ঢাকা ০৪:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৩ মাসে বিএসএফ কর্তৃক ১৫ বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যা

থামছে না ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে প্রাণহানির ঘটনা। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যানে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই ১৫ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকার পিলখানায় ‘বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৪তম সীমান্ত সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয়। আর ৯ মার্চ সকালে যৌথ আলোচনার পর দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে সীমান্ত সম্মেলন শেষ হয়। মূলত ঢাকায় সীমান্ত সম্মেলনে অংশ নেয়া শেষে বিএসএফ প্রধানের ফিরে যাওয়ার পর তাদের মারমুখী অবস্থান বিষ্ময় সৃষ্টি করেছে।

প্রায় প্রতিমাসেই বিএসএফের হাতে প্রাণ হারাচ্ছেন বাংলাদেশিরা। পাশাপাশি নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে অহরহ। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত হত্যার শিকার হয়েছেন ১৫ জনের বেশি। যারমধ্যে গত ৮ দিনেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ, লালমনিরহাট ও নওগাঁ সীমান্তে প্রাণ গেছে অন্তত ৪ জনের। ঢাকায় সীমান্ত সম্মেলনে অংশ নেয়া শেষে বিএসএফ প্রধানের ফিরে যাওয়ার পর তাদের মারমুখী অবস্থান দেখা গেছে।

বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাবে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএসএফের হাতে মারা গেছেন ২০০ এর বেশি বাংলাদেশি। নির্যাতনের শিকার হয়েছেন শতাধিক মানুষ। যার মধ্যে গতবছর ২৮ জনের প্রাণহানি ও ৩১ জন মারাত্মক শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

আসকের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে ২০২০ সালে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশিকে হত্যা করে বিএসএফ। ওই বছর ৪৮ জন বাংলাদেশি প্রাণ হারান, যার মধ্যে ৪২ জন বিএসএফের গুলিতে ও ছয়জন শারীরিক নির্যাতনে মারা যান। এর আগের বছর যে ৪৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মধ্যে ৩৭ জন বিএসএফের গুলিতে এবং ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে নির্যাতনে। গত সাত বছরের মধ্যে বিএসএফের গুলিতে সবচে কম বাংলাদেশির মৃত্যু হয় ২০১৮ সালে ১৪ জনের।

সরকারের হিসেবে বলছে, ২০০৯ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ৯ বছরে বিএসএফের হাতে ২৯১ জন বাংলাদেশি নিহত হন। এ ৯ বছরের মধ্যে সবচে বেশি প্রাণ হারিয়েছেন ২০০৯ সালে। আর সবচে কম ১৭ জন হত্যার শিকার হয়েছেন ২০১৭ সালে।

সরকারি হিসাব অনুসারে ২০০৯ সালে ৬৬ জন, ২০১০ সালে ৫৫, ২০১১ সালে ২৪, ২০১২ সালে ২৪, ২০১৩ সালে ১৮, ২০১৪ সালে ২৪, ২০১৫ সালে ৩৮, ২০১৬ সালে ২৫, ২০১৭ সালে ১৭ জন।

বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ-ভারতের বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠকে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারতের পক্ষ বার বার সীমান্ত হত্যা বন্ধের আশ্বাসও দেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরের কমিটি ঘোষণা

৩ মাসে বিএসএফ কর্তৃক ১৫ বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যা

আপডেট সময় ১২:২৫:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল ২০২৪

থামছে না ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে প্রাণহানির ঘটনা। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যানে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই ১৫ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকার পিলখানায় ‘বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৪তম সীমান্ত সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয়। আর ৯ মার্চ সকালে যৌথ আলোচনার পর দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে সীমান্ত সম্মেলন শেষ হয়। মূলত ঢাকায় সীমান্ত সম্মেলনে অংশ নেয়া শেষে বিএসএফ প্রধানের ফিরে যাওয়ার পর তাদের মারমুখী অবস্থান বিষ্ময় সৃষ্টি করেছে।

প্রায় প্রতিমাসেই বিএসএফের হাতে প্রাণ হারাচ্ছেন বাংলাদেশিরা। পাশাপাশি নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে অহরহ। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত হত্যার শিকার হয়েছেন ১৫ জনের বেশি। যারমধ্যে গত ৮ দিনেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ, লালমনিরহাট ও নওগাঁ সীমান্তে প্রাণ গেছে অন্তত ৪ জনের। ঢাকায় সীমান্ত সম্মেলনে অংশ নেয়া শেষে বিএসএফ প্রধানের ফিরে যাওয়ার পর তাদের মারমুখী অবস্থান দেখা গেছে।

বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাবে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএসএফের হাতে মারা গেছেন ২০০ এর বেশি বাংলাদেশি। নির্যাতনের শিকার হয়েছেন শতাধিক মানুষ। যার মধ্যে গতবছর ২৮ জনের প্রাণহানি ও ৩১ জন মারাত্মক শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

আসকের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে ২০২০ সালে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশিকে হত্যা করে বিএসএফ। ওই বছর ৪৮ জন বাংলাদেশি প্রাণ হারান, যার মধ্যে ৪২ জন বিএসএফের গুলিতে ও ছয়জন শারীরিক নির্যাতনে মারা যান। এর আগের বছর যে ৪৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মধ্যে ৩৭ জন বিএসএফের গুলিতে এবং ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে নির্যাতনে। গত সাত বছরের মধ্যে বিএসএফের গুলিতে সবচে কম বাংলাদেশির মৃত্যু হয় ২০১৮ সালে ১৪ জনের।

সরকারের হিসেবে বলছে, ২০০৯ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ৯ বছরে বিএসএফের হাতে ২৯১ জন বাংলাদেশি নিহত হন। এ ৯ বছরের মধ্যে সবচে বেশি প্রাণ হারিয়েছেন ২০০৯ সালে। আর সবচে কম ১৭ জন হত্যার শিকার হয়েছেন ২০১৭ সালে।

সরকারি হিসাব অনুসারে ২০০৯ সালে ৬৬ জন, ২০১০ সালে ৫৫, ২০১১ সালে ২৪, ২০১২ সালে ২৪, ২০১৩ সালে ১৮, ২০১৪ সালে ২৪, ২০১৫ সালে ৩৮, ২০১৬ সালে ২৫, ২০১৭ সালে ১৭ জন।

বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ-ভারতের বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠকে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারতের পক্ষ বার বার সীমান্ত হত্যা বন্ধের আশ্বাসও দেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।