ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশগত কারণে হয়ে থাকে। বাকি ১০ শতাংশ বংশানুক্রমে হয়। এক্ষেত্রে জিনের মাধ্যমে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে ক্যান্সার হতে পারে।
মানবদেহের জটিল রোগগুলোর মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম। রোগটিকে সঠিক সময়ে নির্নয় করে চিকিৎসা না নিলে মৃত্যু ঘটতে পারে। বেশকিছু কারণের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ধুমপান, ডায়াবেটিস, ফাস্টফুড গ্রহণ।
সম্প্রতি এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন দেশের একটি বেসরকারি হাসপাতালের অনকোলজি বিভাগের চিফ কনসালট্যান্ট অধ্যাপক ডা. মোফাজ্জল হোসাইন।
যেমন- নারীদের ক্ষেত্রে মা, খালা, নানী। কারো যদি ব্রেস্ট বা স্তন ক্যান্সার হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে বংশানুক্রমে বাচ্চার ক্ষেত্রে এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। আবার বাচ্চাদের চোখের পর্দা বা রেটিনায় এক ধরনের ক্যান্সার হয়ে থাকে। এটাও বংশগত কারণে হয়ে থাকে।
পরিবেশগত কারণে ক্যান্সার হতে পারে
যেমন- রাসায়নিক পদার্থ তামাক বা টোবাকো। এক তামাকের মধ্যে চার হাজারের মতো কেমিক্যাল রয়েছে। তার মধ্যে ৪৫টি কেমিক্যাল সরাসরি ক্যান্সার সৃষ্টি করে। এটি নানারকম গবেষণায় প্রমাণিত। ধোয়াবিহীন তামাকও সমান ক্ষতিকর স্বাস্থ্যের জন্য।
আর্সেনিক অ্যালকোহল জাতীয় কেমিক্যালও ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী
কিছু ভৌত পদার্থ যেমন রেডিয়েশনের কারণেও ক্যান্সার সৃষ্টি হয়ে থাকে। এমনকি বিকিরণ যেমন সূর্যের আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি দীর্ঘদিন সরাসরি শরীরে পরলে চামড়ায় এক ধরনের ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। এটা সাধারণত পশ্চিমা দেশগুলোতে বেশি দেখা দেয়।
যাদের ব্যায়াম, হাঁটাচলা কম করা হয়, মুটিয়ে যাবার ফলে তাদের ক্যান্সার হয়ে থাকে
নারীদের ক্ষেত্রে মুটিয়ে যাওয়ার ফলে স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। নিয়মিত ব্যায়াম না করলে নারীদের মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর যদি তারা মুটিয়ে যায় এটাকে বলা হয় পোস্টমেনোপজাল ওবেসিটি। এর ফলে ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যারা ফিজিক্যালি ইন-অ্যাকটিভ থাকেন, তাদের কনস্টিপেশন হয়। এর প্রভাবে খাদ্যনালীর ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
প্রায় ৪০ ভাগ ক্যান্সারের প্রধান কারণ ধুমপান
ধুমপানের প্রভাবে ফুসফুস, মুখগহ্বর, খাদ্যনালী, প্যানক্রিয়াস, কিডনি, মূত্রথলির, পাকস্থলী, এমনকি ব্লাড ক্যান্সারও হয়ে থাকে। এছাড়া অ্যালকোহল মুখের ক্যান্সার, লিভারের ক্যান্সার, প্যানক্রিয়াসের ক্যান্সার এবং কিডনির ক্যান্সার ঘটাতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীদের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি
ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে প্যানক্রিয়াটিক ক্যানসার, হেপাটোবিলিয়ারি ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
মাংস জাতীয় খাবার বা চর্বিযুক্ত মাংস বেশি খাওয়া
কেউ কেউ মাংস জাতীয় খাবার বা চর্বিযুক্ত মাংস বেশি খেয়ে থাকে, এক্ষেত্রে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এক্ষেত্রে রেকটাম এবং কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
ফাস্টফুড বেশি পরিমাণে খেলে
বাইরের খাবার বিশেষ করে ফাস্টফুড বেশি পরিমাণে খেলে ওবেসিটি বা মুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। ওবিসিটি অনেকগুলো ক্যান্সারের কারণ। কিছু কিছু খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি পরিমাণে থাকলে খাদ্যনালীর ক্যান্সার বা কলোরেক্টাল ক্যান্সার বেশি হয়। এছাড়া ব্রেস্ট ক্যান্সার, কিডনি ক্যান্সারও হতে পারে।