ঢাকা ০৮:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo গুজব-অপপ্রচার নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুত হচ্ছে ‘কাউন্টার ন্যারেটিভ’ Logo ঈদে খাবারের বিষয়ে যেভাবে সতর্ক থাকবেন Logo ‘এবারের বাজেট জনগণের জীবনমান উন্নয়ন-ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করবে’-অর্থ উপদেষ্টা Logo রং-চং দিয়ে ঈদে ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়কে দেখলে ব্যবস্থা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo বগুড়ায় মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড স্থাপনের দাবিতে শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলন Logo চট্টগ্রামের সাবেক এমপি ছালামের ফ্যাক্টরিতে কেএনএফের পোশাক, আটক ৪ Logo বায়তুল মোকাররমে ঈদুল আজহার ৫ জামাতের সময়সূচি Logo আস্থা ভোটে হেরে পদত্যাগ মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর Logo ফ্যাসিজম পুরোপুরি বিদায়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার: জামায়াতে আমির Logo হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সালাহউদ্দিন আহমদের অভিযোগ

দেশের নিবন্ধিত বাসের ৭০ শতাংশ মেয়াদোত্তীর্ণ

বাংলাদেশে নিবন্ধিত মিনিবাস রয়েছে ২৮ হাজার ৩২২টি। কিন্তু এর মধ্যে ১৯ হাজার ৬৪৬টির বয়স ২০ বছর বা তার চেয়ে বেশি, যা মোট নিবন্ধিত মিনিবাসের ৭০ দশমিক ৪২ শতাংশ। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) মানদণ্ড অনুযায়ী, এসব মিনিবাস মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এগুলোর ‘‌ইকোনমিক লাইফ’ বা অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল শেষ।

মেয়াদোত্তীর্ণ মিনিবাসের একটা বড় অংশ চলাচল করে ঢাকা মহানগরে। ঢাকা মহানগরের জন্য এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ১৫৮টি মিনিবাসের নিবন্ধন দিয়েছে বিআরটিএ। এর মধ্যে ইকোনমিক লাইফ অতিক্রম করেছে ৬ হাজার ৪৭৮টি। পুরনো হয়ে যাওয়া এসব লক্কড়ঝক্কড় বাসে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে রাজধানীবাসী।

শুধু মিনিবাস নয়, বাস (৩২ বা তার চেয়ে বেশি আসন), ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও ট্যাংকারের মতো বাণিজ্যিক পরিবহনেরও ইকোনমিক লাইফ নির্ধারণ করে দিয়েছে বিআরটিএ। বাস-মিনিবাসের ইকোনমিক লাইফ ২০ বছর। ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও ট্যাংকারের ২৫ বছর।

বিআরটিএর তথ্য বলছে, সারা দেশে নিবন্ধিত বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও ট্যাংকার রয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৬১২টি। এর মধ্যে ইকোনমিক লাইফ অতিক্রম করেছে ৭৩ হাজার ৫৭টি। এ হিসাবে দেশের নিবন্ধিত বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও ট্যাংকারের ২৫ দশমিক ২২ শতাংশই মেয়াদোত্তীর্ণ।

পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফিটনেস না থাকা পরিবহনের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। সড়কে বিকল হয়ে তৈরি করে যানজট-বিশৃঙ্খলা। এসব যানবাহনের কারণে পরিবেশ দূষণও বেশি ঘটে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান মনে করেন, ইকোনমিক লাইফ যেকোনো গাড়ির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। কোনো গাড়ির ইকোনমিক লাইফ শেষ হয়ে গেলে ভারি মেরামতের প্রয়োজন পড়ে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মালিকরা তা করেন না। ফলে এসব গাড়ি আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এগুলো পরিবেশের ওপর মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে; দুর্ঘটনা বাড়াচ্ছে; সড়কে বিকল হয়ে যানজট ও বিশৃঙ্খলা বাড়াচ্ছে।

২০২৩ সালের মে মাসে বিআরটিএ এক প্রজ্ঞাপনে বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও ট্যাংকারের ইকোনমিক লাইফ নির্ধারণ করে দেয়। অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত কার্যকরের কথা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ থাকলেও সেটি বাস্তবায়ন করতে পারেনি সংস্থাটি। উল্টো একই বছরের আগস্টে প্রজ্ঞাপনটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, পরিবহন মালিকদের চাপে বিআরটিএ পিছু হটে।

এমন অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার। তিনি বলেন, ‘ইকোনমিক লাইফ অতিক্রম করা ৭৩ হাজার বাস-ট্রাকের একটি তালিকা আমরা এরই মধ্যে তৈরি করেছি। এ তালিকা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, পুলিশ, পরিবহন মালিকসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের দিয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। স্বাধীনতার পর থেকে যত গাড়ি নিবন্ধন হয়েছে, তার হিসাব বিআরটিএর কাছে আছে। কিন্তু এ সময়ে কত গাড়ি অফরোড হয়ে গেছে, তার হিসাব নেই। আমরা উদ্যোগ নিয়েছি, যেন সড়কে চলাচল করা মেয়াদোত্তীর্ণ প্রকৃত গাড়ির সংখ্যা নির্ধারণ করা যায়। এটা করতে পারলে মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া সহজ হবে।’

গুজব-অপপ্রচার নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুত হচ্ছে ‘কাউন্টার ন্যারেটিভ’

দেশের নিবন্ধিত বাসের ৭০ শতাংশ মেয়াদোত্তীর্ণ

আপডেট সময় ০১:০৫:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

বাংলাদেশে নিবন্ধিত মিনিবাস রয়েছে ২৮ হাজার ৩২২টি। কিন্তু এর মধ্যে ১৯ হাজার ৬৪৬টির বয়স ২০ বছর বা তার চেয়ে বেশি, যা মোট নিবন্ধিত মিনিবাসের ৭০ দশমিক ৪২ শতাংশ। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) মানদণ্ড অনুযায়ী, এসব মিনিবাস মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এগুলোর ‘‌ইকোনমিক লাইফ’ বা অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল শেষ।

মেয়াদোত্তীর্ণ মিনিবাসের একটা বড় অংশ চলাচল করে ঢাকা মহানগরে। ঢাকা মহানগরের জন্য এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ১৫৮টি মিনিবাসের নিবন্ধন দিয়েছে বিআরটিএ। এর মধ্যে ইকোনমিক লাইফ অতিক্রম করেছে ৬ হাজার ৪৭৮টি। পুরনো হয়ে যাওয়া এসব লক্কড়ঝক্কড় বাসে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে রাজধানীবাসী।

শুধু মিনিবাস নয়, বাস (৩২ বা তার চেয়ে বেশি আসন), ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও ট্যাংকারের মতো বাণিজ্যিক পরিবহনেরও ইকোনমিক লাইফ নির্ধারণ করে দিয়েছে বিআরটিএ। বাস-মিনিবাসের ইকোনমিক লাইফ ২০ বছর। ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও ট্যাংকারের ২৫ বছর।

বিআরটিএর তথ্য বলছে, সারা দেশে নিবন্ধিত বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও ট্যাংকার রয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৬১২টি। এর মধ্যে ইকোনমিক লাইফ অতিক্রম করেছে ৭৩ হাজার ৫৭টি। এ হিসাবে দেশের নিবন্ধিত বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও ট্যাংকারের ২৫ দশমিক ২২ শতাংশই মেয়াদোত্তীর্ণ।

পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফিটনেস না থাকা পরিবহনের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। সড়কে বিকল হয়ে তৈরি করে যানজট-বিশৃঙ্খলা। এসব যানবাহনের কারণে পরিবেশ দূষণও বেশি ঘটে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান মনে করেন, ইকোনমিক লাইফ যেকোনো গাড়ির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। কোনো গাড়ির ইকোনমিক লাইফ শেষ হয়ে গেলে ভারি মেরামতের প্রয়োজন পড়ে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মালিকরা তা করেন না। ফলে এসব গাড়ি আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এগুলো পরিবেশের ওপর মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে; দুর্ঘটনা বাড়াচ্ছে; সড়কে বিকল হয়ে যানজট ও বিশৃঙ্খলা বাড়াচ্ছে।

২০২৩ সালের মে মাসে বিআরটিএ এক প্রজ্ঞাপনে বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও ট্যাংকারের ইকোনমিক লাইফ নির্ধারণ করে দেয়। অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত কার্যকরের কথা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ থাকলেও সেটি বাস্তবায়ন করতে পারেনি সংস্থাটি। উল্টো একই বছরের আগস্টে প্রজ্ঞাপনটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, পরিবহন মালিকদের চাপে বিআরটিএ পিছু হটে।

এমন অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার। তিনি বলেন, ‘ইকোনমিক লাইফ অতিক্রম করা ৭৩ হাজার বাস-ট্রাকের একটি তালিকা আমরা এরই মধ্যে তৈরি করেছি। এ তালিকা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, পুলিশ, পরিবহন মালিকসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের দিয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। স্বাধীনতার পর থেকে যত গাড়ি নিবন্ধন হয়েছে, তার হিসাব বিআরটিএর কাছে আছে। কিন্তু এ সময়ে কত গাড়ি অফরোড হয়ে গেছে, তার হিসাব নেই। আমরা উদ্যোগ নিয়েছি, যেন সড়কে চলাচল করা মেয়াদোত্তীর্ণ প্রকৃত গাড়ির সংখ্যা নির্ধারণ করা যায়। এটা করতে পারলে মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া সহজ হবে।’