ঢাকা ০৯:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo জামায়াতের অনুষ্ঠানে গিয়ে ‘সৎ-যোগ্য’ লোককে ভোট দিতে বললেন ডিএমপি কর্মকর্তা Logo পাবনায় জামায়াত মনোনীত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা সমাবেশ অনুষ্ঠিত Logo কোন অদৃশ্য শক্তির কারণে জুলাই ঘোষণাপত্র হচ্ছে না?-প্রশ্ন ছাত্রশিবির সভাপতির Logo এখন থেকে পাগলা মসজিদে দান করা যাবে অনলাইনে Logo ছাত্রদল নেতার নির্দেশ: ফেক আইডি খুলে দৈনিক ১০টি করে পোস্ট দিতে হবে Logo সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দাবি Logo নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংস্কার প্রয়োজন: জামায়াত আমির Logo লক্ষ্মীপুরে রোগীকে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে ডা.শিপলু সরকারের বিরুদ্ধে Logo ঠাকুরগাঁওয়ে এনসিপির গাড়ি বহরে হামলা Logo তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিলো রাশিয়া

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিল ইউরোপের তিন দেশ

ইউরোপের তিন দেশ স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে। এই ঘটনায় আগেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইসরায়েল।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং ইইউর সদস্য মাল্টা ও স্লোভেনিয়াও ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। ইতিমধ্যে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যদেশের মধ্যে প্রায় ১৪৪টি দেশই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে।

মাদ্রিদ, ডাবলিন ও অসলো বলেছে, ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে গতিশীল করার ক্ষেত্রে তাদের এ সিদ্ধান্ত ভূমিকা রাখবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও এর ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশগুলো স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনকে ওই তিন দেশের স্বীকৃতি অনেকটা প্রতীকী হিসেবে রয়ে যাবে। তবু তাদের আশা, এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশকে অনুরূপ পদক্ষেপ নিতে অনুপ্রাণিত করবে।

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বৃহত্তম ও রাজনৈতিকভাবে সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ স্পেন ও আয়ারল্যান্ড। ২৭ জাতির ইইউর সদস্য সুইডেন, সাইপ্রাস, হাঙ্গেরি, চেক প্রজাতন্ত্র, পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া, রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া এরই মধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং ইইউর সদস্য মাল্টা ও স্লোভেনিয়াও ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে।

ফ্রান্স বলেছে, ফিলিস্তিনকে এখনো স্বীকৃতিদানের সময় আসেনি। আর ইসরায়েলের কট্টর সমর্থক যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের সঙ্গে সুর মিলিয়েছে জার্মানি। দেশ দুটি এমন ‘একতরফা’ পদক্ষেপ নাকচ করে বলেছে, মধ্যপ্রাচ্য সংকটে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন এই দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান অবশ্যই সংলাপের মাধ্যমে হতে হবে।

২২ মে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেন, ‘আমরা আশা করি, আমাদের স্বীকৃতি ও যৌক্তিক আচরণ পশ্চিমা দেশগুলোকে একই সিদ্ধান্ত (ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি) নিতে ভূমিকা রাখবে। কেননা, আমাদের দল যত ভারী হবে, যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় আমরা তত প্রভাব খাটাতে সক্ষম হব।’

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০০ এ বেশি মানুষকে হত্যা করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের যোদ্ধারা। সে সময় ইসরায়েল থেকে ২৪০ জনের মতো ব্যক্তিকে ধরে এনে জিম্মি করে হামাস। ওই দিন থেকেই গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলে। তাদের হামলায় এ পর্যন্ত ৩৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

এই প্রেক্ষাপটে ১৯৬৭ সালের আগের সীমানাকে বহাল রেখে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিল স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে। আর জেরুজালেমকে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন উভয়ের রাজধানী হিসেবে মানবে দেশ তিনটি। এ পদক্ষেপে ফিলিস্তিন নিয়ে কূটনৈতিক প্রটোকলেও পরিবর্তন আসবে। পশ্চিম তীরে দেশ তিনটির প্রতিনিধিদের কার্যালয় উন্নীত হবে পূর্ণ দূতাবাসে।

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানে ওই তিন দেশের সিদ্ধান্তের ঘোষণায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটি মাদ্রিদ, অসলো ও ডাবলিন থেকে তার রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করেছে। পাশাপাশি তলব করছে দেশ তিনটির রাষ্ট্রদূতদের।

পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের কনস্যুলার সেবা দেওয়া থেকে স্পেনকে বিরত রাখার পদক্ষেপও নিয়েছে তেল আবিব। জবাবে স্পেনও ইসরায়েলের প্রতি সমালোচনা জোরদার করেছে। দেশটি বলেছে, গাজায় সত্যিকারের জাতিগত হত্যা চলছে।

স্পেন গতকাল সোমবার বলেছে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) গাজার রাফা শহরে ইসরায়েলকে অভিযান বন্ধে যে নির্দেশ দিয়েছেন, সেটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন জানাতে ইইউর সদস্যদেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাবে তারা।

যুক্তরাষ্ট্র ও এর ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশগুলো স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনকে এ তিন দেশের স্বীকৃতি অনেকটা প্রতীকী হিসেবে রয়ে যাবে। তবু তাদের আশা, এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশকে অনুরূপ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

জামায়াতের অনুষ্ঠানে গিয়ে ‘সৎ-যোগ্য’ লোককে ভোট দিতে বললেন ডিএমপি কর্মকর্তা

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিল ইউরোপের তিন দেশ

আপডেট সময় ০৬:৩১:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪

ইউরোপের তিন দেশ স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে। এই ঘটনায় আগেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইসরায়েল।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং ইইউর সদস্য মাল্টা ও স্লোভেনিয়াও ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। ইতিমধ্যে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যদেশের মধ্যে প্রায় ১৪৪টি দেশই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে।

মাদ্রিদ, ডাবলিন ও অসলো বলেছে, ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে গতিশীল করার ক্ষেত্রে তাদের এ সিদ্ধান্ত ভূমিকা রাখবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও এর ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশগুলো স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনকে ওই তিন দেশের স্বীকৃতি অনেকটা প্রতীকী হিসেবে রয়ে যাবে। তবু তাদের আশা, এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশকে অনুরূপ পদক্ষেপ নিতে অনুপ্রাণিত করবে।

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বৃহত্তম ও রাজনৈতিকভাবে সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ স্পেন ও আয়ারল্যান্ড। ২৭ জাতির ইইউর সদস্য সুইডেন, সাইপ্রাস, হাঙ্গেরি, চেক প্রজাতন্ত্র, পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া, রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া এরই মধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং ইইউর সদস্য মাল্টা ও স্লোভেনিয়াও ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে।

ফ্রান্স বলেছে, ফিলিস্তিনকে এখনো স্বীকৃতিদানের সময় আসেনি। আর ইসরায়েলের কট্টর সমর্থক যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের সঙ্গে সুর মিলিয়েছে জার্মানি। দেশ দুটি এমন ‘একতরফা’ পদক্ষেপ নাকচ করে বলেছে, মধ্যপ্রাচ্য সংকটে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন এই দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান অবশ্যই সংলাপের মাধ্যমে হতে হবে।

২২ মে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেন, ‘আমরা আশা করি, আমাদের স্বীকৃতি ও যৌক্তিক আচরণ পশ্চিমা দেশগুলোকে একই সিদ্ধান্ত (ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি) নিতে ভূমিকা রাখবে। কেননা, আমাদের দল যত ভারী হবে, যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় আমরা তত প্রভাব খাটাতে সক্ষম হব।’

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০০ এ বেশি মানুষকে হত্যা করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের যোদ্ধারা। সে সময় ইসরায়েল থেকে ২৪০ জনের মতো ব্যক্তিকে ধরে এনে জিম্মি করে হামাস। ওই দিন থেকেই গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলে। তাদের হামলায় এ পর্যন্ত ৩৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

এই প্রেক্ষাপটে ১৯৬৭ সালের আগের সীমানাকে বহাল রেখে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিল স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে। আর জেরুজালেমকে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন উভয়ের রাজধানী হিসেবে মানবে দেশ তিনটি। এ পদক্ষেপে ফিলিস্তিন নিয়ে কূটনৈতিক প্রটোকলেও পরিবর্তন আসবে। পশ্চিম তীরে দেশ তিনটির প্রতিনিধিদের কার্যালয় উন্নীত হবে পূর্ণ দূতাবাসে।

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানে ওই তিন দেশের সিদ্ধান্তের ঘোষণায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটি মাদ্রিদ, অসলো ও ডাবলিন থেকে তার রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করেছে। পাশাপাশি তলব করছে দেশ তিনটির রাষ্ট্রদূতদের।

পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের কনস্যুলার সেবা দেওয়া থেকে স্পেনকে বিরত রাখার পদক্ষেপও নিয়েছে তেল আবিব। জবাবে স্পেনও ইসরায়েলের প্রতি সমালোচনা জোরদার করেছে। দেশটি বলেছে, গাজায় সত্যিকারের জাতিগত হত্যা চলছে।

স্পেন গতকাল সোমবার বলেছে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) গাজার রাফা শহরে ইসরায়েলকে অভিযান বন্ধে যে নির্দেশ দিয়েছেন, সেটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন জানাতে ইইউর সদস্যদেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাবে তারা।

যুক্তরাষ্ট্র ও এর ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশগুলো স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনকে এ তিন দেশের স্বীকৃতি অনেকটা প্রতীকী হিসেবে রয়ে যাবে। তবু তাদের আশা, এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশকে অনুরূপ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করবে।