ঢাকা ০১:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

সন্তান পালনে যে বিষয় জানা জরুরি

প্রতিকি ছবি।

ডাক্তার, পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য, বন্ধুবান্ধব, বইপুস্তক আর ইন্টারনেটে এসব নিয়ে রয়েছে নানা রকম প্রচলিত ও আধুনিক পরামর্শ। কোনও কোনওটা মিলে যেতে পারে একটির সঙ্গে আরেকটি। কখনও একই বিষয়ে একেবারে পরষ্পরবিরোধী পরামর্শও পেতে পারেন কেউ কেউ। তাতে অনেক সময়ই মা-বাবাদের সংশয়ে পড়তে হয়।

সন্তান পালন নিয়ে মা-বাবাদের উদ্বেগের শেষ নেই। নবজাতককে কি বুকের কাছে কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখা উচিত? বুকের দুধ খাওয়ানো কালে মাকে খাবার নিয়ে কি কি বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে? বাচ্চাকে কতক্ষণ টিভি দেখতে দেয়া উচিত? কোন ধরণের খাবার তাদের জন্য আদর্শ? কতক্ষণ খেলতে দেয়া উচিত?

যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এমিলি ওস্টার গর্ভবতী ছিলেন। তিনি খুবই দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিলেন কোনটি তার সন্তানের জন্য ভালো। অর্থনীতির একজন শিক্ষক হিসেবে তখনই সিদ্ধান্ত নেন সন্তান পালন নিয়ে যত ধরণের পরিসংখ্যান-গবেষণা পাওয়া যায়, সব ঘেঁটে বিশ্লেষণ করে দেখবেন।

মেডিকেল জার্নাল বিশ্লেষণ করে এমিলি নিজের প্রথম বই ‘গর্ভাবস্থায় কী করবেন আর কী করবেন না’ লিখেছিলেন। সম্প্রতি তিনি নতুন আরেকটি বই লিখেছেন। এর মূল বিষয় সন্তান লালন পালন। এ বিশেষজ্ঞ মোট ১৩টি পরামর্শ দিয়েছেন যা সব মা-বাবার জানান উচিত।

১. বুকের দুধ সর্বরোগের ওষুধ নয়

বুকের দুধ স্বল্প মেয়াদে শিশুর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এমন অনেক তথ্য উপাত্ত রয়েছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশু বুকের দুধ খায়; তারা বিশেষ করে অ্যালার্জি, পেটের সমস্যা এবং কানে সংক্রমণের মতো সমস্যায় কম পড়ে। কিন্তু বুকের দুধের দীর্ঘমেয়াদী উপকারিতা সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য গবেষকদের কাছে নেই।

অর্থাৎ ছোটবেলায় যাদের বুকের দুধ দেয়া হয়েছে, বড় হলে তারা বেশি স্মার্ট হবে অথবা স্থূল হবে না কিংবা তাদের ডায়াবেটিস বা ক্যান্সারের ঝুঁকি কম হবে এমন কোনও উপকারিতার কথা শোনা যায়নি। তবে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ালে মায়ের কিছু ধরণের ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি ২০-৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।

২. মা অ্যালকোহল পান করতে পারেন

সন্তানকে বুকের দুধ দেয়া হয় যেসময়, সেই কয়েক মাস বা বছর মা অ্যালকোহল পান করতে পারবেন না। এমন একটি ধারণা প্রচলিত আছে। অধ্যাপক ওস্টার বলছেন, মা সেসময় অ্যালকোহল পান করলে তার রক্তে অ্যালকোহলের পরিমাণ যা থাকে, সেই একই পরিমাণ থাকবে বুকের দুধেও। তাই শিশু দুধের সঙ্গে অ্যালকোহল পান করলেও তা পরিমাণে অত্যন্ত কম। কিন্তু কোনও মা যদি সন্তানকে সেই সামান্য পরিমাণে অ্যালকোহলও দিতে না চান, তাহলে পান করার দুই ঘণ্টা পরে সন্তানকে দুধ দিতে হবে।

৩. মা বিষণ্নতারোধী ওষুধ খেতে পারেন

চিকিৎসকের পরামর্শে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন মায়েরা বিষণ্নতারোধী ওষুধ খেতে পারবেন। এ ধরণের ওষুধের কোনও ক্ষতিকর প্রভাব সন্তানের ওপর পড়ে না। যদিও বুকের দুধ খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে প্রাকৃতিকভাবেই বিষণ্নতা কমে বলে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে।

৪. একই ঘরে থাকার সুবিধা নেই

আমেরিকার শিশু বিশেষজ্ঞদের সংগঠনের পরামর্শ হচ্ছে, জন্মের পর নিদেনপক্ষে প্রথম ছয়মাস থেকে এক বছর যেন তারা মা-বাবার সঙ্গে একই ঘরে থাকে। ফলে নবজাতক শিশুদের হঠাৎ মৃত্যুর হার রোধ করা সম্ভব। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলছেন, একই ঘরে থাকার সুবিধা অল্প কয়েক মাসের মধ্যেই ফুরিয়ে যায়। অধ্যাপক ওস্টার বলছেন, কোনও মা-বাবা যদি সন্তান নিয়ে একই ঘরে থাকতে চান, থাকুন। যত দিন ইচ্ছা। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শিশুর ওপর এখনো এমন কোনও ফলাফল দেখতে পাননি গবেষকরা।

৫. সন্তানকে বুকের কাছে কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়

অনেক প্রাচীন জনগোষ্ঠীর মানুষেরা এখনো ঘুমন্ত সন্তানকে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে শক্ত করে বুকের কাছে বেঁধে রাখেন। গবেষণায় দেখা গেছে, এটা শিশুদের জন্য ভালো। ফলে শিশু ভয় পেয়ে কেঁদে ওঠে না। শিশুর ঘুম ভালো হয়। তবে বুকের কাছে বেঁধে রাখার সময় শিশু যেন তার কোমর এবং পশ্চাৎদেশ ঠিকমতো নড়াচড়া করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

৬. বড়দের সঙ্গে সোফায় ঘুমিয়ে পড়া খারাপ

হ্যাঁ। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাপ্তবয়স্ক কোনও মানুষের সঙ্গে শিশুরা সোফায় বা যেকোনও জায়গায় ঘুমিয়ে পড়লে শিশু মৃত্যুর হার ২০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। অনেক সময় অসচেতনতার কারণে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরের নিচে চাপা পড়তে পারে বাচ্চারা। ফলে এটি একেবারেই করা যাবে না বলে নিষেধ করছেন অধ্যাপক ওস্টার।

৭. সন্তান জন্মের পরই যৌনজীবন শুরু করতে পারবেন

সন্তান জন্মের পরবর্তী ছয় সপ্তাহ সেক্স করা উচিত নয়। এমন একটি প্রচলিত ধারণা আছে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, এজন্য কোনও আদর্শ সময় নেই। নির্ভর করবে মায়ের শারীরিক অবস্থার ওপর।

৮. টিকা নিতে হবে

সন্তানকে প্রয়োজনীয় সব টিকা অবশ্যই দিতে হবে। সেই সঙ্গে নিজের সুস্থতার জন্যও প্রয়োজনীয় টিকা ও অন্যান্য চিকিৎসা নিতে হবে।

৯. বাচ্চাকে ঘুমের প্রশিক্ষণ দেয়া উচিত

এ সংক্রান্ত কয়েকশ গবেষণা ঘেঁটে অধ্যাপক ওস্টার এ সিদ্ধান্ত পৌঁছেছেন, বাচ্চাদের খুব অল্প বয়সেই ঘুমের একটি প্যাটার্ন ঠিক করা উচিত। তাহলে তাদের বাকী কাজ অর্থাৎ খাওয়া ও হজম প্রক্রিয়াও একটি নির্দিষ্ট নিয়মে চলবে। আবার একই সঙ্গে এতে মা-বাবাদের উদ্বেগ দুঃশ্চিন্তাও অনেকটাই কমে যায়।

১০. মাতৃত্বকালীন ছুটি নেয়া উচিত

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, জন্মের পর শিশুদের কিছু সময় মায়ের সঙ্গে একান্তে কাটানো প্রয়োজন। তাই একজন মা মাতৃত্বকালীন ছুটি নেয়ার ফলে সন্তান উপকৃত হয়। তবে মা যদি সবসময় বাড়িতে থাকেন, তাতে সন্তানের ভালো হয় কিংবা তেমন কাজে আসে না, এ ধরণের কোনও ব্যপারেই তেমন কোনও গবেষণা নেই।

১১. ডে-কেয়ারে থাকলে মায়ের সঙ্গে কম খাতির থাকে?

এমন কোনও বৈজ্ঞানিক গবেষণা নেই। তবে সন্তানের সঙ্গে কাটানো সময় কিভাবে কাটাচ্ছেন, এর ওপর নির্ভর করে মায়ের সঙ্গে বাচ্চার কেমন খাতির থাকবে।

১২. দুই বছরের নিচে শিশু টিভি দেখবে

তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুরা টিভি দেখে অনেক কিছু শিখতে পারে। তবে টিভি দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের চোখের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। এমনটা মনে করেন কোনও চিকিৎসক।

১৩. ইন্টার‌্যাক্টিভ পড়া শিশুদের জন্য উপকারী

শিশুদের কোনও বই পড়ে শোনানোর পর, তাদের তা নিয়ে নানারকম প্রশ্ন করা যেতে পারে। এতে তাদের উপকার হয়। যেমন প্রশ্ন করা যেতে পারে পাখিটার মা কোথায় গেল বলো তো? অথবা টুপির মধ্যে লুকানো বিড়ালটার এখন কেমন লাগছে বলো তো? এমন সব প্রশ্ন- যার উত্তর অনেক রকম হতে পারে। এতে বাচ্চাদের চিন্তা করার ক্ষমতা বাড়ে।

জনপ্রিয় সংবাদ

মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের ধাওয়া সেনাবাহিনীর

সন্তান পালনে যে বিষয় জানা জরুরি

আপডেট সময় ০৬:০৯:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪

ডাক্তার, পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য, বন্ধুবান্ধব, বইপুস্তক আর ইন্টারনেটে এসব নিয়ে রয়েছে নানা রকম প্রচলিত ও আধুনিক পরামর্শ। কোনও কোনওটা মিলে যেতে পারে একটির সঙ্গে আরেকটি। কখনও একই বিষয়ে একেবারে পরষ্পরবিরোধী পরামর্শও পেতে পারেন কেউ কেউ। তাতে অনেক সময়ই মা-বাবাদের সংশয়ে পড়তে হয়।

সন্তান পালন নিয়ে মা-বাবাদের উদ্বেগের শেষ নেই। নবজাতককে কি বুকের কাছে কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখা উচিত? বুকের দুধ খাওয়ানো কালে মাকে খাবার নিয়ে কি কি বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে? বাচ্চাকে কতক্ষণ টিভি দেখতে দেয়া উচিত? কোন ধরণের খাবার তাদের জন্য আদর্শ? কতক্ষণ খেলতে দেয়া উচিত?

যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এমিলি ওস্টার গর্ভবতী ছিলেন। তিনি খুবই দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিলেন কোনটি তার সন্তানের জন্য ভালো। অর্থনীতির একজন শিক্ষক হিসেবে তখনই সিদ্ধান্ত নেন সন্তান পালন নিয়ে যত ধরণের পরিসংখ্যান-গবেষণা পাওয়া যায়, সব ঘেঁটে বিশ্লেষণ করে দেখবেন।

মেডিকেল জার্নাল বিশ্লেষণ করে এমিলি নিজের প্রথম বই ‘গর্ভাবস্থায় কী করবেন আর কী করবেন না’ লিখেছিলেন। সম্প্রতি তিনি নতুন আরেকটি বই লিখেছেন। এর মূল বিষয় সন্তান লালন পালন। এ বিশেষজ্ঞ মোট ১৩টি পরামর্শ দিয়েছেন যা সব মা-বাবার জানান উচিত।

১. বুকের দুধ সর্বরোগের ওষুধ নয়

বুকের দুধ স্বল্প মেয়াদে শিশুর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এমন অনেক তথ্য উপাত্ত রয়েছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশু বুকের দুধ খায়; তারা বিশেষ করে অ্যালার্জি, পেটের সমস্যা এবং কানে সংক্রমণের মতো সমস্যায় কম পড়ে। কিন্তু বুকের দুধের দীর্ঘমেয়াদী উপকারিতা সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য গবেষকদের কাছে নেই।

অর্থাৎ ছোটবেলায় যাদের বুকের দুধ দেয়া হয়েছে, বড় হলে তারা বেশি স্মার্ট হবে অথবা স্থূল হবে না কিংবা তাদের ডায়াবেটিস বা ক্যান্সারের ঝুঁকি কম হবে এমন কোনও উপকারিতার কথা শোনা যায়নি। তবে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ালে মায়ের কিছু ধরণের ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি ২০-৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।

২. মা অ্যালকোহল পান করতে পারেন

সন্তানকে বুকের দুধ দেয়া হয় যেসময়, সেই কয়েক মাস বা বছর মা অ্যালকোহল পান করতে পারবেন না। এমন একটি ধারণা প্রচলিত আছে। অধ্যাপক ওস্টার বলছেন, মা সেসময় অ্যালকোহল পান করলে তার রক্তে অ্যালকোহলের পরিমাণ যা থাকে, সেই একই পরিমাণ থাকবে বুকের দুধেও। তাই শিশু দুধের সঙ্গে অ্যালকোহল পান করলেও তা পরিমাণে অত্যন্ত কম। কিন্তু কোনও মা যদি সন্তানকে সেই সামান্য পরিমাণে অ্যালকোহলও দিতে না চান, তাহলে পান করার দুই ঘণ্টা পরে সন্তানকে দুধ দিতে হবে।

৩. মা বিষণ্নতারোধী ওষুধ খেতে পারেন

চিকিৎসকের পরামর্শে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন মায়েরা বিষণ্নতারোধী ওষুধ খেতে পারবেন। এ ধরণের ওষুধের কোনও ক্ষতিকর প্রভাব সন্তানের ওপর পড়ে না। যদিও বুকের দুধ খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে প্রাকৃতিকভাবেই বিষণ্নতা কমে বলে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে।

৪. একই ঘরে থাকার সুবিধা নেই

আমেরিকার শিশু বিশেষজ্ঞদের সংগঠনের পরামর্শ হচ্ছে, জন্মের পর নিদেনপক্ষে প্রথম ছয়মাস থেকে এক বছর যেন তারা মা-বাবার সঙ্গে একই ঘরে থাকে। ফলে নবজাতক শিশুদের হঠাৎ মৃত্যুর হার রোধ করা সম্ভব। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলছেন, একই ঘরে থাকার সুবিধা অল্প কয়েক মাসের মধ্যেই ফুরিয়ে যায়। অধ্যাপক ওস্টার বলছেন, কোনও মা-বাবা যদি সন্তান নিয়ে একই ঘরে থাকতে চান, থাকুন। যত দিন ইচ্ছা। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শিশুর ওপর এখনো এমন কোনও ফলাফল দেখতে পাননি গবেষকরা।

৫. সন্তানকে বুকের কাছে কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়

অনেক প্রাচীন জনগোষ্ঠীর মানুষেরা এখনো ঘুমন্ত সন্তানকে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে শক্ত করে বুকের কাছে বেঁধে রাখেন। গবেষণায় দেখা গেছে, এটা শিশুদের জন্য ভালো। ফলে শিশু ভয় পেয়ে কেঁদে ওঠে না। শিশুর ঘুম ভালো হয়। তবে বুকের কাছে বেঁধে রাখার সময় শিশু যেন তার কোমর এবং পশ্চাৎদেশ ঠিকমতো নড়াচড়া করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

৬. বড়দের সঙ্গে সোফায় ঘুমিয়ে পড়া খারাপ

হ্যাঁ। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাপ্তবয়স্ক কোনও মানুষের সঙ্গে শিশুরা সোফায় বা যেকোনও জায়গায় ঘুমিয়ে পড়লে শিশু মৃত্যুর হার ২০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। অনেক সময় অসচেতনতার কারণে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরের নিচে চাপা পড়তে পারে বাচ্চারা। ফলে এটি একেবারেই করা যাবে না বলে নিষেধ করছেন অধ্যাপক ওস্টার।

৭. সন্তান জন্মের পরই যৌনজীবন শুরু করতে পারবেন

সন্তান জন্মের পরবর্তী ছয় সপ্তাহ সেক্স করা উচিত নয়। এমন একটি প্রচলিত ধারণা আছে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, এজন্য কোনও আদর্শ সময় নেই। নির্ভর করবে মায়ের শারীরিক অবস্থার ওপর।

৮. টিকা নিতে হবে

সন্তানকে প্রয়োজনীয় সব টিকা অবশ্যই দিতে হবে। সেই সঙ্গে নিজের সুস্থতার জন্যও প্রয়োজনীয় টিকা ও অন্যান্য চিকিৎসা নিতে হবে।

৯. বাচ্চাকে ঘুমের প্রশিক্ষণ দেয়া উচিত

এ সংক্রান্ত কয়েকশ গবেষণা ঘেঁটে অধ্যাপক ওস্টার এ সিদ্ধান্ত পৌঁছেছেন, বাচ্চাদের খুব অল্প বয়সেই ঘুমের একটি প্যাটার্ন ঠিক করা উচিত। তাহলে তাদের বাকী কাজ অর্থাৎ খাওয়া ও হজম প্রক্রিয়াও একটি নির্দিষ্ট নিয়মে চলবে। আবার একই সঙ্গে এতে মা-বাবাদের উদ্বেগ দুঃশ্চিন্তাও অনেকটাই কমে যায়।

১০. মাতৃত্বকালীন ছুটি নেয়া উচিত

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, জন্মের পর শিশুদের কিছু সময় মায়ের সঙ্গে একান্তে কাটানো প্রয়োজন। তাই একজন মা মাতৃত্বকালীন ছুটি নেয়ার ফলে সন্তান উপকৃত হয়। তবে মা যদি সবসময় বাড়িতে থাকেন, তাতে সন্তানের ভালো হয় কিংবা তেমন কাজে আসে না, এ ধরণের কোনও ব্যপারেই তেমন কোনও গবেষণা নেই।

১১. ডে-কেয়ারে থাকলে মায়ের সঙ্গে কম খাতির থাকে?

এমন কোনও বৈজ্ঞানিক গবেষণা নেই। তবে সন্তানের সঙ্গে কাটানো সময় কিভাবে কাটাচ্ছেন, এর ওপর নির্ভর করে মায়ের সঙ্গে বাচ্চার কেমন খাতির থাকবে।

১২. দুই বছরের নিচে শিশু টিভি দেখবে

তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুরা টিভি দেখে অনেক কিছু শিখতে পারে। তবে টিভি দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের চোখের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। এমনটা মনে করেন কোনও চিকিৎসক।

১৩. ইন্টার‌্যাক্টিভ পড়া শিশুদের জন্য উপকারী

শিশুদের কোনও বই পড়ে শোনানোর পর, তাদের তা নিয়ে নানারকম প্রশ্ন করা যেতে পারে। এতে তাদের উপকার হয়। যেমন প্রশ্ন করা যেতে পারে পাখিটার মা কোথায় গেল বলো তো? অথবা টুপির মধ্যে লুকানো বিড়ালটার এখন কেমন লাগছে বলো তো? এমন সব প্রশ্ন- যার উত্তর অনেক রকম হতে পারে। এতে বাচ্চাদের চিন্তা করার ক্ষমতা বাড়ে।