নানা কারণে নরসিংদীর ‘ছন্দা’ সিনেমা হলের ব্যবসায় ধস নেমেছে। ফলে বাধ্য হয়েই কর্তৃপক্ষকে সিনেমা হলটি বিক্রি করতে হচ্ছে। এখন সেই জায়গায় গড়ে উঠবে মাদরাসা।
ইতোমধ্যে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা চুক্তিমূল্যে সিনেমা হলের জায়গাটি ২০ লাখ টাকায় বায়না পত্র করা হয়েছে। মালিকানা পরিবর্তন নিশ্চিত করতে সিনেমা হলের সামনে ব্যানার টানিয়ে দিয়েছে ইদরিসিয়া দারুল কোরআন মাদরাসার কর্তৃপক্ষ।
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার হাসনাবাদ এলাকায় অবস্থিত ‘ছন্দা’ সিনেমা হলটির এক সময় খুব কদর ছিল। বর্তমানে দর্শক বিমুখসহ নানা কারণে ব্যবসায় অনবরত লোকসান হওয়ায় সিনেমা হলটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় মালিক পক্ষ। এজন্যে পাশে অবস্থিত মাদরাসার কাছ তারা এটি বিক্রি করছেন।
রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে হল এলাকার রাস্তার পাশে একটি ব্যানার দেখা যায়। ব্যানারে লেখা, ‘আলহামদুলিল্লাহ ছন্দা সিনেমা হলটি মাদরাসার জন্য বায়না করা হয়েছে। চুক্তিমূল্য ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা, বায়নামূল্য ২০ লাখ টাকা। সদকায়ে জারিয়ার এ মহৎ কাজে আপনাদের আন্তরিক দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি। প্রচারে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা’।
মাদরাসার জিম্মাদার মাওলানা মোকাররম হোসাইন বলেন, দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইদরিসিয়া দারুল কোরআন মাদরাসার কাছে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকায় হলটি বিক্রি হচ্ছে। ক্রয় করার জন্য ২০ লাখ টাকা বায়নাও করা হয়েছে। সিনেমা হলটি ভেঙে একটি দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মির্মাণ করা হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, মাদরাসার পাশেই সিনেমা হল। এতে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করতে অসুবিধা হতো। হলটি ভেঙে মাদরাসা স্থাপন হলে সমাজের উপকার হবে। এতে সবার সহযোগিতা লাগবে।
মাদরাসাটির মোহতামিম মাওলানা মোকাররম হোসাইন বলেন, যখন জানতে পারি মালিক পক্ষ হলটি বিক্রি করবে, তখন স্থানীয় জনসাধারণ ও আমরা হলটি মাদরাসার জন্য ক্রয় করার পরিকল্পনা নেই। মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ধরে ২০ লাখ টাকায় বায়না পত্র করি। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৩ লাখ টাকা জমা পড়েছে। সবার সহযোগিতায় মাদরাসাটির নামে ওই স্থাবর সম্পত্তি ৩৩ শতক জমি ওকফ দলিল করা হবে। আশা করি স্থানীয় ও বিত্তবান সবার সহযোগিতায় একটি দ্বীনি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে।
গত কয়েকবছর ধরে হলটি ভাড়ায় চালাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা সুলতান মিয়া। তিনি বলেন, আসল মালিক সামসুল ইসলাম মানিকের কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা ভাড়ার চুক্তিতে ও ৪শ টাকা হাজিরায় চারজন কর্মচারী নিয়ে কয়েক বছর ধরে এ হলটি পরিচালনা করে আসছি। করোনার পর থেকে এতদিন ধরে লোকসান গুণে হল চালিয়েছি। মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হয়, কর্মচারীদের বেতনসহ নানা খরচ আছে। ফিল্মের জগতে আগে টাটকা টাকা ছিল, এখন নেই। এর আগে ‘প্রিয়তমা’ সিনেমাটিতে বেশ ভালো ব্যবসা হয়েছিল। এখন নানা কারণে ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে। অনলাইনে সিনেমা ছেড়ে দেওয়ায় আমাদের মতো মালিকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাদরাসার কাছে হল বিক্রি হওয়ার কথা শুনেছি। এখানে আমার কিছু বলার নেই। মাদরাসার কাছে বিক্রি হলে আমারও ভালো লাগবে।