এজেন্সির সহযোগিতা ছাড়াই ‘নুসুক’ অ্যাপের মাধ্যমে বাংলাদেশিদের জন্য পবিত্র ওমরাহ পালনের সুযোগ রয়েছে জানিয়েছে ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল-দুহাইলান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশিরা এখন কোনো এজেন্সির সহযোগিতা ছাড়াই হজ ও ওমরাহ পালন করতে পারছেন। তারা ‘নুসুক’ অ্যাপের মাধ্যমে পছন্দ মতো প্যাকেজ নির্বাচন করে পরিবহন, আবাসনসহ সবকিছু সহজেই সম্পন্ন করা যাবে। আজ মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর বারিধারাস্থ সৌদি দূতাবাসে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কিং সালমান হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাইড অ্যান্ড রিলিফ সেন্টারের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী সুপারভাইজার ড.আকিল আল-গামদি ও আল-বাসার ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের প্রধান ড. আদিল বিন আবদুল আজিজ। রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল-দুহাইলান বলেন, ‘ওমরাহ ভিসার মেয়াদ ৯০ দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রয়োজনে ৯৬ ঘণ্টার স্টপওভার ভিসা নিয়েও ওমরাহ পালন করতে পারবেন। বাংলাদেশিরা ওমরাহ পালনের পাশাপাশি দেশটির অনন্য সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য উপভোগ করার সুযোগ পাচ্ছেন।
তা ছাড়া যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, শেনজেন নাগরিক বা ভিসাধারীর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ই-ভিসা পাচ্ছেন। আল-দুহাইলান বলেন, ‘ঢাকার ৫০টি স্কুলের ৩০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর চক্ষুসেবা দেওয়া হবে। ‘ইবসার’ স্বেচ্ছাসেবা কার্যক্রমের আওতায় বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা এ সেবা দিচ্ছেন। সৌদি আরবের আল-বাসার ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ও কেএসরিলিফি-এর ত্ত্বাবধানে এসব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
আল-দুহাইলান বলেন, ‘সৌদি আরব বিশ্বের ৯৩টির বেশি দেশে মানবসেবামূলক কার্যক্রম চালু রেখেছে। গত সাত দশকে বিশ্বের শতাধিক দেশকে সৌদি আরব ৯৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা করেছে। বিশেষত নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে এসব সহায়তা করা হয়। প্রবাসী কর্মীদের ভিসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সৌদি দূতাবাস প্রতিদিন পাঁচ হাজারের বেশি ভিসা ইস্যু করছে। ভিসা ইস্যুর কাজ আরো দ্রুত সম্পন্ন করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অবশ্য নানা চক্রের কারণে বাংলাদেশি কর্মীদের ভিসা ইস্যুতে দীর্ঘসূত্রিতা, হয়রানিসহ নানা ঝামেলা পোহাতে হয়।’ এক্ষেত্রে তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরাসরি দাখিল করলে দ্রুততর সময়ে ভিসা ইস্যুতে বিড়ম্বনা কমবে বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমানে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজমান। হজ ও ওমরাহের বাইরেও এখন বাণিজ্য, সংস্কৃতি, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, জনশক্তি ইত্যাদি খাতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে আল-দুহাইলান বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সৌদি আরব বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে সমর্থন দিয়ে আসছে। আমরাও চাই রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তন করুক। রাষ্টদূত জানান, ‘সৌদির অনেক কোম্পানি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। এ বিষয়ে উভয়পক্ষ কাজ করছে।’ এসময় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আগামী বছর বাংলাদেশ সফর করবেন বলেও জানান রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘যুবরাজের ঐতিহাসিক সফরে দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান প্রতিবন্ধকতা দূর হবে।’