ঢাকা ০১:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জবিতে রান্না দ্রুত শেষ করতে বলায় ছাত্রীকে পিটিয়ে অজ্ঞান

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘ্টনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তাসমিম সানজানা সৃষ্টির মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিককে দেখা নেওয়ার হুমকি দেন তার ছেলে বন্ধু।

বুধবার (৬ মার্চ) রাতে এ ঘটনা ঘটে। গত মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে জবি ছাত্রী হলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইতি খাতুনকে রান্নাঘরে তুচ্ছ ঘটনায় মারধর করে সংগীত বিভাগের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাসমিম সানজানা সৃষ্টি। এ ঘটনায় ছাত্রী হলের হাউজ টিউটর ও প্রোভোস্টের কাছে লিখিত অভিযোগও দেন আহত শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী ইতি খাতুন বলেন, আমি রান্না করছিলাম। পরে চুলা ফাঁকা থাকায় সৃষ্টি আপু ডিম ভাজতে চাইলে ছেড়ে দিই। কিন্তু রান্না শেষ করতে দেরি হওয়ায় ও আমার ক্লাসের সময় হওয়ায় দ্রুত রান্না শেষ করতে বলি। কিন্তু আমি জুনিয়র বলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেন। আমরা মা-বাবাকেও গালি দেন। আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুসি দেন। আমার পরের ঘটনা মনে নেই অজ্ঞান হয়ে যাই।

অভিযুক্ত তাসমিম সানজানা সৃষ্টি বলেন, জুনিয়র হয়ে ইতি বেয়াদবি করে। আমার সামনে তেড়ে আসে। এ জন্য আমি কি বসে থাকবো। আমিও মার খেয়েছি, আমিও অভিযোগ দিইছি।

এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট দীপিকা রানী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। হলের শৃঙ্খলা কমিটিতে এটা তোলা হবে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইতির বক্তব্য নেওয়ার পর অভিযুক্ত সৃষ্টির কাছে ফোন দেন সাংবাদিকরা। এর জেরে সৃষ্টির ছেলে বন্ধু ফাহিম ইশতিয়াক এক সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। নিউজ করলে মামলার হুমকি দেন।

হুমকির ঘটনায় কল রেকর্ডে শোনা যায়, ফাহিম ওই সাংবাদিককে বলেন, এ নিউজ যদি হয়, তুই যদি জড়িত থাকিস তোর খবর আছে। তোর নামে মামলা হবে। তোর লাইফ কীভাবে হেল করতে হয় আমি দেখবো। তোর সাহস কি। এই চু.. পোলা। তুই আজ দেখা করো। তোর খবর আছে।

এ বিষয়ে হুমকিদাতা ফাহিম ইশতিয়াক বলেন, ওই সাংবাদিক আমার বান্ধবীকে কল দেন। সে কান্নাকাটি করে আমাকে সমস্যা সমাধান করতে বলেন। তাই আমি ওই সাংবাদিককে কল দিয়ে কথা বলি। উত্তেজিত হয়ে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে ফেলেছি।

হুমকিদাতা ফাহিম ছাত্রলীগের কর্মী বলে পরিচয় দেন। ফেসবুকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির সঙ্গে ছবি আছে। তবে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি বলেন, এ ছেলে ছাত্রলীগের কোনো রাজনীতিই করে না। তাকে আমি চিনিই না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এটি একটি নিন্দনীয় কাজ। সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত কাজ করবে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগস :

চট্টগ্রামে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় ব্যবসায়ী খুন

জবিতে রান্না দ্রুত শেষ করতে বলায় ছাত্রীকে পিটিয়ে অজ্ঞান

আপডেট সময় ০৩:৫৯:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ ২০২৪

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘ্টনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তাসমিম সানজানা সৃষ্টির মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিককে দেখা নেওয়ার হুমকি দেন তার ছেলে বন্ধু।

বুধবার (৬ মার্চ) রাতে এ ঘটনা ঘটে। গত মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে জবি ছাত্রী হলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইতি খাতুনকে রান্নাঘরে তুচ্ছ ঘটনায় মারধর করে সংগীত বিভাগের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাসমিম সানজানা সৃষ্টি। এ ঘটনায় ছাত্রী হলের হাউজ টিউটর ও প্রোভোস্টের কাছে লিখিত অভিযোগও দেন আহত শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী ইতি খাতুন বলেন, আমি রান্না করছিলাম। পরে চুলা ফাঁকা থাকায় সৃষ্টি আপু ডিম ভাজতে চাইলে ছেড়ে দিই। কিন্তু রান্না শেষ করতে দেরি হওয়ায় ও আমার ক্লাসের সময় হওয়ায় দ্রুত রান্না শেষ করতে বলি। কিন্তু আমি জুনিয়র বলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেন। আমরা মা-বাবাকেও গালি দেন। আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুসি দেন। আমার পরের ঘটনা মনে নেই অজ্ঞান হয়ে যাই।

অভিযুক্ত তাসমিম সানজানা সৃষ্টি বলেন, জুনিয়র হয়ে ইতি বেয়াদবি করে। আমার সামনে তেড়ে আসে। এ জন্য আমি কি বসে থাকবো। আমিও মার খেয়েছি, আমিও অভিযোগ দিইছি।

এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট দীপিকা রানী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। হলের শৃঙ্খলা কমিটিতে এটা তোলা হবে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইতির বক্তব্য নেওয়ার পর অভিযুক্ত সৃষ্টির কাছে ফোন দেন সাংবাদিকরা। এর জেরে সৃষ্টির ছেলে বন্ধু ফাহিম ইশতিয়াক এক সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। নিউজ করলে মামলার হুমকি দেন।

হুমকির ঘটনায় কল রেকর্ডে শোনা যায়, ফাহিম ওই সাংবাদিককে বলেন, এ নিউজ যদি হয়, তুই যদি জড়িত থাকিস তোর খবর আছে। তোর নামে মামলা হবে। তোর লাইফ কীভাবে হেল করতে হয় আমি দেখবো। তোর সাহস কি। এই চু.. পোলা। তুই আজ দেখা করো। তোর খবর আছে।

এ বিষয়ে হুমকিদাতা ফাহিম ইশতিয়াক বলেন, ওই সাংবাদিক আমার বান্ধবীকে কল দেন। সে কান্নাকাটি করে আমাকে সমস্যা সমাধান করতে বলেন। তাই আমি ওই সাংবাদিককে কল দিয়ে কথা বলি। উত্তেজিত হয়ে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে ফেলেছি।

হুমকিদাতা ফাহিম ছাত্রলীগের কর্মী বলে পরিচয় দেন। ফেসবুকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির সঙ্গে ছবি আছে। তবে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি বলেন, এ ছেলে ছাত্রলীগের কোনো রাজনীতিই করে না। তাকে আমি চিনিই না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এটি একটি নিন্দনীয় কাজ। সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত কাজ করবে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।