ঢাকা ০৩:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ছাত্রশিবির সরকারি বাঙলা কলেজের সভাপতি- আবির ও সেক্রেটারি- সাকিব Logo গোপালগঞ্জে এনসিপির ওপর হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল জামায়াতের বিক্ষোভ Logo আওয়ামী বাকশালীদের বাংলাদেশে রাজনীতি করতে দেব না: পিনাকী ভট্টাচার্য Logo লঙ্কানদের হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ Logo গোপালগঞ্জ জেলায় আগামীকালের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত Logo গোপালগঞ্জে নিষিদ্ধ সংগঠনের হামলার প্রতিবাদের রাবিতে বিক্ষোভ Logo এডওয়ার্ড কলেজে ‘জুলাই দিবস ২০২৫’ পালিত: শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন Logo জুলাই শহিদ দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo ১৯ তারিখের জাতীয় সমাবেশ সফল করতে কুমারখালীতে জামায়াতের প্রচার মিছিল Logo লঙ্কানদের ১৩২ রানে আটকে দিল টাইগাররা

ভোটের মাঠে মোদিকে বেকায়দায় ফেলে দিচ্ছেন ইনফ্লুয়েন্সার ধ্রুব রাঠি

ভারতের সাত দফার লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে আজ। দ্বিতীয় দফা পর্যন্ত ৮৮টি আসনে প্রায় ৬৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোটার উপস্থিতি আশানুরূপ না হওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি কিছুটা বেকায়দায় পড়তে পারে। তবে ভোটের মাঠে বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি একজন অরাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তৈরি হয়েছে বিজেপির সামনে, আর তিনি হলেন ধ্রুব রাঠি, একজন সোশ্যাল মিডিয়া ‘ইনফ্লুয়েন্সার।’

এ বছরের লোকসভা নির্বাচনে ইনফ্লুয়েন্সারদের আনাগোনা অন্যরকম এক মাত্রা যোগ করেছে প্রচারণায়। টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন ইনফ্লুয়েন্সাররা, তাদের পক্ষে কথা বলছেন, তুলে ধরছেন তাদের ভালো দিকগুলো।

এমন প্রচারণায় বিজেপির প্রার্থীদেরই বেশি দেখা যাচ্ছে। ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের সহকারী অধ্যাপক জয়জিত পালের মতে, সরকারবিরোধি মতামত প্রকাশ করতে ঠিক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না অনেক ইনফ্লুয়েন্সার, আর তা গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। যারা বিরোধীদলীয়দের পক্ষে কথা বলে, তাদের অনেকেই ব্যবহার করেন বেনামী সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট।

তবে ধ্রুব রাঠি চলছেন এ স্রোতের পুরো বিপরীতে। জার্মানিতে বসবাসকারী রাঠি একজন ইউটিউবার, যার রয়েচে ১৮ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার। সূক্ষ্ম এবং তীক্ষ্ম কথার বানে বিজেপিকে ধরাশয়ী করতে তার ভিডিওগুলোর জুড়ি নেই। তার প্রায় সব ভিডিওর লক্ষ্যই নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা। ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে ভীতু এবং মিথ্যাবাদী বলতেও ছাড়েন না রাঠি। এমনকি একটি ফ্যাক্ট-চেকিং ভিডিওতে তিনি মোদিকে তুলনা করেন খোদ হিটলারের সাথে।

ধ্রুব রাঠির ভিডিওগুলো এতটাই জনপ্রিয়তা হয়ে উঠেছে যে উত্তর ভারতে জনাকীর্ণ এলাকায় স্ক্রীন টাঙিয়ে এগুলো প্রচার করা হচ্ছে। তিনি কিন্তু ভিডিওতে নতুন কিছু বলছেন না, বা তদন্ত করে নতুন কোনো তথ্য বের করে সবাইকে চমকে দিচ্ছেন না। তিনি যেসব তথ্য উপস্থাপন করছেন, তা সবাই জানে। কিন্তু এসব তথ্যকে তিনি মুন্সিয়ানার সাথে ব্যবহার করে বিজেপির বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করছেন। তার মূল বক্তব্য একটাই, হিন্দুত্ববাদের ঝাণ্ডা ওড়ানো বিজেপির পুনরায় ক্ষমতায় আসা উচিত নয়।

রাঠির ভিডিওগুলোর মূল আকর্ষণ হলো তার বক্তব্যের ধরন। বিষয়বস্তু যাই হোক না কেন, ভিডিওটি দেখতে দেখতে দর্শক পৌঁছে যায় উত্তেজনার তুঙ্গে। আর এ কারণেই তিনি একজন সফল ইনফ্লুয়েন্সার এবং মোদির প্রতিপক্ষ। কারণ মোদি নিজেও একজন কৌশলী এবং সফল বক্তা। রাজনৈতিক বক্তব্যের মাধ্যমেই তিনি ভোটারদের মন জয় করে এতদূর এসেছেন।

নির্বাচনে মোদির প্রতিপক্ষদের মধ্যে বলার মত একজনই আছেন- রাহুল গান্ধী। কিন্তু রাহুল গান্ধী একজন রাজনীতিবিদ, ধ্রুব রাঠি পুরোপুরিই অরাজনৈতিক একজন ব্যক্তিত্ব। তার সাথে কোনো রাজনৈতিক দলেরই সম্পর্ক নেই। এ কারণে তার বক্তব্যের বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বেশি, এবং ভবিষ্যতে সম্ভবত তার মতো ব্যক্তিদের হাত ধরেই নতুন এক মাত্রায় পৌঁছাবে ভারতের রাজনীতি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ছাত্রশিবির সরকারি বাঙলা কলেজের সভাপতি- আবির ও সেক্রেটারি- সাকিব

ভোটের মাঠে মোদিকে বেকায়দায় ফেলে দিচ্ছেন ইনফ্লুয়েন্সার ধ্রুব রাঠি

আপডেট সময় ০৫:৫৭:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

ভারতের সাত দফার লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে আজ। দ্বিতীয় দফা পর্যন্ত ৮৮টি আসনে প্রায় ৬৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোটার উপস্থিতি আশানুরূপ না হওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি কিছুটা বেকায়দায় পড়তে পারে। তবে ভোটের মাঠে বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি একজন অরাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তৈরি হয়েছে বিজেপির সামনে, আর তিনি হলেন ধ্রুব রাঠি, একজন সোশ্যাল মিডিয়া ‘ইনফ্লুয়েন্সার।’

এ বছরের লোকসভা নির্বাচনে ইনফ্লুয়েন্সারদের আনাগোনা অন্যরকম এক মাত্রা যোগ করেছে প্রচারণায়। টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন ইনফ্লুয়েন্সাররা, তাদের পক্ষে কথা বলছেন, তুলে ধরছেন তাদের ভালো দিকগুলো।

এমন প্রচারণায় বিজেপির প্রার্থীদেরই বেশি দেখা যাচ্ছে। ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের সহকারী অধ্যাপক জয়জিত পালের মতে, সরকারবিরোধি মতামত প্রকাশ করতে ঠিক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না অনেক ইনফ্লুয়েন্সার, আর তা গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। যারা বিরোধীদলীয়দের পক্ষে কথা বলে, তাদের অনেকেই ব্যবহার করেন বেনামী সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট।

তবে ধ্রুব রাঠি চলছেন এ স্রোতের পুরো বিপরীতে। জার্মানিতে বসবাসকারী রাঠি একজন ইউটিউবার, যার রয়েচে ১৮ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার। সূক্ষ্ম এবং তীক্ষ্ম কথার বানে বিজেপিকে ধরাশয়ী করতে তার ভিডিওগুলোর জুড়ি নেই। তার প্রায় সব ভিডিওর লক্ষ্যই নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা। ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে ভীতু এবং মিথ্যাবাদী বলতেও ছাড়েন না রাঠি। এমনকি একটি ফ্যাক্ট-চেকিং ভিডিওতে তিনি মোদিকে তুলনা করেন খোদ হিটলারের সাথে।

ধ্রুব রাঠির ভিডিওগুলো এতটাই জনপ্রিয়তা হয়ে উঠেছে যে উত্তর ভারতে জনাকীর্ণ এলাকায় স্ক্রীন টাঙিয়ে এগুলো প্রচার করা হচ্ছে। তিনি কিন্তু ভিডিওতে নতুন কিছু বলছেন না, বা তদন্ত করে নতুন কোনো তথ্য বের করে সবাইকে চমকে দিচ্ছেন না। তিনি যেসব তথ্য উপস্থাপন করছেন, তা সবাই জানে। কিন্তু এসব তথ্যকে তিনি মুন্সিয়ানার সাথে ব্যবহার করে বিজেপির বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করছেন। তার মূল বক্তব্য একটাই, হিন্দুত্ববাদের ঝাণ্ডা ওড়ানো বিজেপির পুনরায় ক্ষমতায় আসা উচিত নয়।

রাঠির ভিডিওগুলোর মূল আকর্ষণ হলো তার বক্তব্যের ধরন। বিষয়বস্তু যাই হোক না কেন, ভিডিওটি দেখতে দেখতে দর্শক পৌঁছে যায় উত্তেজনার তুঙ্গে। আর এ কারণেই তিনি একজন সফল ইনফ্লুয়েন্সার এবং মোদির প্রতিপক্ষ। কারণ মোদি নিজেও একজন কৌশলী এবং সফল বক্তা। রাজনৈতিক বক্তব্যের মাধ্যমেই তিনি ভোটারদের মন জয় করে এতদূর এসেছেন।

নির্বাচনে মোদির প্রতিপক্ষদের মধ্যে বলার মত একজনই আছেন- রাহুল গান্ধী। কিন্তু রাহুল গান্ধী একজন রাজনীতিবিদ, ধ্রুব রাঠি পুরোপুরিই অরাজনৈতিক একজন ব্যক্তিত্ব। তার সাথে কোনো রাজনৈতিক দলেরই সম্পর্ক নেই। এ কারণে তার বক্তব্যের বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বেশি, এবং ভবিষ্যতে সম্ভবত তার মতো ব্যক্তিদের হাত ধরেই নতুন এক মাত্রায় পৌঁছাবে ভারতের রাজনীতি।