ঢাকা ০১:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ারে যা যা করতে পারবে সেনাবাহিনী মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রে কোটি কোটি টাকার জিনিস লোপাট টানা তৃতীয় বার বিশ্বসেরা ২% বিজ্ঞানীর তালিকায় পাবিপ্রবি শিক্ষক ড.নুর-আলম টাঙ্গাইলে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় স্ত্রী নিহত, স্বামী হাসপাতালে বঙ্গোপসাগরে আবার লঘুচাপের আশঙ্কা,বাড়তে পারে বৃষ্টি সেনা কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি গাজায় ইসরায়েলি নৃশংস হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত আরও ২৬ ম্যানচেস্টার সিটি, পিএসজি,শ্রীলঙ্কা–নিউজিল্যান্ড টেস্ট সহ টিভিতে যা দেখবেন ক্রোয়েশিয়াকে বিশাল ব্যবধানে হারালো ব্রাজিল পণ্য রপ্তানির আড়ালে বেক্সিমকোর অর্থ পাচার

বৃক্ষপ্রেমী অধ্যাপক যখন বৃক্ষনিধনের হোতা

এক সময়ের বৃক্ষপ্রেমী অধ্যাপক এখন দুইশত বৃক্ষনিধনের হোতা। ছবিঃ সংগৃহীত

এক সময়ের পরিবেশ সংরক্ষণ আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান করা ব্যক্তি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক এখন বৃক্ষনিধনকারী! রবিবার (২ জুন) পরিবেশ সংরক্ষণ আন্দোলনের এই আন্দোলনকারী নিজেই নেতৃত্ব দিলেন দুইশত গাছ কাটতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন রেজিস্ট্রারের পাশে চলছে এই গাছ নিধনের কর্মযজ্ঞ। সেখানে নির্মাণ হবে কলা ও মানবীকি অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন।

গাছ কাটার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বাসভবন অবরোধ করলে শিক্ষার্থীদের এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘তোমাদের এই গাছের প্রেম শুরু হইছে গত ৫-৭ বছর থেকে, এর আগে এগুলো ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মাস্টারপ্ল্যান প্রয়োজন নাই, এটা তোমাদের প্রয়োজন। আমার ফ্যাকাল্টির শিক্ষকরা যদি রাজি থাকেন, তোমাদের আ্যপ্রোভাল লাগবে না।’ অধ্যাপক মোজাম্মেল হকের এমন দ্বিচারী আচরনে বিস্মিত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিবেচনা ছাড়া নিজের অনুষদের সুবিধার্থে মাস্টারপ্ল্যান লাগবে না বলে দিলেন, কিন্তু তিনি নিজেইতো একসময় মাস্টারপ্লানের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলন করেছিলেন। এখন কাউকে তোয়াক্কা না করে গাছকাটায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিষয়টি ক্যাম্পাসের প্রাণ-প্রকৃতি ও শিক্ষা পরিবেশ সম্পর্কে তাঁর উদাসীনতাকেই সামনে আনে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন গণমাধ্যমকে বলেন,গাছকাটা হতে পারে কিন্তু পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সঠিক মূল্যায়ন করা হয়নি। ভবনটি হচ্ছে লেকের পাড়ে সে ক্ষেত্রে বর্জ ব্যবস্থাপনা, লেকের পানি দূষণসহ নানা বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলেছি, দাবি তুলেছি। ডিন মোজাম্মেল হক আমাদের মাস্টারপ্ল্যান লাগবে না বলে যে মন্তব্য করেছেন সেটা আসলে বিবেচনা প্রসূত কথা নয়। কারণ মাস্টারপ্লান না থাকলে আমাদের জীবনযাত্রা এবং শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে। অপরিকল্পিতভাবে যে হারে গাছ কাটা হয়েছে একজন মাস্টারপ্ল্যানার কখনো তা করেতেন না।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে গ্রীষ্মকালীন ও ঈদের ছুটি। বন্ধ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে গাছ কাটার মহোৎসবে মেতেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল সকাল ৮ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা এক্সটেনশন ও নতুন প্রশাসনিক ভবনের পাশে কাটা হয় প্রায় দুই শতাধিক গাছ।

অপরদিকে শিক্ষকরা সর্বসম্মতিক্রমে কলা অনুষদের পাশেই ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিলেও তাদের মতামতকে অগ্রাহ্য করে নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের পাশে ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় দুই শতাধিক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। কেটে ফেলা গাছগুলোর ঠিক পাশেই অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের ’মেইন বার্ডস’ খ্যাত লেক।

বৃক্ষপ্রেমী অধ্যাপক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে(জাবি) ২০১০ সালের ১২ ই জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কদ্বীপের ৫৬টি গাছ কাটা হয়। এর প্রতিবাদে ১৮টি গাছের পাশে খুঁটি পুতে তাতে সাদা কাপড় পেঁচিয়ে উপরের অংশে কালো কাপড় বেঁধে প্রতীকীভাবে গাছের মৃত্যুকে তুলে ধরেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। সেদিন পরিবেশ সংরক্ষণ আন্দোলন-এর ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালেয়ের নতুন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, এখন দুইশত বৃক্ষনিধনের হোতা।

 

ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ারে যা যা করতে পারবে সেনাবাহিনী

বৃক্ষপ্রেমী অধ্যাপক যখন বৃক্ষনিধনের হোতা

আপডেট সময় ০২:৪৬:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুন ২০২৪

এক সময়ের পরিবেশ সংরক্ষণ আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান করা ব্যক্তি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক এখন বৃক্ষনিধনকারী! রবিবার (২ জুন) পরিবেশ সংরক্ষণ আন্দোলনের এই আন্দোলনকারী নিজেই নেতৃত্ব দিলেন দুইশত গাছ কাটতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন রেজিস্ট্রারের পাশে চলছে এই গাছ নিধনের কর্মযজ্ঞ। সেখানে নির্মাণ হবে কলা ও মানবীকি অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন।

গাছ কাটার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বাসভবন অবরোধ করলে শিক্ষার্থীদের এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘তোমাদের এই গাছের প্রেম শুরু হইছে গত ৫-৭ বছর থেকে, এর আগে এগুলো ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মাস্টারপ্ল্যান প্রয়োজন নাই, এটা তোমাদের প্রয়োজন। আমার ফ্যাকাল্টির শিক্ষকরা যদি রাজি থাকেন, তোমাদের আ্যপ্রোভাল লাগবে না।’ অধ্যাপক মোজাম্মেল হকের এমন দ্বিচারী আচরনে বিস্মিত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিবেচনা ছাড়া নিজের অনুষদের সুবিধার্থে মাস্টারপ্ল্যান লাগবে না বলে দিলেন, কিন্তু তিনি নিজেইতো একসময় মাস্টারপ্লানের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলন করেছিলেন। এখন কাউকে তোয়াক্কা না করে গাছকাটায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিষয়টি ক্যাম্পাসের প্রাণ-প্রকৃতি ও শিক্ষা পরিবেশ সম্পর্কে তাঁর উদাসীনতাকেই সামনে আনে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন গণমাধ্যমকে বলেন,গাছকাটা হতে পারে কিন্তু পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সঠিক মূল্যায়ন করা হয়নি। ভবনটি হচ্ছে লেকের পাড়ে সে ক্ষেত্রে বর্জ ব্যবস্থাপনা, লেকের পানি দূষণসহ নানা বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলেছি, দাবি তুলেছি। ডিন মোজাম্মেল হক আমাদের মাস্টারপ্ল্যান লাগবে না বলে যে মন্তব্য করেছেন সেটা আসলে বিবেচনা প্রসূত কথা নয়। কারণ মাস্টারপ্লান না থাকলে আমাদের জীবনযাত্রা এবং শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে। অপরিকল্পিতভাবে যে হারে গাছ কাটা হয়েছে একজন মাস্টারপ্ল্যানার কখনো তা করেতেন না।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে গ্রীষ্মকালীন ও ঈদের ছুটি। বন্ধ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে গাছ কাটার মহোৎসবে মেতেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল সকাল ৮ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা এক্সটেনশন ও নতুন প্রশাসনিক ভবনের পাশে কাটা হয় প্রায় দুই শতাধিক গাছ।

অপরদিকে শিক্ষকরা সর্বসম্মতিক্রমে কলা অনুষদের পাশেই ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিলেও তাদের মতামতকে অগ্রাহ্য করে নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের পাশে ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় দুই শতাধিক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। কেটে ফেলা গাছগুলোর ঠিক পাশেই অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের ’মেইন বার্ডস’ খ্যাত লেক।

বৃক্ষপ্রেমী অধ্যাপক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে(জাবি) ২০১০ সালের ১২ ই জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কদ্বীপের ৫৬টি গাছ কাটা হয়। এর প্রতিবাদে ১৮টি গাছের পাশে খুঁটি পুতে তাতে সাদা কাপড় পেঁচিয়ে উপরের অংশে কালো কাপড় বেঁধে প্রতীকীভাবে গাছের মৃত্যুকে তুলে ধরেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। সেদিন পরিবেশ সংরক্ষণ আন্দোলন-এর ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালেয়ের নতুন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, এখন দুইশত বৃক্ষনিধনের হোতা।