প্রধান নির্বাচন কমিশনার সরকারের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ রবিবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি এ অভিযোগ করেন। আমীর খসরু বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে না গিয়ে যে কথাগুলো বলে তার মধ্যে সেই আগের মতো চুরি করে ক্ষমতায় বসানোর চিন্তা বিদ্যমান। তার কাছ থেকে ভালো কিছু প্রত্যাশা করার কোনো কারণ নাই।
কে যেন বলছিল, প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাকি বলেছে, সরকারের সহায়তা লাগবে না, আবার বলে কোনো সমস্যা নাই। একেক সময় একেক কথা বলে। তিনি আরো বলেন, ‘সিইসির কাজ হচ্ছে, যে কাজগুলো সে করছে সেটাই তার কাজ। তাকে একটি টুলস হিসেবে বসানো হয়েছে। সে ফ্যাসিস্ট রেজিমের টুলস। ওর কাজই হচ্ছে, আগামী নির্বাচনটা কিভাবে চুরি করে এই সরকারকে আবার ক্ষমতায় বসানো যায় তা দেখা। এটাই তার চাকরি। তার থেকে কী আশা করবেন? তাদের কাছ থেকে কিছু আশা করতে পারবেন না।
আইন-কানুন বলেন, দেশের প্রতিষ্ঠান, কোনো কিছু কাজ করছে না উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘গণমাধ্যম স্বাধীন নেই, নিয়ন্ত্রিত। যারা যেখানে বসে আছে তারা ফ্যাসিস্ট রেজিমকে সার্ভ করছে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণে পেতে হলে একটাই কাজ, সেটা হচ্ছে এই রেজিমকে সরাতে হবে। এই রেজিমকে বিদায় করতে হলে ঐক্যবদ্ধভাবে থাকতে হবে। এটা কোনো দলের সংগ্রাম না, এটা ১৮ কোটি মানুষের মুক্তির সংগ্রাম।
একবার মুক্তিযুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, এবার দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ, এই দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংবিধানে সংযোজন হওয়া নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার বিষয়টিও ছিল ‘ফ্যাসিস্ট রেজিম সরকারের পরিকল্পনার অংশ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই বিধান আদালত কর্তৃক বাতিল করাটা ছিল অসাংবিধানিক, অবৈধভাবে কাজটি করা হয়েছে। এই সরকার যাওয়ার পরে যে রাজনীতি আসবে সেগুলো হবে ভিন্ন রাজনীতি। যে জন্য আমরা ৩১ দফা দিয়েছি সেই রাজনীতির দিকে দেশটাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। সেই ট্রান্সফরম্যাশনাল রিফর্ম করার জন্য, রূপান্তরমূলক পরিবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ভিন্নরূপে গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিকভাবে মানবাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা সব মূল্যবোধের ভিত্তিতে যা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে, সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে, অংশীদার, অংশগ্রহণ করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই কারণে আমরা শেখ হাসিনার পতন চাইছি। শুধু যে একজন ফ্যাসিস্টকে বিদায় করার জন্য এই আন্দোলন, তা নয়।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এনডিএম থিংক ট্যাংক ‘গভর্ন্যান্স অ্যান্ড পলিসি রিসার্চ (জিপিআর) আয়োজিত ‘গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন : নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার, কাঠামোগত সংস্কার এবং প্রধান অংশীজনদের ভূমিকা’ শীর্ষক এই সেমিনার হয়। সেমিনার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক এ কে এম ওয়ারেসুল করিম। এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের সভাপতিত্বে ও এনডিএমের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মমিনুল আমিনের সঞ্চালনায় সেমিনারে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু প্রমুখ বক্তব্য দেন।