যশোরের অভয়নগরে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় আফরোজা বেগম (৪০) নামের এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে পুলিশ। সোমবার (৩ জুন) পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) নূরে আলম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে এ কমিটি করা হয়। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অভয়নগর সার্কেল) জাহিদুল ইসলাম ও কোর্ট ইন্সপেক্টর রোকসানা খাতুন।
তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে, সে কারণে পুলিশ সুপারের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই নারীর মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের কোনো গাফিলতি ছিল কি না তা এই কমিটি তদন্ত করে দেখবে। পুলিশের কোনো সদস্যের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শনিবার (১ জুন) দিনগত গভীর রাতে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া নর্থবেঙ্গল রোড এলাকার জলিল মোল্যার স্ত্রী আফরোজা বেগমকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, মাদকসহ তাকে আটক করা হয়। পরদিন সকালে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান আফরোজা বেগম। স্বজনদের দাবি, পুলিশের নির্যাতনে আফরোজা বেগমের মৃত্যু হয়েছে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ময়নাতদন্ত বোর্ডের কর্মকর্তা আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আব্দুস সামাদ বলেন, মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য এসব আলামত ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেলেই তা সিভিল সার্জনের মাধ্যমে পুলিশ সুপারের কাছে দেওয়া হবে।
এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে রোববার রাতেই স্বজনদের কাছে আফরোজা বেগমের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। অভয়নগরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে মরদেহের দাফন সম্পন্ন হয়। সোমবার সকালে নওয়াপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই তালাবদ্ধ আফরোজা বেগমের বাড়ি। তবে আফরোজা ও পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি প্রতিবেশীরা।