ঢাকা ০১:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেনজীরের সহযোগীদের তালিকা করছে দুদক

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদকে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহায়তাকারী পুলিশ কর্মকর্তা, ভূমি কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদসহ অন্যান্যদের তালিকা করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তালিকা তৈরির পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হবে।

সাবেক আইজিপি বেনজীরের দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান পরিচালনাকারী দুদক তদন্ত দলের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ৬ জুন বেনজীরকে এবং ৯ জুন তার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলবও করেছে দুদক।

ঢাকা, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও গাজীপুরের ভূমি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রারদের নাম তালিকায় আসতে পারে যেহেতু ওইসব এলাকায় বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের স্থাবর সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে।

পত্রিকায় বেনজীরের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর গত ১৮ এপ্রিল দুদক তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে অনুসন্ধান শুরু করে।

দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘‘বেনজীরের দুর্নীতিতে অনেকে সহযোগিতা করেছেন। কারণ একা এতটা করা সম্ভব ছিল না। তার বেশিরভাগ সহযোগীই পুলিশ সদস্য।”

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘গাজীপুরের ভাওয়াল রিসোর্টের মতো কিছু সম্পত্তিতে বেনজীরের সঙ্গে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার অংশিদারত্বও আছে।’

বেনজীর যখন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার, র‌্যাবের মহাপরিচালক এবং আইজিপি ছিলেন তখন এই পুলিশ কর্মকর্তারা সুবিধা নিয়েছেন।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দ এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দুদকের তদন্ত দলের অনুসন্ধান সূত্রে জানা গেছে, বেনজীর বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে বেশ কিছু জমি কিনেছেন।

বেনজীরকে এসব জমি পেতে সহায়তাকারী সাব-রেজিস্ট্রারদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে।

দুদক সন্দেহ করছে, কিছু ব্যাংক কর্মকর্তা বেনজীরকে ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা তুলে ফেলতে সহায়তা করেছেন।

বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়ে গত ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) চিঠি দেয় দুদক। ২০ মে চিঠির জবাব পায় দুদক।

তার ৩ দিন পর অ্যাকাউন্টগুলো ‘ফ্রিজ’ করা হয়, কিন্তু এর মধ্যেই বেনজীর টাকা তুলে নেন বলে জানা গেছে।

ব্যাংকগুলো এইসব নগদ লেনদেনের প্রতিবেদন এবং সন্দেহজনক অন্যান্য লেনদেনের প্রতিবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়েছে কি না, তাও তদন্ত করবে দুদক।

১০ লাখ বা তার বেশি টাকা নগদ লেনদেনের বিষয়ে ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বিএফআইইউকে রিপোর্ট করতে হয়। লেনদেনে যদি কোথাও সমস্যা মনে হয়, সেক্ষেত্রে সন্দেহজনক লেনদেন হিসেবে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।

ট্যাগস :

বেনজীরের সহযোগীদের তালিকা করছে দুদক

আপডেট সময় ০৩:২৯:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০২৪

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদকে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহায়তাকারী পুলিশ কর্মকর্তা, ভূমি কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদসহ অন্যান্যদের তালিকা করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তালিকা তৈরির পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হবে।

সাবেক আইজিপি বেনজীরের দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান পরিচালনাকারী দুদক তদন্ত দলের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ৬ জুন বেনজীরকে এবং ৯ জুন তার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলবও করেছে দুদক।

ঢাকা, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও গাজীপুরের ভূমি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রারদের নাম তালিকায় আসতে পারে যেহেতু ওইসব এলাকায় বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের স্থাবর সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে।

পত্রিকায় বেনজীরের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর গত ১৮ এপ্রিল দুদক তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে অনুসন্ধান শুরু করে।

দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘‘বেনজীরের দুর্নীতিতে অনেকে সহযোগিতা করেছেন। কারণ একা এতটা করা সম্ভব ছিল না। তার বেশিরভাগ সহযোগীই পুলিশ সদস্য।”

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘গাজীপুরের ভাওয়াল রিসোর্টের মতো কিছু সম্পত্তিতে বেনজীরের সঙ্গে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার অংশিদারত্বও আছে।’

বেনজীর যখন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার, র‌্যাবের মহাপরিচালক এবং আইজিপি ছিলেন তখন এই পুলিশ কর্মকর্তারা সুবিধা নিয়েছেন।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দ এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দুদকের তদন্ত দলের অনুসন্ধান সূত্রে জানা গেছে, বেনজীর বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে বেশ কিছু জমি কিনেছেন।

বেনজীরকে এসব জমি পেতে সহায়তাকারী সাব-রেজিস্ট্রারদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে।

দুদক সন্দেহ করছে, কিছু ব্যাংক কর্মকর্তা বেনজীরকে ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা তুলে ফেলতে সহায়তা করেছেন।

বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়ে গত ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) চিঠি দেয় দুদক। ২০ মে চিঠির জবাব পায় দুদক।

তার ৩ দিন পর অ্যাকাউন্টগুলো ‘ফ্রিজ’ করা হয়, কিন্তু এর মধ্যেই বেনজীর টাকা তুলে নেন বলে জানা গেছে।

ব্যাংকগুলো এইসব নগদ লেনদেনের প্রতিবেদন এবং সন্দেহজনক অন্যান্য লেনদেনের প্রতিবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়েছে কি না, তাও তদন্ত করবে দুদক।

১০ লাখ বা তার বেশি টাকা নগদ লেনদেনের বিষয়ে ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বিএফআইইউকে রিপোর্ট করতে হয়। লেনদেনে যদি কোথাও সমস্যা মনে হয়, সেক্ষেত্রে সন্দেহজনক লেনদেন হিসেবে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।