বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ছাত্রী হলের সীমানা দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসনের সর্বাত্মক চেষ্টা সত্ত্বেও দীর্ঘ সময় ধরে চলে এ সংঘর্ষ।
এ ঘটনায় ৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানান বাকৃবি হেলথ কেয়ারের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. মো. সাদিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, এর মধ্যে একজনের মাথায় সেলাই দেওয়া হয়েছে, একজনের সোল্ডার জয়েন্টে এক্সরে করতে মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। আর বাকি সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম রোকেয়া হলের ভেতরে মারামারির সূত্রপাত ঘটে। পরে তা হলের সামনে বড় আকার ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাশনিক ভবনের সামনে এবং পরবর্তীতে আব্দুল জব্বার মোড়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম রোকেয়া হল ছাত্রলীগ, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং শেখ রোজী জামাল হল ছাত্রলীগ, সভাপতির অনুসারী। বেশ কিছুদিন ধরেই দুই হলের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে ভেতরে ভেতরে ঝামেলা চলছিল। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সীমানা নিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে হল প্রভোস্ট, ওই হলের ছাত্রী নেত্রীবৃন্দ এবং ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ-সম্পাদকসহ একটি আলোচনা সভা হয়।
এর মাঝেই হলের সীমানায় ইফতারের দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে ওই দুই হলের ছাত্রী নেত্রীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতিও হয়। পরে সেখানে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত হন। পরে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি চলতে থাকে। এক পর্যায়ে এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে ছাত্রী হলের ভেতরে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের এক নেতা সভাপতি গ্রুপের এক নেতাকে মারধর করেন। পরে তাদের হলের বাইরে বের করে আনা হলে উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে। হল থেকে ছাত্ররা এসে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের আরও একজনকে ধরে মারধর করেন৷ তখন দুই গ্রুপেরই বিভিন্ন হল থেকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে ভিড় জমান রোকেয়া হলের সামনে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি সর্বাত্মক চেষ্টা করতে থাকে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত করে রোকেয়া হলের সামনে থেকে দুই গ্রুপের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে আবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে ইট পাটকেল ছোড়াছুড়ি শুরু করে দুই গ্রুপ। সভাপতির গ্রুপের সদস্যরা আব্দুল জব্বার মোড়ে অবস্থান নেয় এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতির তৈরি হয়। ব্যর্থ হয়ে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা চলে গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে থাকে।
এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা স্ট্যাম্প, ব্যাট, সাইকেলের চেইন, লাঠিসোঠা এবং দেশি অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। ইফতারের আগ পর্যন্ত দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। তবে ইফতারের পরে আর কোনো উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।