কম দামে মাংস বিক্রি করে সুনাম কুড়ানো রাজধানীর শাহজাহানপুরের ব্যবসায়ী মো. খলিল রমজান মাসে ৫৯৫ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি শুরু করেছেন। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের খলিল গোশত বিতানে গরুর মাংস বিক্রি শুরু করেন তিনি। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
এ বিষয়ে খলিল বলেন, ২৫ রমজান পর্যন্ত ৫৯৫ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রির কার্যক্রম চলবে। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ৫ কেজি কিনতে পারবেন।
তিনি বলেন, রমজানে ক্রেতাদের ৫০০ টাকায় গোশত খাওয়াতে চেয়েছিলাম। তবে গরুর দাম বেশি হওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না। ৫৯৫ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি করছি। এই দরে গোশত বিক্রি করলেও লোকসান হবে না বলে আশা করছি।
গত বছরের ১৯ নভেম্বর ব্যবসায়ী খলিল ৫৯৫ টাকায় প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি শুরু করেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হয়ে ব্যাপক সাড়া ফেলে। তার দেখাদেখি আরও কিছু ব্যবসায়ী ৬০০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি শুরু করেন। পরে ২২ ডিসেম্বর ভোক্তা অধিদপ্তর মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন বৈঠক করে ৬৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়। এ সিদ্ধান্তে বাজারে স্বস্তি ফিরে আসে। তবে যেসব ব্যবসায়ী ন্যায্যমূল্যে মাংস বিক্রি শুরু করেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকেন।
মাংস সিন্ডিকেটের রক্তচক্ষুর রোষে পড়ে ওই ব্যবসায়ীরাই অস্বস্তিতে পড়েন। ওই চক্র গরুর মাংসের বাজারে এতটাই ভীতি ছড়িয়েছে, খুনখারাবি করেও বাজার নিজেদের কবজায় রাখতে চেষ্টা চালাচ্ছে। কম দামের মাংস বেচতে গিয়ে এরই মধ্যে চক্রের হাতে জীবন দিয়েছেন এক বিক্রেতা। কয়েক মাস আগে রাজশাহীতে ন্যায্যমূল্যে গরুর মাংস বিক্রি করায় এক ব্যবসায়ী খুন হওয়ার ঘটনা ঘটে। অন্য ব্যবসায়ীদেরও দেওয়া হচ্ছে হত্যার হুমকি। প্রাণ বাঁচাতে ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চাচ্ছেন।
পাশাপাশি বাজারে অভিযান জোরদার করা, পশুখাদ্যের দাম কমানো, ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজি বন্ধ, হাটে খাজনা কমানো, উন্নত জাতের গরু পালনের অনুমতি, সরকারি ব্যবস্থাপনায় সুলভ মূল্যে সারাবছর ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে মাংস বিক্রি, চামড়া ও দুধের দাম বাড়ানো, ঢাকায় খামারি বাজার স্থাপনসহ চাষিদের নীতি সহায়তা দেওয়ার দাবি তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।