ঢাকা ১০:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ বাড়ি ফিরবেন জিম্মি হওয়া ২৩ নাবিক

অবশেষে অপেক্ষা ফুরোচ্ছে জিম্মি দশা থেকে মুক্ত নাবিকদের। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে বাড়ির পথে রওয়ানা হবেন সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত ২৩ নাবিক।

নাবিকদের পরিবারেও শুরু হয়েছে স্বজনদের ঘরে ফেরার উৎসব। নানা আয়োজনে নাবিকদের বরণ করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা।

চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান কেএসআরএমের মালিকানাধীন বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিকই বাংলাদেশের।

চট্টগ্রামসহ দেশের নানা অঞ্চলে তাদের বাড়ি। চরম অনিশ্চয়তার দীর্ঘ যাত্রা শেষে আজ বিকাল ৪টায় নাবিকেরা পৌঁছাবেন চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনালের (এনসিটি) এক নম্বর জেটিতে। ওখানেই তাদের বরণ করা হবে। এরপর ঘরে ফিরতে শুরু করবেন তারা।

বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান সবাই অধীর আগ্রহে তাদের জন্য অপেক্ষা করছেন। তাদের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে আজ।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নাবিকদের সংবর্ধনা প্রদান করবে বলে বন্দর সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক জানিয়েছেন।

এদিকে, সোমবার বিকেলে কুতুবদিয়ায় পৌঁছানোর পর থেকেই স্বদেশের উপকূলে নোঙর করা এমভি আবদুল্লাহর মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে নাবিকদের।

কুদুবদিয়া পৌঁছানোর পর এমভি আবদুল্লাহর চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উপকূলের দুটি ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘ভালোবাসি বাংলাদেশ। আমার বাংলাদেশ।’

একই ভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে জাহাজের ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান লিখেছেন ‘The journey with ABDULLAH ends here.’

নাবিকদের ঘরে ফেরার আনন্দে বিভোর তাদের পরিবার-পরিজন। রোজার ঈদে যাদের পরিবারে ছিল শোকের মাতম তারা ঈদের এক মাসের বেশি সময় পর উৎসবের আয়োজনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

এমভি আবদুল্লাহর ক্যাপ্টেন আবদুর রশিদের স্ত্রী ফাহমিদা আকতার বলেন, কী যে ভালো লাগছে বোঝাতে পারবো না। আমার একমাত্র মেয়ে তার বাবাকে ফিরে পেতে যাচ্ছে, সে এই আনন্দে বিভোর। স্বামীর প্রিয় সব খাবার আজ রান্না করবো আজকে।

চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খানের তিন মেয়ে ইয়াসরা ফাতেমা, উনাইজা মাহরীন ও খাদিজা আরাবিয়া । মৃত্যুর দুয়ার থেকে বাবা ফিরছেন এই আনন্দে মাতোয়ারা তারা। স্ত্রী ফিরোজা আকতার স্বামীর জন্য রেধেছেন পছন্দের সব খাবার। তাদের মতোই নিজ দেশের সন্তানদের ফিরে পেয়ে আনন্দিত সারাদেশের মানুষ।

গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরের উদ্দেশে রওয়ানা হয় এমভি আবদুল্লাহ। ১২ মার্চ বাংলাদেশি ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয় দস্যুরা। দেশটির উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগরে জাহাজটি জিম্মি করা হয়।

এর ৩২ দিন পর গত ১৪ এপ্রিল জাহাজটি মুক্ত করে দেয় জলদস্যুরা। এর পরই সেটি সোমালিয়া উপকূল থেকে আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। টানা এক সপ্তাহের সমুদ্রযাত্রা শেষে ২১ এপ্রিল বিকেলে জাহাজটি আল হামরিয়াহ বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায়।

জনপ্রিয় সংবাদ

আজ বাড়ি ফিরবেন জিম্মি হওয়া ২৩ নাবিক

আপডেট সময় ০১:০২:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

অবশেষে অপেক্ষা ফুরোচ্ছে জিম্মি দশা থেকে মুক্ত নাবিকদের। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে বাড়ির পথে রওয়ানা হবেন সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত ২৩ নাবিক।

নাবিকদের পরিবারেও শুরু হয়েছে স্বজনদের ঘরে ফেরার উৎসব। নানা আয়োজনে নাবিকদের বরণ করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা।

চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান কেএসআরএমের মালিকানাধীন বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিকই বাংলাদেশের।

চট্টগ্রামসহ দেশের নানা অঞ্চলে তাদের বাড়ি। চরম অনিশ্চয়তার দীর্ঘ যাত্রা শেষে আজ বিকাল ৪টায় নাবিকেরা পৌঁছাবেন চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনালের (এনসিটি) এক নম্বর জেটিতে। ওখানেই তাদের বরণ করা হবে। এরপর ঘরে ফিরতে শুরু করবেন তারা।

বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান সবাই অধীর আগ্রহে তাদের জন্য অপেক্ষা করছেন। তাদের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে আজ।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নাবিকদের সংবর্ধনা প্রদান করবে বলে বন্দর সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক জানিয়েছেন।

এদিকে, সোমবার বিকেলে কুতুবদিয়ায় পৌঁছানোর পর থেকেই স্বদেশের উপকূলে নোঙর করা এমভি আবদুল্লাহর মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে নাবিকদের।

কুদুবদিয়া পৌঁছানোর পর এমভি আবদুল্লাহর চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উপকূলের দুটি ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘ভালোবাসি বাংলাদেশ। আমার বাংলাদেশ।’

একই ভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে জাহাজের ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান লিখেছেন ‘The journey with ABDULLAH ends here.’

নাবিকদের ঘরে ফেরার আনন্দে বিভোর তাদের পরিবার-পরিজন। রোজার ঈদে যাদের পরিবারে ছিল শোকের মাতম তারা ঈদের এক মাসের বেশি সময় পর উৎসবের আয়োজনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

এমভি আবদুল্লাহর ক্যাপ্টেন আবদুর রশিদের স্ত্রী ফাহমিদা আকতার বলেন, কী যে ভালো লাগছে বোঝাতে পারবো না। আমার একমাত্র মেয়ে তার বাবাকে ফিরে পেতে যাচ্ছে, সে এই আনন্দে বিভোর। স্বামীর প্রিয় সব খাবার আজ রান্না করবো আজকে।

চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খানের তিন মেয়ে ইয়াসরা ফাতেমা, উনাইজা মাহরীন ও খাদিজা আরাবিয়া । মৃত্যুর দুয়ার থেকে বাবা ফিরছেন এই আনন্দে মাতোয়ারা তারা। স্ত্রী ফিরোজা আকতার স্বামীর জন্য রেধেছেন পছন্দের সব খাবার। তাদের মতোই নিজ দেশের সন্তানদের ফিরে পেয়ে আনন্দিত সারাদেশের মানুষ।

গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরের উদ্দেশে রওয়ানা হয় এমভি আবদুল্লাহ। ১২ মার্চ বাংলাদেশি ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয় দস্যুরা। দেশটির উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগরে জাহাজটি জিম্মি করা হয়।

এর ৩২ দিন পর গত ১৪ এপ্রিল জাহাজটি মুক্ত করে দেয় জলদস্যুরা। এর পরই সেটি সোমালিয়া উপকূল থেকে আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। টানা এক সপ্তাহের সমুদ্রযাত্রা শেষে ২১ এপ্রিল বিকেলে জাহাজটি আল হামরিয়াহ বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায়।