ঢাকা ০৬:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২০ শতাংশ শুল্ক নিশ্চিত করা সরকারের বড় সাফল্য: প্রেস সচিব Logo সিরাজগঞ্জে ৫০০ পরিবার পেল দোস্ত এইডের খাদ্য সামগ্রী Logo ফের নাফ নদী থেকে ট্রলারসহ ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি Logo ডাকসু নির্বাচনে বাধা এলে সবাইকে ডেকে সবকিছু বলে দেব: ঢাবি উপাচার্য Logo কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলাতে বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে বাসভবনে যাবেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী Logo বিধিমালা ভঙ্গের পরও হামীমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি কমিশন: বাকের Logo জনগণের ভোটে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে: জি কে গউছ Logo মুন্সীগঞ্জে ছাত্রশিবিরের “A+ সংবর্ধনা” অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে উদ্দীপনা Logo এখন জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হওয়ার স্বপ্ন দেখছে: নুর

পেঁয়াজ-আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না: কৃষিমন্ত্রী

পেঁয়াজ-আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না: কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, পিয়াজ ও আলুর দাম বেঁধে দিলেও সরকার তা বাস্তবায়ন করতে পারছে না।

তিনি বলেন, আমরা পিয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। এ নিয়ে সমালোচনা করেন, আমরা মেনে নেবো। কারণ, এটা আমাদের দুর্বল দিক। কিন্তু আমাদের সবল দিকগুলোও দয়া করে মিডিয়াতে তুলে ধরবেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, সব বিবেচনায় এ বছর চাল উৎপাদন, বিতরণ এবং মানুষের খাদ্য নিরাপত্তায় আমরা একটা ভালো অবস্থায় রয়েছি। আমি সাংবাদিক বন্ধুদের বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করছি, এ ব্যাপারগুলোও যেন গণমাধ্যমে তুলে ধরা হয়। রোববার (৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

আলু ও পিয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সরকার হাল ছেড়ে দিয়েছে কি না- জানতে চাইলে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মোটেই হাল ছেড়ে দেইনি। আমরা এখনো যথেষ্ট তৎপর রয়েছি। উৎপাদনের পার্টটা হলো আমাদের কৃষি মন্ত্রণালয়ের। বাজার মনিটর করার দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। তারপরও আমি দায়িত্ব এড়াতে পারি না। কেবিনেট সিস্টেমে সব মন্ত্রী এটার জয়েন্ট রেনপনসিবিলিটি, সব সময়ই এটা।

তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি। কোল্ড স্টোরেজের মালিকরা খুবই অসহযোগিতা করছে। তারা ঠিকমত সরবরাহ করছে না, এটা বড় অন্তরায়। নানাভাবে আমাদের কর্মকর্তারা মাঠ লেভেলে তাদের চাপ সৃষ্টি করলে সাপ্লাই-ই দেয় না, বন্ধ করে চলে যায়। এ ধরনের কিছু ব্যাপার রয়েছে। তা সত্ত্বেও প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

জুলাই থেকে এ পর্যন্ত এই মরা কার্তিকেও চাল আমদানি করতে হয়নি জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এদিক দিয়ে আমরা খুব একটা ভালো অবস্থায় আছি। গত বোরো মৌসুমে চাল সংগ্রহের যে টার্গেট নির্ধারণ করেছিলাম সেটি অর্জিত হয়েও দুই লাখ টন বেশি সংগ্রহ করতে পেরেছি। এ মুহূর্তে বাজারে চালের দামে নিম্নমুখী ট্রেন্ড রয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে বাজারে চালের দাম কম, সরকারি দাম বেশি, যেজন্য মিলাররা আমাদের চাল দেওয়ার জন্য খুবই আগ্রহী। এখনো তারা চাল দিতে চাচ্ছে।

আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, একজন মানুষের জীবনধারণের জন্য যে খাদ্য প্রয়োজন তার ৬৫-৭০ ভাগই খরচ হয় চাল কিনতে। অর্থাৎ ৭০ ভাগই খরচ হয় চাল কেনার জন্য। কাজেই চালটা কিন্তু খাদ্যের প্রথম ও প্রধান উপাদান। পিয়াজের দাম আলুর দাম কতটুকু সেটা আমি ওইভাবে বলতে চাই না। তবে চাল নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। মানুষের যে খাদ্য নিরাপত্তা, ন্যূনতম যে খাবারটা সেটা কিন্তু কিনতে পারছে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, পিয়াজ আমাদের দেশে পর্যাপ্ত উৎপাদন হয়, কিন্তু পিয়াজ খুবই পচনশীল পণ্য। এপ্রিল-মে মাসে পিয়াজ তোলা হয়, তারপর দুই মাসের বেশি থাকে না। পিয়াজ পচে যায়, শুকিয়ে যায়। এজন্য পিয়াজ নিয়ে আমাদের সমস্যা। নভেম্বর-ডিসেম্বরে বিদেশ থেকে পিয়াজ আমদানি করতে হয়। গত বছর যথেষ্ট পিয়াজ উৎপাদন হয়েছিল, চাষিরা বিক্রি করতে পারেনি। আলুরও একই অবস্থা, রাস্তায় ফেলে দিয়েছে। এবার পরিস্থিতি উল্টো। উৎপাদন কম হওয়ার সুযোগে কোল্ড স্টোরেজ মালিক ও আড়তদাররা ব্যাপকভাবে মুনাফা করছে। এতো লাভ করা উচিত না। ২০ টাকা খরচ হয় না, বিক্রি করছে ৪০-৫০ টাকায়।

পিয়াজ সংরক্ষণে নতুন প্রযুক্তি আনা হয়েছে জানিয়ে ড. রাজ্জাক বলেন, ওভাবে পিয়াজ রাখলে ৫ শতাংশও পচে না। এ প্রযুক্তি যদি আমরা নিয়ে যেতে পারি আগামী দুই বছরের মধ্যে বিদেশ থেকে কোনো পিয়াজ আমদানি করতে হবে না। নতুন জাত বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন, হেক্টরপ্রতি ৪০-৫০ টন উৎপাদন হয়। আগামী দিনে বাংলাদেশে পিয়াজেরও কোনো সমস্যা থাকবে না। খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনসহ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২০ শতাংশ শুল্ক নিশ্চিত করা সরকারের বড় সাফল্য: প্রেস সচিব

পেঁয়াজ-আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না: কৃষিমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৮:৩৩:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ অক্টোবর ২০২৩

কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, পিয়াজ ও আলুর দাম বেঁধে দিলেও সরকার তা বাস্তবায়ন করতে পারছে না।

তিনি বলেন, আমরা পিয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। এ নিয়ে সমালোচনা করেন, আমরা মেনে নেবো। কারণ, এটা আমাদের দুর্বল দিক। কিন্তু আমাদের সবল দিকগুলোও দয়া করে মিডিয়াতে তুলে ধরবেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, সব বিবেচনায় এ বছর চাল উৎপাদন, বিতরণ এবং মানুষের খাদ্য নিরাপত্তায় আমরা একটা ভালো অবস্থায় রয়েছি। আমি সাংবাদিক বন্ধুদের বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করছি, এ ব্যাপারগুলোও যেন গণমাধ্যমে তুলে ধরা হয়। রোববার (৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

আলু ও পিয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সরকার হাল ছেড়ে দিয়েছে কি না- জানতে চাইলে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মোটেই হাল ছেড়ে দেইনি। আমরা এখনো যথেষ্ট তৎপর রয়েছি। উৎপাদনের পার্টটা হলো আমাদের কৃষি মন্ত্রণালয়ের। বাজার মনিটর করার দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। তারপরও আমি দায়িত্ব এড়াতে পারি না। কেবিনেট সিস্টেমে সব মন্ত্রী এটার জয়েন্ট রেনপনসিবিলিটি, সব সময়ই এটা।

তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি। কোল্ড স্টোরেজের মালিকরা খুবই অসহযোগিতা করছে। তারা ঠিকমত সরবরাহ করছে না, এটা বড় অন্তরায়। নানাভাবে আমাদের কর্মকর্তারা মাঠ লেভেলে তাদের চাপ সৃষ্টি করলে সাপ্লাই-ই দেয় না, বন্ধ করে চলে যায়। এ ধরনের কিছু ব্যাপার রয়েছে। তা সত্ত্বেও প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

জুলাই থেকে এ পর্যন্ত এই মরা কার্তিকেও চাল আমদানি করতে হয়নি জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এদিক দিয়ে আমরা খুব একটা ভালো অবস্থায় আছি। গত বোরো মৌসুমে চাল সংগ্রহের যে টার্গেট নির্ধারণ করেছিলাম সেটি অর্জিত হয়েও দুই লাখ টন বেশি সংগ্রহ করতে পেরেছি। এ মুহূর্তে বাজারে চালের দামে নিম্নমুখী ট্রেন্ড রয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে বাজারে চালের দাম কম, সরকারি দাম বেশি, যেজন্য মিলাররা আমাদের চাল দেওয়ার জন্য খুবই আগ্রহী। এখনো তারা চাল দিতে চাচ্ছে।

আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, একজন মানুষের জীবনধারণের জন্য যে খাদ্য প্রয়োজন তার ৬৫-৭০ ভাগই খরচ হয় চাল কিনতে। অর্থাৎ ৭০ ভাগই খরচ হয় চাল কেনার জন্য। কাজেই চালটা কিন্তু খাদ্যের প্রথম ও প্রধান উপাদান। পিয়াজের দাম আলুর দাম কতটুকু সেটা আমি ওইভাবে বলতে চাই না। তবে চাল নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। মানুষের যে খাদ্য নিরাপত্তা, ন্যূনতম যে খাবারটা সেটা কিন্তু কিনতে পারছে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, পিয়াজ আমাদের দেশে পর্যাপ্ত উৎপাদন হয়, কিন্তু পিয়াজ খুবই পচনশীল পণ্য। এপ্রিল-মে মাসে পিয়াজ তোলা হয়, তারপর দুই মাসের বেশি থাকে না। পিয়াজ পচে যায়, শুকিয়ে যায়। এজন্য পিয়াজ নিয়ে আমাদের সমস্যা। নভেম্বর-ডিসেম্বরে বিদেশ থেকে পিয়াজ আমদানি করতে হয়। গত বছর যথেষ্ট পিয়াজ উৎপাদন হয়েছিল, চাষিরা বিক্রি করতে পারেনি। আলুরও একই অবস্থা, রাস্তায় ফেলে দিয়েছে। এবার পরিস্থিতি উল্টো। উৎপাদন কম হওয়ার সুযোগে কোল্ড স্টোরেজ মালিক ও আড়তদাররা ব্যাপকভাবে মুনাফা করছে। এতো লাভ করা উচিত না। ২০ টাকা খরচ হয় না, বিক্রি করছে ৪০-৫০ টাকায়।

পিয়াজ সংরক্ষণে নতুন প্রযুক্তি আনা হয়েছে জানিয়ে ড. রাজ্জাক বলেন, ওভাবে পিয়াজ রাখলে ৫ শতাংশও পচে না। এ প্রযুক্তি যদি আমরা নিয়ে যেতে পারি আগামী দুই বছরের মধ্যে বিদেশ থেকে কোনো পিয়াজ আমদানি করতে হবে না। নতুন জাত বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন, হেক্টরপ্রতি ৪০-৫০ টন উৎপাদন হয়। আগামী দিনে বাংলাদেশে পিয়াজেরও কোনো সমস্যা থাকবে না। খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনসহ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।