যৌন হয়রানির অভিযুক্ত চার আসামিকে ছিনিয়ে নিতে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার সামনে সড়ক অবরোধ করেছে থানা আওয়ামী লীগের নেতারা।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বিএসসি, সহ-সভাপতি রাশেদুল হাসান সিরাজ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আলামিন ওরফে লাল বাবুর নেতৃত্বে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় সড়ক অবরোধ করা হয়। পরে জেলা শহর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স এনে আদালতের মাধ্যমে চারজনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কারাগারে পাঠানো যৌন হয়রানির আসামিরা হলেন- আজিজুল হক হৃদয়(২০), রোকন ভুঁইয়া (২৫), আশরাফুল ইসলাম এবং খামারগ্রাম ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক, এনয়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগের নেতা রাশেদ উদ্দিন ভুইয়া।
এনায়েতপুর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্থানীয় নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মামলার অভিযুক্ত আসামিরা এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, সহ-সভাপতি রাশেদুল হাসান সিরাজ ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলামিন ওরফে লাল বাবুর আত্মীয় হওয়ায় তারা শুরু থেকে মামলা না করার জন্য পুলিশ ও বাদীকে নানা ভাবে চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু বাদী তাদের কথা না শোনে মামলা করায় আওয়ামী লীগ নেতারা যৌন হয়রানির চার আসামিকে জোরপূর্বক ছাড়িয়ে নিতে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে থানা ঘেরাও করে। পরে শহর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে আসামিদের নিয়ে যাওয়া হয়।
এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় পুলিশ তিন যুবককে আটক করে। পরে এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা প্রভাষক রাশেদ উদ্দিন ভুইয়া বিষয়টি মীমাংসার জন্য থানায় যান। ওসি বাদীর সঙ্গে যোগসাজশ করে আসামিদের সঙ্গে প্রভাষক রাশেদ উদ্দিন ভুইয়াকেও গ্রেপ্তার করেন। আর এ ঘটনায় স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণ প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করে। আমরাও তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করি।
এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রাশেদুল হাসান সিরাজ বলেন, মেয়েটির বাবা ও চাচা সাংবাদিক হওয়ায় পুলিশের ওপর প্রভাব খাটিয়ে নিরপরাধ চারজনকে আটক করে। তারমধ্যে একজন শিক্ষকও আছেন। আমরা তাদের দ্রুত জামিন করতে আদালতে পাঠিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করেছি। পুলিশ বা সরকারি কাজে বাধা বা আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়নি।
স্থানীয় সাংবাদিক নেতা স্বপন মির্জা বলেন, আমার এক আত্মীয়র মেয়েকে যৌন হয়রানির ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই বিষয়ে মামলা না করতে এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী ও সহ-সভাপতি রাশেদুল হাসান সিরাজসহ অন্যান্যরা আমাদের বারবার চাপ দেন। মামলার পর তারা স্থানীয় লোকজন ডেকে এনে রাস্তা অবরোধ ও থানা ঘেরাও করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।