ঢাকা ১০:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo এনসিপির এজেন্ডা বিএনপির নামে বদনাম করা: ইশরাক Logo বিমান বিধ্বস্তে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে: আইএসপিআর Logo চাঁদাবাজি-সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে শিবিরের বিক্ষোভ Logo ৯ দিনের সফরে ঢাকায় পাকিস্তানের প্রখ্যাত আলেম; জেনে নিন সফরসূচি Logo পরাজিত শক্তির নানা ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা Logo স্থগিত হওয়া এইচএসসি পরীক্ষার পরিবর্তিত সূচি প্রকাশ Logo গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য নীতিমালা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) Logo অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব: মির্জা ফখরুল Logo মাইলস্টোনে আহত-নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন Logo মাইলস্টোনের মূল ফটকে তালা, বাইরে উৎসুক জনতার ভিড়

ইসলামোফোবিয়া মোকাবেলায় জাতিসঙ্ঘে প্রস্তাব পাস

ইসলামভীতি মোকাবেলায় জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদ একটি প্রস্তাবকে ব্যাপকভাবে সমর্থন করেছে। ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আন্তর্জাতিক দিবসে একটি ভোটাভুটির মাধ্যমে ‘ইসলামোফোবিয়া মোকাবেলার পদক্ষেপ’ শীর্ষক প্রস্তাবের পক্ষে ১১৫ দেশ ভোট দিয়েছে। তবে ভোট দানে বিরত ছিল ভারত, ব্রাজিল, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ইউক্রেন, যুক্তরাজ্যসহ ৪৪টি দেশ। প্রস্তাবের বিপক্ষে কোন দেশ ভোট দেয়নি। খবর আনাদোলু ও এনডিটিভির।

সাধারণ পরিষদে উত্থাপিত খসড়া প্রস্তাবে ইসলামোফোবিয়া মোকাবেলায় জাতিসঙ্ঘের একজন বিশেষ দূত নিয়োগ করতে সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে ভারত নীতিগতভাবে এমন বিশেষ দূত নিয়োগের বিষয়ে বিরোধিতা করেছে।

প্রস্তাবে সদস্য দেশগুলোকে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে বিশেষ করে ইসলামফোবিয়াকে টার্গেট করে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাকিস্তানের উদ্যোগে উত্থাপন করা এই খসড়া প্রস্তাবে সহযোগী দেশ হিসেবে ছিল চীন।

১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদ গত শুক্রবার ‘মেজার টু কমব্যাট ইসলামোফোবিয়া’ (ইসলামভীতি মোকাবেলায় পদক্ষেপ) শীর্ষক ওই খসড়া প্রস্তাব গ্রহণ করে।
এদিকে প্রস্তাব নিয়ে নিজের অবস্থানের পক্ষে ভারত জোর দিয়ে বলেছে, সহিংসতা ও বৈষম্যের শিকার হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ ও অন্যান্য ধর্মবিশ্বাসের ব্যাপারেও ‘ধর্মভীতি’ বিরাজমান। তাই শুধু একটি ধর্মের মধ্যে একে সীমাবদ্ধ না রেখে তা অবশ্যই ওই সব ধর্মের পরিপ্রেক্ষিতেও বিবেচনা করতে হবে।

জাতিসঙ্ঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রুচিরা কম্বোজ ইহুদিবিদ্বেষ, খ্রিষ্টান ও ইসলামভীতি দিয়ে অনুপ্রাণিত সব ধরনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানান। তবে জোর দিয়ে তিনি উল্লেখ করেন যে এ ধরনের ভীতি আব্রাহামিক ধর্মের (এক স্রষ্টায় বিশ্বাসী ধর্ম) বাইরেও বিস্তৃত থাকার বিষয়টিকে স্বীকার করে নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। দশকের পর দশক নন-আব্রাহামিক ধর্মের মানুষও যে ‘ধর্মভীতির’ শিকার হয়ে আসছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এটি সমসাময়িক ঘরানার ধর্মভীতি, বিশেষ করে হিন্দু, বৌদ্ধ ও শিখবিরোধী অনুভূতি তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে। ওই প্রস্তাব নিয়ে ভারতের অবস্থানের ব্যাখ্যায় রাষ্ট্রদূত রুচিরা বলেন, দশকের পর দশক নন-আব্রাহামিক ধর্মের মানুষও যে ‘ধর্মভীতির’ শিকার হয়ে আসছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এটি সমসাময়িক ঘরানার ধর্মভীতি, বিশেষ করে হিন্দু, বৌদ্ধ ও শিখবিরোধী অনুভূতি তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে।

ভারত এ বিষয়েও জোর দিয়েছে যে ওই প্রস্তাব গ্রহণ করে এমন নজির স্থাপন করা উচিত হবে না, যাতে কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের ভীতিকে কেন্দ্র করে অসংখ্য প্রস্তাব তোলা যায় ও বিভিন্ন ধর্মীয় শিবিরে জাতিসঙ্ঘের বিভক্ত হয়ে পড়ার শঙ্কার সৃষ্টি হয়। এ রকম ধর্মীয় বিষয়ের ঊর্ধ্বে উঠে নিজের অবস্থান বজায় রাখা জাতিসঙ্ঘের জন্য জরুরি। সেটি না হলে তা বিশ্ববাসীকে একটি পরিবার হিসেবে থাকা এবং শান্তি ও সম্প্রীতির ব্যানারে আমাদের একত্র করার পরিবর্তে বিভক্ত করে ফেলতে পারে। রুচিরা কম্বোজ বলেন, নিঃসন্দেহে ইসলামভীতির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, অন্যান্য ধর্মের মানুষও বৈষম্য সহিংসতার সম্মুখীন। শুধু ইসলামভীতি মোকাবেলায় মনোযোগ নিবদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মবিশ্বাসের সাথে যুক্ত সাদৃশ্যপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলো উপেক্ষা করা হলে তাঁদের মধ্যে ‘বর্জন ও অসমতার’ অনুভূতি অজান্তেই স্থায়ী হতে পারে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২২ সালে ইসলামভীতি নিয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল সাধারণ পরিষদ। সেখানে ইসলামভীতি মোকাবেলায় ১৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর তিন বছর আগে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দু’টি মসজিদে গুলিবর্ষণের ঘটনায় নিহত হন অর্ধশতাধিক মুসল্লি।

জনপ্রিয় সংবাদ

এনসিপির এজেন্ডা বিএনপির নামে বদনাম করা: ইশরাক

ইসলামোফোবিয়া মোকাবেলায় জাতিসঙ্ঘে প্রস্তাব পাস

আপডেট সময় ০১:২৮:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪

ইসলামভীতি মোকাবেলায় জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদ একটি প্রস্তাবকে ব্যাপকভাবে সমর্থন করেছে। ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আন্তর্জাতিক দিবসে একটি ভোটাভুটির মাধ্যমে ‘ইসলামোফোবিয়া মোকাবেলার পদক্ষেপ’ শীর্ষক প্রস্তাবের পক্ষে ১১৫ দেশ ভোট দিয়েছে। তবে ভোট দানে বিরত ছিল ভারত, ব্রাজিল, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ইউক্রেন, যুক্তরাজ্যসহ ৪৪টি দেশ। প্রস্তাবের বিপক্ষে কোন দেশ ভোট দেয়নি। খবর আনাদোলু ও এনডিটিভির।

সাধারণ পরিষদে উত্থাপিত খসড়া প্রস্তাবে ইসলামোফোবিয়া মোকাবেলায় জাতিসঙ্ঘের একজন বিশেষ দূত নিয়োগ করতে সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে ভারত নীতিগতভাবে এমন বিশেষ দূত নিয়োগের বিষয়ে বিরোধিতা করেছে।

প্রস্তাবে সদস্য দেশগুলোকে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে বিশেষ করে ইসলামফোবিয়াকে টার্গেট করে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাকিস্তানের উদ্যোগে উত্থাপন করা এই খসড়া প্রস্তাবে সহযোগী দেশ হিসেবে ছিল চীন।

১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদ গত শুক্রবার ‘মেজার টু কমব্যাট ইসলামোফোবিয়া’ (ইসলামভীতি মোকাবেলায় পদক্ষেপ) শীর্ষক ওই খসড়া প্রস্তাব গ্রহণ করে।
এদিকে প্রস্তাব নিয়ে নিজের অবস্থানের পক্ষে ভারত জোর দিয়ে বলেছে, সহিংসতা ও বৈষম্যের শিকার হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ ও অন্যান্য ধর্মবিশ্বাসের ব্যাপারেও ‘ধর্মভীতি’ বিরাজমান। তাই শুধু একটি ধর্মের মধ্যে একে সীমাবদ্ধ না রেখে তা অবশ্যই ওই সব ধর্মের পরিপ্রেক্ষিতেও বিবেচনা করতে হবে।

জাতিসঙ্ঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রুচিরা কম্বোজ ইহুদিবিদ্বেষ, খ্রিষ্টান ও ইসলামভীতি দিয়ে অনুপ্রাণিত সব ধরনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানান। তবে জোর দিয়ে তিনি উল্লেখ করেন যে এ ধরনের ভীতি আব্রাহামিক ধর্মের (এক স্রষ্টায় বিশ্বাসী ধর্ম) বাইরেও বিস্তৃত থাকার বিষয়টিকে স্বীকার করে নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। দশকের পর দশক নন-আব্রাহামিক ধর্মের মানুষও যে ‘ধর্মভীতির’ শিকার হয়ে আসছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এটি সমসাময়িক ঘরানার ধর্মভীতি, বিশেষ করে হিন্দু, বৌদ্ধ ও শিখবিরোধী অনুভূতি তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে। ওই প্রস্তাব নিয়ে ভারতের অবস্থানের ব্যাখ্যায় রাষ্ট্রদূত রুচিরা বলেন, দশকের পর দশক নন-আব্রাহামিক ধর্মের মানুষও যে ‘ধর্মভীতির’ শিকার হয়ে আসছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এটি সমসাময়িক ঘরানার ধর্মভীতি, বিশেষ করে হিন্দু, বৌদ্ধ ও শিখবিরোধী অনুভূতি তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে।

ভারত এ বিষয়েও জোর দিয়েছে যে ওই প্রস্তাব গ্রহণ করে এমন নজির স্থাপন করা উচিত হবে না, যাতে কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের ভীতিকে কেন্দ্র করে অসংখ্য প্রস্তাব তোলা যায় ও বিভিন্ন ধর্মীয় শিবিরে জাতিসঙ্ঘের বিভক্ত হয়ে পড়ার শঙ্কার সৃষ্টি হয়। এ রকম ধর্মীয় বিষয়ের ঊর্ধ্বে উঠে নিজের অবস্থান বজায় রাখা জাতিসঙ্ঘের জন্য জরুরি। সেটি না হলে তা বিশ্ববাসীকে একটি পরিবার হিসেবে থাকা এবং শান্তি ও সম্প্রীতির ব্যানারে আমাদের একত্র করার পরিবর্তে বিভক্ত করে ফেলতে পারে। রুচিরা কম্বোজ বলেন, নিঃসন্দেহে ইসলামভীতির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, অন্যান্য ধর্মের মানুষও বৈষম্য সহিংসতার সম্মুখীন। শুধু ইসলামভীতি মোকাবেলায় মনোযোগ নিবদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মবিশ্বাসের সাথে যুক্ত সাদৃশ্যপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলো উপেক্ষা করা হলে তাঁদের মধ্যে ‘বর্জন ও অসমতার’ অনুভূতি অজান্তেই স্থায়ী হতে পারে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২২ সালে ইসলামভীতি নিয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল সাধারণ পরিষদ। সেখানে ইসলামভীতি মোকাবেলায় ১৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর তিন বছর আগে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দু’টি মসজিদে গুলিবর্ষণের ঘটনায় নিহত হন অর্ধশতাধিক মুসল্লি।