ভূমধ্যসাগর পারি দিয়ে অবৈধভাবে ইউরোপযাত্রা করতে গিয়ে মারা যাওয়া অভিবাসীদের ১২ শতাংশই বাংলাদেশি। আজ মঙ্গলবার (৭ মে) রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত হোটেল শেরাটনে অভিবাসন বিষয়ক বৈশ্বিক প্রতিবেদনের মোড়ক উন্মোচন করেন আইওএমের মহাপরিচালক অ্যামি পোপ। এ সময় তিনি এই তথ্য দেন।প্রতিবেদন প্রকাশের সময় আইওএমের মহাপরিচালক অ্যামি পোপ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নিয়মিত অভিবাসন চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে।
দেশগুলোর সমন্বিত চেষ্টা ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে। আইওএমের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট দুর্যোগে লাখ লাখ মানুষ বাস্ত্যচ্যুত হচ্ছে। এশিয়ার যেই দেশগুলো থেকে মানুষ বাস্ত্যচ্যুত হচ্ছে সেই দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। ২০২২ সালে দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশে ১৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
প্রতিবেদনের আরো বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অভিবাসী পাঠানো দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। তবে দেশে বৈধ রেমিট্যান্স আসা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অষ্টম অবস্থানে রয়েছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশে প্রায় ২১.৫০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। আর ২০২০ সালে এসেছিল ২১.৭৫ বিলিয়ন ডলার।
প্রতিবেদন অনুসারে, ভারত বিশ্বের শীর্ষ অভিবাসী প্রেরণকারী দেশ। তারপরে রয়েছে, মেক্সিকো, রাশিয়ান, চীন এবং সিরিয়া। ২০২২ সালে ভারত ১১১.২২ বিলিয়ন, মেক্সিকো ৬১.১০, চীন ৫১.০০, ফিলিপাইন ৩৮.০৫, ফ্রান্স ৩০.০৪, পাকিস্তান ২৯.৮৭ এবং মিশর ২৮.৩৩ বিলিয়ন আয় করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির মূল কারণ দুর্যোগ উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে ভারত ও বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য দুর্যোগ বাস্তুচ্যুতি ঘটেছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশে বন্যা হয়েছিল।
যে বন্যা ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে বিবেচনা করা হয়। দক্ষিণ এশিয়া সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বিধ্বংসী বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া জলবায়ু অভিঘাতের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। দীর্ঘ বর্ষা ঋতু, উষ্ণ আবহাওয়া এবং ক্রমবর্ধমান খরা সবই এই অঞ্চলে ‘নতুন স্বাভাবিক’ হয়ে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতির রূপান্তরমূলক পরিবর্তনের সাক্ষী হিসাবে, অভিবাসন আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য একটি সহায়ক ভূমিকা পালন করে। অভিবাসনের ভবিষ্যৎ নির্ণয়ের জন্য জলবায়ু, জনসংখ্যা, নগরায়ণ ও ডিজিটালাইজেশনের মতো বিভিন্ন বৈশ্বিক রূপান্তরকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ এইগুলোই শেষ পর্যন্ত অভিবাসনের ভবিষ্যৎ নির্ণয় করে।