ঢাকা ০৫:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা Logo ধর্ষকদের শাস্তির হবে প্রকাশ্য মৃত্যুদন্ড: পাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা Logo ডাঃ লেলিনের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ Logo ‘জুলাই-আগস্টের চেতনাকে ধারণ করে পুলিশ বাহিনীর গৌরব সমুন্নত রাখতে হবে’স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo টস জিতে ব্যাটিংয়ে পাকিস্তান Logo ভারতকে হারালে ১ কোটি রুপি পুরস্কার পাবেন রিজওয়ানরা, প্রতিশ্রুতি গভর্নরের Logo উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহিদ দিবস ২০২৫ পালিত Logo পাবিপ্রবিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত Logo একুশে বইমেলায় আহমেদ বায়েজীদের ‘মহাকাশে দুঃস্বপ্ন’ Logo ১ মার্চ রোজা হলে ৩৩ বছর পর দেখা মিলবে ‘বিরল’ দিনের

ভোটের মাঠে মোদিকে বেকায়দায় ফেলে দিচ্ছেন ইনফ্লুয়েন্সার ধ্রুব রাঠি

ভারতের সাত দফার লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে আজ। দ্বিতীয় দফা পর্যন্ত ৮৮টি আসনে প্রায় ৬৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোটার উপস্থিতি আশানুরূপ না হওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি কিছুটা বেকায়দায় পড়তে পারে। তবে ভোটের মাঠে বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি একজন অরাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তৈরি হয়েছে বিজেপির সামনে, আর তিনি হলেন ধ্রুব রাঠি, একজন সোশ্যাল মিডিয়া ‘ইনফ্লুয়েন্সার।’

এ বছরের লোকসভা নির্বাচনে ইনফ্লুয়েন্সারদের আনাগোনা অন্যরকম এক মাত্রা যোগ করেছে প্রচারণায়। টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন ইনফ্লুয়েন্সাররা, তাদের পক্ষে কথা বলছেন, তুলে ধরছেন তাদের ভালো দিকগুলো।

এমন প্রচারণায় বিজেপির প্রার্থীদেরই বেশি দেখা যাচ্ছে। ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের সহকারী অধ্যাপক জয়জিত পালের মতে, সরকারবিরোধি মতামত প্রকাশ করতে ঠিক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না অনেক ইনফ্লুয়েন্সার, আর তা গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। যারা বিরোধীদলীয়দের পক্ষে কথা বলে, তাদের অনেকেই ব্যবহার করেন বেনামী সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট।

তবে ধ্রুব রাঠি চলছেন এ স্রোতের পুরো বিপরীতে। জার্মানিতে বসবাসকারী রাঠি একজন ইউটিউবার, যার রয়েচে ১৮ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার। সূক্ষ্ম এবং তীক্ষ্ম কথার বানে বিজেপিকে ধরাশয়ী করতে তার ভিডিওগুলোর জুড়ি নেই। তার প্রায় সব ভিডিওর লক্ষ্যই নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা। ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে ভীতু এবং মিথ্যাবাদী বলতেও ছাড়েন না রাঠি। এমনকি একটি ফ্যাক্ট-চেকিং ভিডিওতে তিনি মোদিকে তুলনা করেন খোদ হিটলারের সাথে।

ধ্রুব রাঠির ভিডিওগুলো এতটাই জনপ্রিয়তা হয়ে উঠেছে যে উত্তর ভারতে জনাকীর্ণ এলাকায় স্ক্রীন টাঙিয়ে এগুলো প্রচার করা হচ্ছে। তিনি কিন্তু ভিডিওতে নতুন কিছু বলছেন না, বা তদন্ত করে নতুন কোনো তথ্য বের করে সবাইকে চমকে দিচ্ছেন না। তিনি যেসব তথ্য উপস্থাপন করছেন, তা সবাই জানে। কিন্তু এসব তথ্যকে তিনি মুন্সিয়ানার সাথে ব্যবহার করে বিজেপির বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করছেন। তার মূল বক্তব্য একটাই, হিন্দুত্ববাদের ঝাণ্ডা ওড়ানো বিজেপির পুনরায় ক্ষমতায় আসা উচিত নয়।

রাঠির ভিডিওগুলোর মূল আকর্ষণ হলো তার বক্তব্যের ধরন। বিষয়বস্তু যাই হোক না কেন, ভিডিওটি দেখতে দেখতে দর্শক পৌঁছে যায় উত্তেজনার তুঙ্গে। আর এ কারণেই তিনি একজন সফল ইনফ্লুয়েন্সার এবং মোদির প্রতিপক্ষ। কারণ মোদি নিজেও একজন কৌশলী এবং সফল বক্তা। রাজনৈতিক বক্তব্যের মাধ্যমেই তিনি ভোটারদের মন জয় করে এতদূর এসেছেন।

নির্বাচনে মোদির প্রতিপক্ষদের মধ্যে বলার মত একজনই আছেন- রাহুল গান্ধী। কিন্তু রাহুল গান্ধী একজন রাজনীতিবিদ, ধ্রুব রাঠি পুরোপুরিই অরাজনৈতিক একজন ব্যক্তিত্ব। তার সাথে কোনো রাজনৈতিক দলেরই সম্পর্ক নেই। এ কারণে তার বক্তব্যের বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বেশি, এবং ভবিষ্যতে সম্ভবত তার মতো ব্যক্তিদের হাত ধরেই নতুন এক মাত্রায় পৌঁছাবে ভারতের রাজনীতি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা

ভোটের মাঠে মোদিকে বেকায়দায় ফেলে দিচ্ছেন ইনফ্লুয়েন্সার ধ্রুব রাঠি

আপডেট সময় ০৫:৫৭:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

ভারতের সাত দফার লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে আজ। দ্বিতীয় দফা পর্যন্ত ৮৮টি আসনে প্রায় ৬৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোটার উপস্থিতি আশানুরূপ না হওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি কিছুটা বেকায়দায় পড়তে পারে। তবে ভোটের মাঠে বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি একজন অরাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তৈরি হয়েছে বিজেপির সামনে, আর তিনি হলেন ধ্রুব রাঠি, একজন সোশ্যাল মিডিয়া ‘ইনফ্লুয়েন্সার।’

এ বছরের লোকসভা নির্বাচনে ইনফ্লুয়েন্সারদের আনাগোনা অন্যরকম এক মাত্রা যোগ করেছে প্রচারণায়। টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন ইনফ্লুয়েন্সাররা, তাদের পক্ষে কথা বলছেন, তুলে ধরছেন তাদের ভালো দিকগুলো।

এমন প্রচারণায় বিজেপির প্রার্থীদেরই বেশি দেখা যাচ্ছে। ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের সহকারী অধ্যাপক জয়জিত পালের মতে, সরকারবিরোধি মতামত প্রকাশ করতে ঠিক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না অনেক ইনফ্লুয়েন্সার, আর তা গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। যারা বিরোধীদলীয়দের পক্ষে কথা বলে, তাদের অনেকেই ব্যবহার করেন বেনামী সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট।

তবে ধ্রুব রাঠি চলছেন এ স্রোতের পুরো বিপরীতে। জার্মানিতে বসবাসকারী রাঠি একজন ইউটিউবার, যার রয়েচে ১৮ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার। সূক্ষ্ম এবং তীক্ষ্ম কথার বানে বিজেপিকে ধরাশয়ী করতে তার ভিডিওগুলোর জুড়ি নেই। তার প্রায় সব ভিডিওর লক্ষ্যই নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা। ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে ভীতু এবং মিথ্যাবাদী বলতেও ছাড়েন না রাঠি। এমনকি একটি ফ্যাক্ট-চেকিং ভিডিওতে তিনি মোদিকে তুলনা করেন খোদ হিটলারের সাথে।

ধ্রুব রাঠির ভিডিওগুলো এতটাই জনপ্রিয়তা হয়ে উঠেছে যে উত্তর ভারতে জনাকীর্ণ এলাকায় স্ক্রীন টাঙিয়ে এগুলো প্রচার করা হচ্ছে। তিনি কিন্তু ভিডিওতে নতুন কিছু বলছেন না, বা তদন্ত করে নতুন কোনো তথ্য বের করে সবাইকে চমকে দিচ্ছেন না। তিনি যেসব তথ্য উপস্থাপন করছেন, তা সবাই জানে। কিন্তু এসব তথ্যকে তিনি মুন্সিয়ানার সাথে ব্যবহার করে বিজেপির বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করছেন। তার মূল বক্তব্য একটাই, হিন্দুত্ববাদের ঝাণ্ডা ওড়ানো বিজেপির পুনরায় ক্ষমতায় আসা উচিত নয়।

রাঠির ভিডিওগুলোর মূল আকর্ষণ হলো তার বক্তব্যের ধরন। বিষয়বস্তু যাই হোক না কেন, ভিডিওটি দেখতে দেখতে দর্শক পৌঁছে যায় উত্তেজনার তুঙ্গে। আর এ কারণেই তিনি একজন সফল ইনফ্লুয়েন্সার এবং মোদির প্রতিপক্ষ। কারণ মোদি নিজেও একজন কৌশলী এবং সফল বক্তা। রাজনৈতিক বক্তব্যের মাধ্যমেই তিনি ভোটারদের মন জয় করে এতদূর এসেছেন।

নির্বাচনে মোদির প্রতিপক্ষদের মধ্যে বলার মত একজনই আছেন- রাহুল গান্ধী। কিন্তু রাহুল গান্ধী একজন রাজনীতিবিদ, ধ্রুব রাঠি পুরোপুরিই অরাজনৈতিক একজন ব্যক্তিত্ব। তার সাথে কোনো রাজনৈতিক দলেরই সম্পর্ক নেই। এ কারণে তার বক্তব্যের বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বেশি, এবং ভবিষ্যতে সম্ভবত তার মতো ব্যক্তিদের হাত ধরেই নতুন এক মাত্রায় পৌঁছাবে ভারতের রাজনীতি।