ঢাকা ১২:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo নাফ নদীতে আরাকান আর্মির গুলিতে আহত ২ জেলে Logo ঈদে ২০০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বাস মালিকদের Logo আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত: ইসি সচিব Logo অবশেষে চলতি মাসেই ব্রাজিলের দায়িত্ব নিচ্ছেন আনচেলত্তি Logo এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে দলবদ্ধ ধর্ষণ, দ্রুত বিচার দাবি Logo লক্ষ্মীপুরে ১২ দেশের বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার, মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে আটক ২ Logo “মুন্সীগঞ্জ ছাত্র আন্দোলন হত্যাকাণ্ড সহ ১৪ মামলার আসামী চাক্কু মিলন গ্রেফতার” Logo পাবনায় নার্সিং শিক্ষার্থীদের ১ দফা দাবি এবং আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবস বয়কটের ডাক Logo রাজপথের চাপে কোনো বিচার করা সম্ভব নয়: চিফ প্রসিকিউটর Logo র‍্যাব পুনর্গঠনে কমিটি গঠন করা হয়েছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ইফতার খাওয়াটা বড় কথা না, মানুষকে দেওয়াটাই বড়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রমজান মাসে দেশের মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, তার জন্য আমরা মানুষের মাঝে বিনা পয়সায় খাদ্য বিতরণ করছি। আমরা ইফতার পার্টি বাদ দিয়েছি, আমাদের নেতাকর্মী, প্রতিষ্ঠান সবাইকে আহ্বান করেছি, ইফতার পার্টি না করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ইফতার বণ্টন করতে। ইফতার খাওয়াটা বড় কথা না, মানুষকে দেওয়াটাই বড় কথা। আমরা খাওয়ার বিষয়টা বাদ দিয়ে দেওয়ার দিকে মনোযোগ দিয়েছি। মানুষের যাতে কোনরকম কষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেছি।

সোমবার (২৫ মার্চ) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৪’ বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ বিশ্ব মহামারির অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলেছে, অপরদিকে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ-স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশন, আরো কঠিন অবস্থা করে দিয়েছে যে সমস্ত পণ্য আমাদের আমদানি করতে হয়। পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে, মূল্য বেড়ে গেছ, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সমস্যা শুধু আমাদের না, এটা বিশ্বব্যাপী সমস্যা।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা হত্যা করার পর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃতি করা হয়েছিল। ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা এদেশে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, সেই জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ ছিল। জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার হবে না, সে আইন করে তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল, বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে চাকরি দিয়ে, রাজনীতি করার অধিকার দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী যারা মা-বোনদের পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিয়েছিল, তাদের ক্ষমতা বসানো হয়েছিল। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার যে লক্ষ্য, আদর্শ তার থেকে উল্টো পথে যাত্রা শুরু করে। আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো আমরা বিজয় অর্জন করেও, বিজয়ের কথা বলতে পারিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু রাষ্ট্র দেননি, বাংলাদেশ কীভাবে চলবে, সেই পথরেখাও তিনি দেখিয়েছেন। আবার বঙ্গবন্ধুর কারণে স্বাধীন বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়ে বসেনি ভারত। যে উদ্দেশ্যে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, সেই উদ্দেশ্য ও হারানো গৌবর ফিরিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ। ৭৫ পরবর্তী মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের পরিচয় দিতে ভয় পেতেন, বিজয়ী জাতি তাদের পূর্বের কথা বলতে পারত না। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের হারানো গৌরব ফিরিয়ে এনেছে।

স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, যারা স্ব-উদ্যোগে মানুষের কল্যাণ করে যাচ্ছেন, তাদের পুরস্কৃত করাই সব থেকে বড় কথা। এই পুরস্কার শুধু পুরস্কার নয়, আরো অনেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে আগ্রহী হবে, সেটাই বড় কথা। যারা পুরস্কার পেয়েছেন আমি তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা দেশের বিভিন্ন স্তরে মানুষের কল্যাণে কাজ করা এমন আরো লোকদের বের করে পুরস্কৃত করতে চাই।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের এসডিজি বাস্তবায়নের পাশাপাশি আমাদের নিজস্ব লক্ষ্য স্থির করে আমরা আগাচ্ছি। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো। স্বাধীনতার মাসে এটাই আমাদের প্রত্যয়। স্বাধীনতার মাসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই, গণহত্যায় জড়িতদের প্রতি ঘৃণা জানাই। আর যেন এরকম না হয়। এখনও ফিলিস্তিনে গণহত্যা চলছে, আমরা এটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। আমরা চাই এই গণহত্যা বন্ধ হোক। আমরা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে আছি। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। কারণ যুদ্ধের ভয়াবহতা কেমন আমরা জানি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিচারপতি, জাতীয় সংসদ সদস্য, বিদেশি কূটনীতিক, সরকারের পদস্থ সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, কবি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী এবং দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্বসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশ নেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

নাফ নদীতে আরাকান আর্মির গুলিতে আহত ২ জেলে

ইফতার খাওয়াটা বড় কথা না, মানুষকে দেওয়াটাই বড়

আপডেট সময় ০৩:৩৫:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রমজান মাসে দেশের মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, তার জন্য আমরা মানুষের মাঝে বিনা পয়সায় খাদ্য বিতরণ করছি। আমরা ইফতার পার্টি বাদ দিয়েছি, আমাদের নেতাকর্মী, প্রতিষ্ঠান সবাইকে আহ্বান করেছি, ইফতার পার্টি না করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ইফতার বণ্টন করতে। ইফতার খাওয়াটা বড় কথা না, মানুষকে দেওয়াটাই বড় কথা। আমরা খাওয়ার বিষয়টা বাদ দিয়ে দেওয়ার দিকে মনোযোগ দিয়েছি। মানুষের যাতে কোনরকম কষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেছি।

সোমবার (২৫ মার্চ) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৪’ বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ বিশ্ব মহামারির অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলেছে, অপরদিকে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ-স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশন, আরো কঠিন অবস্থা করে দিয়েছে যে সমস্ত পণ্য আমাদের আমদানি করতে হয়। পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে, মূল্য বেড়ে গেছ, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সমস্যা শুধু আমাদের না, এটা বিশ্বব্যাপী সমস্যা।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা হত্যা করার পর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃতি করা হয়েছিল। ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা এদেশে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, সেই জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ ছিল। জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার হবে না, সে আইন করে তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল, বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে চাকরি দিয়ে, রাজনীতি করার অধিকার দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী যারা মা-বোনদের পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিয়েছিল, তাদের ক্ষমতা বসানো হয়েছিল। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার যে লক্ষ্য, আদর্শ তার থেকে উল্টো পথে যাত্রা শুরু করে। আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো আমরা বিজয় অর্জন করেও, বিজয়ের কথা বলতে পারিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু রাষ্ট্র দেননি, বাংলাদেশ কীভাবে চলবে, সেই পথরেখাও তিনি দেখিয়েছেন। আবার বঙ্গবন্ধুর কারণে স্বাধীন বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়ে বসেনি ভারত। যে উদ্দেশ্যে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, সেই উদ্দেশ্য ও হারানো গৌবর ফিরিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ। ৭৫ পরবর্তী মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের পরিচয় দিতে ভয় পেতেন, বিজয়ী জাতি তাদের পূর্বের কথা বলতে পারত না। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের হারানো গৌরব ফিরিয়ে এনেছে।

স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, যারা স্ব-উদ্যোগে মানুষের কল্যাণ করে যাচ্ছেন, তাদের পুরস্কৃত করাই সব থেকে বড় কথা। এই পুরস্কার শুধু পুরস্কার নয়, আরো অনেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে আগ্রহী হবে, সেটাই বড় কথা। যারা পুরস্কার পেয়েছেন আমি তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা দেশের বিভিন্ন স্তরে মানুষের কল্যাণে কাজ করা এমন আরো লোকদের বের করে পুরস্কৃত করতে চাই।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের এসডিজি বাস্তবায়নের পাশাপাশি আমাদের নিজস্ব লক্ষ্য স্থির করে আমরা আগাচ্ছি। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো। স্বাধীনতার মাসে এটাই আমাদের প্রত্যয়। স্বাধীনতার মাসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই, গণহত্যায় জড়িতদের প্রতি ঘৃণা জানাই। আর যেন এরকম না হয়। এখনও ফিলিস্তিনে গণহত্যা চলছে, আমরা এটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। আমরা চাই এই গণহত্যা বন্ধ হোক। আমরা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে আছি। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। কারণ যুদ্ধের ভয়াবহতা কেমন আমরা জানি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিচারপতি, জাতীয় সংসদ সদস্য, বিদেশি কূটনীতিক, সরকারের পদস্থ সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, কবি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী এবং দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্বসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশ নেন।