ঢাকা ০৯:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাল্টাপাল্টি হামলায় ৪০ ইসরায়েলি ও ১৬১ ফিলিস্তিনি নিহত

পাল্টাপাল্টি হামলায় ৪০ ইসরায়েলি ও ১৬১ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজা থেকে রকেট হামলার পর ইসরায়েলে এ পর্যন্ত ৪০ জন নিহত হয়েছে। দেশটির জরুরি পরিষেবা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছে, তারা চিকিৎসাসেবা প্রদান চালিয়ে যাচ্ছে এবং লোকজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে্। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এর আগে গাজা থেকে নজিরবিহীন হামলার পর পাঁচ শতাধিক লোক আহত হওয়ার পাশাপাশি দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ২২ বলে জানিয়েছিল। স্থানীয় গণমাধ্যম এখন জানিয়েছে, কমপক্ষে ৪০ জন নিহত এবং ৭০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।

কর্মকর্তারাও এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন। স্থানীয় ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের মতে, গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১৬১ জন নিহত এবং প্রায় এক হাজার আহত হয়েছে। ইসরায়েল এর আগে বলেছিল, তারা ফিলিস্তিনি বিদ্রোহীদের অভূতপূর্ব আক্রমণের অংশ ‘রকেটের ঢেউয়ের’ প্রতিক্রিয়া হিসেবে গাজা উপত্যকায় লক্ষ্যবস্তুতে হামলা শুরু করেছে।

এমন অবস্থায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তার দেশ ‘যুদ্ধের মধ্যে রয়েছে’। ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের দিক থেকে আকস্মিক আক্রমণ শুরুর পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এ বক্তব্য দিয়েছেন। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বেশ কিছু অস্ত্রধারী দক্ষিণ ইসরায়েলে ঢুকে পড়েছে। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে হাজার হাজার রকেট নিক্ষেপের পর এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা যুদ্ধের মধ্যে আছি, এটা কোনো অভিযান নয়, কোনো উত্তেজনা নয়, এটা যুদ্ধ। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ফিলিস্তিন প্রায় আড়াই হাজার রকেট ছুড়েছে ইসরায়েলে। এ ছাড়া সমুদ্র, স্থলপথ ও প্যারাগ্লাইড করে অস্ত্রধারীরা ইসরায়েলে ঢুকে পড়েছে। রকেট হামলার জবাবে ইসরায়েল হামাসের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের দাবি, তারা হামাসের ১৭টি সেনা কম্পাউন্ডে হামলা করেছে।

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স আইডিএফ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে জানিয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত ১৭টি সেনা কম্পাউন্ড আর হামাসের অপারেশনের চারটি হেডকোয়ার্টারে হামলা করেছে। তবে এই দাবির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। হামাস নেতা মোহাম্মদ দেইফ বলেছেন, ‘আমরা বলতে চাই, যথেষ্ট হয়েছে।

অন্যদিকে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, দখলদার সেনা ও বসতি স্থাপনকারীরা যে আতঙ্ক তৈরি করেছে, সেখান থেকে ফিলিস্তিনের জনগণের অধিকার রয়েছে নিজেদের রক্ষা করার। রকেট হামলার পর ইসরায়েল হাজার হাজার সংরক্ষিত সেনাকে তলব করেছে। ইসরায়েলের গণমাধ্যম বলছে, দক্ষিণ ইসরায়েলের বিভিন্ন জায়গায় ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীদের লড়াই চলছে।

হামাস দাবি করেছে, তারা অন্তত ৩৫ জন ইসরায়েলিকে বন্দি করেছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র কোনো মন্তব্য করেননি।ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, তাদের ওপর আক্রমণ করে হামাস ‘অনেক বড়’ ভুল করেছে। ‘প্রতিটি জায়গায় ইসরায়েলি সেনারা তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ইসরায়েল রাষ্ট্র এতে জয়ী হবে।’

গাজা উপত্যকা থেকে এক আকস্মিক হামলা চালানোর পর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের কয়েক ডজন বন্দুকধারী দক্ষিণ ইসরায়েলে ঢুকে এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ফিলিস্তিনি অস্ত্রধারীরা ইসরায়েলের শহর সদেরতের রাস্তায় পথচারীকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করছে। অনলাইনে আরেক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সদেরতের রাস্তায় একদল সশস্ত্র ফিলিস্তিনি নিজেদের কালো পোশাকে ঢেকে পিকআপে করে যাচ্ছে। এ ছাড়া তাদের ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গেও গোলাগুলি করতে দেখা যায়। গাজা থেকে এই শহরের দূরত্ব মাত্র এক মাইল।

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা এখন যুদ্ধাবস্থায় রয়েছে এবং কয়েক ডজন যুদ্ধবিমান গাজায় হামাসের অবস্থান লক্ষ্য করে আকাশপথে হামলা চালাতে যাচ্ছে। ইহুদিদের বিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠান সুকত শেষ হওয়ার পরপরই শনিবার ভোর থেকে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা অঞ্চল থেকে রকেট হামলা শুরু হয়। হামাস গণমাধ্যমে এক সিনিয়র সেনা কমান্ডার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এই অপারেশন শুরুর ঘোষণা দেন, তিনি প্রত্যেক ফিলিস্তিনিকে সব জায়গা থেকে যুদ্ধে নামার আহ্বান জানান।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বেড়ে নিহতের সংখ্যা এখন ২০৪

পাল্টাপাল্টি হামলায় ৪০ ইসরায়েলি ও ১৬১ ফিলিস্তিনি নিহত

আপডেট সময় ০৭:২৬:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩

গাজা থেকে রকেট হামলার পর ইসরায়েলে এ পর্যন্ত ৪০ জন নিহত হয়েছে। দেশটির জরুরি পরিষেবা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছে, তারা চিকিৎসাসেবা প্রদান চালিয়ে যাচ্ছে এবং লোকজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে্। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এর আগে গাজা থেকে নজিরবিহীন হামলার পর পাঁচ শতাধিক লোক আহত হওয়ার পাশাপাশি দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ২২ বলে জানিয়েছিল। স্থানীয় গণমাধ্যম এখন জানিয়েছে, কমপক্ষে ৪০ জন নিহত এবং ৭০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।

কর্মকর্তারাও এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন। স্থানীয় ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের মতে, গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১৬১ জন নিহত এবং প্রায় এক হাজার আহত হয়েছে। ইসরায়েল এর আগে বলেছিল, তারা ফিলিস্তিনি বিদ্রোহীদের অভূতপূর্ব আক্রমণের অংশ ‘রকেটের ঢেউয়ের’ প্রতিক্রিয়া হিসেবে গাজা উপত্যকায় লক্ষ্যবস্তুতে হামলা শুরু করেছে।

এমন অবস্থায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তার দেশ ‘যুদ্ধের মধ্যে রয়েছে’। ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের দিক থেকে আকস্মিক আক্রমণ শুরুর পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এ বক্তব্য দিয়েছেন। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বেশ কিছু অস্ত্রধারী দক্ষিণ ইসরায়েলে ঢুকে পড়েছে। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে হাজার হাজার রকেট নিক্ষেপের পর এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা যুদ্ধের মধ্যে আছি, এটা কোনো অভিযান নয়, কোনো উত্তেজনা নয়, এটা যুদ্ধ। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ফিলিস্তিন প্রায় আড়াই হাজার রকেট ছুড়েছে ইসরায়েলে। এ ছাড়া সমুদ্র, স্থলপথ ও প্যারাগ্লাইড করে অস্ত্রধারীরা ইসরায়েলে ঢুকে পড়েছে। রকেট হামলার জবাবে ইসরায়েল হামাসের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের দাবি, তারা হামাসের ১৭টি সেনা কম্পাউন্ডে হামলা করেছে।

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স আইডিএফ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে জানিয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত ১৭টি সেনা কম্পাউন্ড আর হামাসের অপারেশনের চারটি হেডকোয়ার্টারে হামলা করেছে। তবে এই দাবির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। হামাস নেতা মোহাম্মদ দেইফ বলেছেন, ‘আমরা বলতে চাই, যথেষ্ট হয়েছে।

অন্যদিকে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, দখলদার সেনা ও বসতি স্থাপনকারীরা যে আতঙ্ক তৈরি করেছে, সেখান থেকে ফিলিস্তিনের জনগণের অধিকার রয়েছে নিজেদের রক্ষা করার। রকেট হামলার পর ইসরায়েল হাজার হাজার সংরক্ষিত সেনাকে তলব করেছে। ইসরায়েলের গণমাধ্যম বলছে, দক্ষিণ ইসরায়েলের বিভিন্ন জায়গায় ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীদের লড়াই চলছে।

হামাস দাবি করেছে, তারা অন্তত ৩৫ জন ইসরায়েলিকে বন্দি করেছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র কোনো মন্তব্য করেননি।ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, তাদের ওপর আক্রমণ করে হামাস ‘অনেক বড়’ ভুল করেছে। ‘প্রতিটি জায়গায় ইসরায়েলি সেনারা তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ইসরায়েল রাষ্ট্র এতে জয়ী হবে।’

গাজা উপত্যকা থেকে এক আকস্মিক হামলা চালানোর পর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের কয়েক ডজন বন্দুকধারী দক্ষিণ ইসরায়েলে ঢুকে এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ফিলিস্তিনি অস্ত্রধারীরা ইসরায়েলের শহর সদেরতের রাস্তায় পথচারীকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করছে। অনলাইনে আরেক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সদেরতের রাস্তায় একদল সশস্ত্র ফিলিস্তিনি নিজেদের কালো পোশাকে ঢেকে পিকআপে করে যাচ্ছে। এ ছাড়া তাদের ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গেও গোলাগুলি করতে দেখা যায়। গাজা থেকে এই শহরের দূরত্ব মাত্র এক মাইল।

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা এখন যুদ্ধাবস্থায় রয়েছে এবং কয়েক ডজন যুদ্ধবিমান গাজায় হামাসের অবস্থান লক্ষ্য করে আকাশপথে হামলা চালাতে যাচ্ছে। ইহুদিদের বিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠান সুকত শেষ হওয়ার পরপরই শনিবার ভোর থেকে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা অঞ্চল থেকে রকেট হামলা শুরু হয়। হামাস গণমাধ্যমে এক সিনিয়র সেনা কমান্ডার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এই অপারেশন শুরুর ঘোষণা দেন, তিনি প্রত্যেক ফিলিস্তিনিকে সব জায়গা থেকে যুদ্ধে নামার আহ্বান জানান।