এ নৌকার হাটকে স্থানীয়রা নাও হাট বলে থাকে। বর্ষা কালে বিয়ে পার্বণেও প্রয়োজন হয় প্রচুর নৌকার। আর সে জন্য সবার গন্তব্য জগন্নাথপুরের নৌকার হাট। এরই অংশ হিসেবে রবিবার হাটে নৌকা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ব্যাপক সমাগম হয়। এতে হাট জমজমাট হয়ে উঠে। হাটে ছোট-বড় বিভিন্ন ধরণের নৌকা সারিবদ্ধভাবে বেঁধে রাখেন বিক্রেতারা। ক্রেতারা নৌকায় উঠে তা পছন্দ করেন। পছন্দ হলে দামদর শুরু হয়। পরে চলে বেচাকেনা। উপজেলার হাওর পাড়ের মানুষের নৌকাই একমাত্র ভরসা। বর্ষায় নৌকা ছাড়া তারা চলাচলসহ কোনো কাজ করতে পারেন না।

ইজারাদারের কথা অনুযায়ী, প্রতিবছর এই হাটে জগন্নাথপুর উপজেলা জগন্নাথপুর পৌর এলাকার সুইস গেট নামক স্থানে বসে নৌকার হাট। উপজেলার আশার কান্দি ইউনিয়ন, রানীগঞ্জ, চিলাউড়া ইউনিয়ন সহ দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসে নৌকা কিনতে। হাটে নৌকা আসে জগন্নাথপুর ও ছাতক উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে। সেখানকার কারিগররা এসব নৌকা তৈরি করেন। সবচেয়ে বেশি নৌকা সরবরাহ করেন গ্রামের কারিগররা। বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসে ‘কুশি’ নৌকা, ‘বারকী’ নৌকা। আকারভেদে মাছ ধরার ছোট নৌকা পাঁচ-সাত হাজার টাকা থেকে ২০ থেকে ৩০হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

স্থানীয়রা জানায়, বর্ষাকালে জগন্নাথপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় নৌকার হাট এটিই। নৌকার হাটটি শুরু হয় বাজারের বেশ পরে। এটি শখানেক বছর আগে গড়ে উঠেছিল বলে ধারণা করা হয়। বন্যা আতঙ্কে বেশি নৌকা বিক্রয় হচ্ছে।

আনুমানিক ১০০ বছর আগে সর্বপ্রথম জগন্নাথপুর নৌকার হাট বসে। সপ্তাহের প্রতি রবিবার ও বুধবার হাটের দিন বাজারে দু-তিন শর বেশি নৌকা বিক্রির জন্য ওঠে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কেনাবেচা চলে। নৌকা বিক্রতা কলিম উদ্দিন বলেন, জগন্নাথপুর ঐতিহ্যবাহী বাজার, আমি দীর্ঘদিন ধরে এই বাজারে নৌকা নিয়ে আসি। অনেক বৃষ্টির জন্য লোক জন কম। তা নাহলে বেচাবিক্রি খারাপ হয় না।

জনপ্রিয় সংবাদ

সুন্দরবনে বিএনপি’র কমিটিতে আওয়ামী লীগের কর্মীদের নাম

সিলেটে বন্যা, জমে উঠেছে নৌকা ব্যবসা

আপডেট সময় ০১:৩৬:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০২৪

হাওর অঞ্চলের একটি প্রচলিত কথা হলো-‘বর্ষায় নাও, শুকনায় পাও’। অর্থাৎ বর্ষাকালে নৌকা ছাড়া গতি নেই। শুকনায় পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হয়। পথঘাট, সেতু হয়ে হাওর অঞ্চলের যোগাযোগের পুরনো ছবিটা অনেকটা পাল্টে গেলেও নৌকার ঐতিহ্য পাল্টায়নি। এখনো হাওরাঞ্চলে নৌকার কদর আগের মতই। এর মধ্যে বন্যা আতঙ্কে যাতায়াতের জন্য নৌকা ক্রয় করছেন জনসাধারন।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের হাওরে এখন চারদিকে থইথই পানি গত কয়েক দিনের পাহাড়ী ঢল ও অতি বৃষ্টিতে পানি বৃদ্ধিতে নৌকার কদর বাড়ছে । এ কারণে জমে উঠেছে জগন্নাথপুর উপজেলার শতবর্ষী নৌকার হাট। বৃহত্তর হাওর অঞ্চলের মতোই এ এলাকার বেশির ভাগ মানুষের জীবন-জীবিকার অপরিহার্য অনুষঙ্গ নৌকা বর্ষা মৌসম আসলে নৌকা নিয়ে মাছ ধরা ও যাতায়াতের জন্য এই পরিবহন ব্যবহার করেন। হাওর অঞ্চলের সুপরিচিত এ নৌকার হাটকে স্থানীয়রা নাও হাট বলে থাকে। বর্ষা কালে বিয়ে পার্বণেও প্রয়োজন হয় প্রচুর নৌকার। আর সে জন্য সবার গন্তব্য জগন্নাথপুরের নৌকার হাট। এরই অংশ হিসেবে রবিবার হাটে নৌকা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ব্যাপক সমাগম হয়। এতে হাট জমজমাট হয়ে উঠে। হাটে ছোট-বড় বিভিন্ন ধরণের নৌকা সারিবদ্ধভাবে বেঁধে রাখেন বিক্রেতারা। ক্রেতারা নৌকায় উঠে তা পছন্দ করেন। পছন্দ হলে দামদর শুরু হয়। পরে চলে বেচাকেনা। উপজেলার হাওর পাড়ের মানুষের নৌকাই একমাত্র ভরসা। বর্ষায় নৌকা ছাড়া তারা চলাচলসহ কোনো কাজ করতে পারেন না।

ইজারাদারের কথা অনুযায়ী, প্রতিবছর এই হাটে জগন্নাথপুর উপজেলা জগন্নাথপুর পৌর এলাকার সুইস গেট নামক স্থানে বসে নৌকার হাট। উপজেলার আশার কান্দি ইউনিয়ন, রানীগঞ্জ, চিলাউড়া ইউনিয়ন সহ দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসে নৌকা কিনতে। হাটে নৌকা আসে জগন্নাথপুর ও ছাতক উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে। সেখানকার কারিগররা এসব নৌকা তৈরি করেন। সবচেয়ে বেশি নৌকা সরবরাহ করেন গ্রামের কারিগররা। বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসে ‘কুশি’ নৌকা, ‘বারকী’ নৌকা। আকারভেদে মাছ ধরার ছোট নৌকা পাঁচ-সাত হাজার টাকা থেকে ২০ থেকে ৩০হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

স্থানীয়রা জানায়, বর্ষাকালে জগন্নাথপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় নৌকার হাট এটিই। নৌকার হাটটি শুরু হয় বাজারের বেশ পরে। এটি শখানেক বছর আগে গড়ে উঠেছিল বলে ধারণা করা হয়। বন্যা আতঙ্কে বেশি নৌকা বিক্রয় হচ্ছে।

আনুমানিক ১০০ বছর আগে সর্বপ্রথম জগন্নাথপুর নৌকার হাট বসে। সপ্তাহের প্রতি রবিবার ও বুধবার হাটের দিন বাজারে দু-তিন শর বেশি নৌকা বিক্রির জন্য ওঠে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কেনাবেচা চলে। নৌকা বিক্রতা কলিম উদ্দিন বলেন, জগন্নাথপুর ঐতিহ্যবাহী বাজার, আমি দীর্ঘদিন ধরে এই বাজারে নৌকা নিয়ে আসি। অনেক বৃষ্টির জন্য লোক জন কম। তা নাহলে বেচাবিক্রি খারাপ হয় না।