নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, কোনো শিক্ষার্থী যদি দশম শ্রেণিতে ৭০ শতাংশ কর্মদিবসে উপস্থিত না থাকে, তাহলে সে পাবলিক মূল্যায়ন বা এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারবে না। আর কোনো শিক্ষার্থী যদি এসএসসি পরীক্ষায় এক বা দুই বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হয়, তাহলে শর্ত সাপেক্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পাবে। তবে তাকে পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ বিষয়ে পাস করতে হবে। আর তিন বা তার বেশি বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হলে একাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়া যাবে না।
বর্তমানে মূলত দশম শ্রেণিতে নির্বাচনী পরীক্ষায় (টেস্ট) উত্তীর্ণ হলে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ হয়। কিন্তু নতুন শিক্ষাক্রমে নির্বাচনী পরীক্ষা হবে না। যেসব শিক্ষার্থী নবম শ্রেণি শেষ করে দশম শ্রেণিতে উঠবে, তারাই এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবে।
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার মূল্যায়ন কাঠামোর সর্বশেষ শেষ প্রস্তাবে এমন তথ্য রয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এনসিটিবি বলছে, তাঁরা আশা করছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সভায় মূল্যায়নের বিষয়টি তাড়াতাড়ি অনুমোদন হবে।
বর্তমানে যেসব শিক্ষার্থী নবম শ্রেণিতে পড়ছে, তারাই প্রথমবারের মতো নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষা দেবে। নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষা ২০২৬ সালে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। তবে এর পরের বছর থেকে সামষ্টিক মূল্যায়নের (বার্ষিক পরীক্ষা) মতো ডিসেম্বরেই এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া যায় কি না, সে রকম ভাবনাও চলছে। নতুন শিক্ষাক্রমে এখনকার মতো পরীক্ষা হবে না। এসএসসি পরীক্ষার ফলও জিপিএর (গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ) ভিত্তিতে হবে না। নির্ধারিত পারদর্শিতা (নৈপুণ্য) অনুযায়ী সাতটি স্কেল বা স্তরে ফল বা রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করা হবে। এই সাত স্তরের হবে অনন্য, অর্জনমুখী, অগ্রগামী, সক্রিয়, অনুসন্ধানী, বিকাশমান ও প্রারম্ভিক। শিক্ষার্থীর পারদর্শিতা বা নৈপুণ্য (পারফরম্যান্স) অনুযায়ী এ স্তরগুলো নির্ধারণ হবে। যেমন সর্বোচ্চ স্কেল ‘অনন্য’ বলতে বোঝানো হবে শিক্ষার্থী সব বিষয়ে পারদর্শিতার চূড়ান্ত স্তর অর্জন করেছে। রিপোর্ট কার্ডে শিখনকালীন মূল্যায়ন ও পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়নের ফলাফল আলাদাভাবে সাতটি স্তরে হবে। সাতটি স্তরের জন্য থাকবে সাতটি ছক।
এনসিটিবি সূত্র জানিয়েছে, মূল্যায়নের সর্বশেষ প্রস্তাব হলো কোনো শিক্ষার্থী যদি দশম শ্রেণিতে ৭০ শতাংশ কর্মদিবসে উপস্থিত না থাকে, তাহলে সে পাবলিক পরীক্ষা বা মূল্যায়নের জন্য বিবেচিত হবে না। তবে জরুরি বা বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে উপস্থিত হার ৭০ শতাংশের কম হলেও সব বিষয় শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সম্মিলিত আলোচনার মাধ্যমে কোনো শিক্ষার্থীকে পাবলিক মূল্যায়নে অংশগ্রহণের জন্য বিবেচনা করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে তার জন্য যথেষ্ট যৌক্তিক কারণ এবং তার স্বপক্ষে যথাযথ প্রমাণ থাকতে হবে।