ঢাকা ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এমপি আনারকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

এক সপ্তাহ আগে নিখোঁজ হওয়া বাংলাদেশের ঝিনাইদহের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বুধবার (২২মে) দুপুরে ধানমণ্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, “পরিকল্পিতভাবেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। তিনজনকে বাংলাদেশ পুলিশ আটক করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে”।

“তদন্ত চলছে, যারা যারা এ খুনের সাথে জড়িত সবার বিষয়ে জানতে পারবো। ভারতের পুলিশও সহযোগিতা করছে। আমাদের পুলিশ অত্যন্ত দক্ষ। তদন্ত শেষ হলে এ খুনের মোটিভ কি সবকিছু বিস্তারিত দিতে পারবো আমরা”।

এর আগে কলকাতা বিধান নগর পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার মানব শ্রিংলা বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, “ জিজ্ঞাসাবাদে ক্যাবচালক জানিয়েছে ১৩ই মে যে ব্যক্তিকে সে গাড়িতে তুলেছিল তাকে হত্যার পর টুকরা টুকরা করে লাশ ছড়িয়ে দিয়েছে”।

তবে তাকে হত্যা করা হয়েছে কিনা, অথবা মরদেহ পাওয়া গেছে কিনা, সেই বিষয়ে কলকাতার পুলিশ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন।েএটা মার্ডার, খুন হয়েছে। এর নেপথ্যের বিষয় আপনাদের জানাবো।”

এ ঘটনায় ভারতের সাথে সম্পর্কে প্রভাব পড়বে কিনা এমন প্রশ্নে মি. খান বলেন, “এখানে সম্পর্কে ফাটল ধরবে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত যে ইনফরমেশন তাতে বাংলাদেশের মানুষই তাকে হত্যা করেছে। ভারতের কেউ হত্যা করেনি”।

“যাদের আটক করা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের পর খুনের নেপথ্য কারণ জানা যাবে। তদন্তের স্বার্থে অনেক কিছুই জানাচ্ছি না। সব উদ্ধার করবো আমরা” বলেন মি. খান।

পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অ্যান্টি টেররিস্ট ইউনিটের কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, তদন্তে নেমে তারা প্রথমে এমপি আনোয়ারুল আজিমকে বহনকারী ক্যাবচালককে আটক করেন।

সেই ক্যাবচালক তাদের জানিয়েছেন, মি. আজিমকে তার গাড়িতে তোলার পর আরও তিনজন গাড়িতে ওঠেন। তাদের মধ্যে দুইজন পুরুষ ও একজন নারী। পরে এই চারজন কলকাতা নিউটাউনের ওই বাড়িতে যান।

সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এটিএফ ওই চারজনকে বাড়িতে প্রবেশ করতে দেখতে পেয়েছে। পরে তিনজন বাড়িতে আসলেও তাদের মধ্যে এমপি আজিমকে আর দেখা যায়নি।

এটিএফ কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, এদের মধ্যে পুরুষ দুইজন বাংলাদেশে ফিরে যান। বাংলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগকে জানানো হলে তারা দুই জনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাদের দেয়া তথ্য কলকাতার পুলিশকে জানানো হয়। এরপরেই এমপি আনোয়ারুল আজিমের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিশ।

নিউটাউনের ফ্ল্যাটের ভেতর রক্তের দাগ রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। যদিও বুধবার দুপুর পর্যন্ত তার মরদেহ পাওয়া যায়নি।

পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যে ফ্ল্যাটে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সেটি পুলিশ ঘিরে রেখেছে। সেখানে কাউকে এখনও ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।

মি. আজিমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন সকালে কলকাতায় ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন বলে নিশ্চিত করেছে কলকাতায় বাংলাদেশের হাইকমিশন।

বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুজনকে পুলিশ বাংলাদেশে আটক করেছে। আটক হওয়া ব্যক্তিরা সম্প্রতি কলকাতা থেকে ফিরেছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ফ্যাসিবাদকে টিকিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র মানা হবে না: শিবির সেক্রেটারি

এমপি আনারকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

আপডেট সময় ০২:৪৫:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪

এক সপ্তাহ আগে নিখোঁজ হওয়া বাংলাদেশের ঝিনাইদহের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বুধবার (২২মে) দুপুরে ধানমণ্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, “পরিকল্পিতভাবেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। তিনজনকে বাংলাদেশ পুলিশ আটক করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে”।

“তদন্ত চলছে, যারা যারা এ খুনের সাথে জড়িত সবার বিষয়ে জানতে পারবো। ভারতের পুলিশও সহযোগিতা করছে। আমাদের পুলিশ অত্যন্ত দক্ষ। তদন্ত শেষ হলে এ খুনের মোটিভ কি সবকিছু বিস্তারিত দিতে পারবো আমরা”।

এর আগে কলকাতা বিধান নগর পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার মানব শ্রিংলা বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, “ জিজ্ঞাসাবাদে ক্যাবচালক জানিয়েছে ১৩ই মে যে ব্যক্তিকে সে গাড়িতে তুলেছিল তাকে হত্যার পর টুকরা টুকরা করে লাশ ছড়িয়ে দিয়েছে”।

তবে তাকে হত্যা করা হয়েছে কিনা, অথবা মরদেহ পাওয়া গেছে কিনা, সেই বিষয়ে কলকাতার পুলিশ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন।েএটা মার্ডার, খুন হয়েছে। এর নেপথ্যের বিষয় আপনাদের জানাবো।”

এ ঘটনায় ভারতের সাথে সম্পর্কে প্রভাব পড়বে কিনা এমন প্রশ্নে মি. খান বলেন, “এখানে সম্পর্কে ফাটল ধরবে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত যে ইনফরমেশন তাতে বাংলাদেশের মানুষই তাকে হত্যা করেছে। ভারতের কেউ হত্যা করেনি”।

“যাদের আটক করা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের পর খুনের নেপথ্য কারণ জানা যাবে। তদন্তের স্বার্থে অনেক কিছুই জানাচ্ছি না। সব উদ্ধার করবো আমরা” বলেন মি. খান।

পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অ্যান্টি টেররিস্ট ইউনিটের কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, তদন্তে নেমে তারা প্রথমে এমপি আনোয়ারুল আজিমকে বহনকারী ক্যাবচালককে আটক করেন।

সেই ক্যাবচালক তাদের জানিয়েছেন, মি. আজিমকে তার গাড়িতে তোলার পর আরও তিনজন গাড়িতে ওঠেন। তাদের মধ্যে দুইজন পুরুষ ও একজন নারী। পরে এই চারজন কলকাতা নিউটাউনের ওই বাড়িতে যান।

সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এটিএফ ওই চারজনকে বাড়িতে প্রবেশ করতে দেখতে পেয়েছে। পরে তিনজন বাড়িতে আসলেও তাদের মধ্যে এমপি আজিমকে আর দেখা যায়নি।

এটিএফ কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, এদের মধ্যে পুরুষ দুইজন বাংলাদেশে ফিরে যান। বাংলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগকে জানানো হলে তারা দুই জনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাদের দেয়া তথ্য কলকাতার পুলিশকে জানানো হয়। এরপরেই এমপি আনোয়ারুল আজিমের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিশ।

নিউটাউনের ফ্ল্যাটের ভেতর রক্তের দাগ রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। যদিও বুধবার দুপুর পর্যন্ত তার মরদেহ পাওয়া যায়নি।

পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যে ফ্ল্যাটে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সেটি পুলিশ ঘিরে রেখেছে। সেখানে কাউকে এখনও ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।

মি. আজিমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন সকালে কলকাতায় ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন বলে নিশ্চিত করেছে কলকাতায় বাংলাদেশের হাইকমিশন।

বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুজনকে পুলিশ বাংলাদেশে আটক করেছে। আটক হওয়া ব্যক্তিরা সম্প্রতি কলকাতা থেকে ফিরেছে।