ঢাকা ০৭:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কলকাতায় ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারধর Logo জিয়াউর রহমানকে ‘নব্য রাজাকার’ আখ্যা দেওয়া নাজমীসহ ২৯ কর্মকর্তার অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ বাতিল Logo একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে: মির্জা ফখরুল Logo নাটোরে জামায়াত কর্মীকে মারধর করে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ Logo জাকসু নির্বাচনে শিবিরের প‍্যানেল ঘোষণা, ভিপি আরিফুল্লাহ, জিএস মাজহার Logo ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে, পরবর্তী সরকারের কোনো পদে আমি থাকব না’ Logo সাদাপাথর লুটে সম্পৃক্ত ৫২ ব্যক্তির নাম প্রকাশ দুদকের Logo নিউজ কাভারে পুলিশি বাধা, লকাবে সাংবাদিক Logo হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাইদীর মামলার সাক্ষী সুখরঞ্জন বালি অভিযোগ Logo বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতার উপর হামলার ঘটনার প্রধান আসামী নেতা গ্রেপ্তার

সব কিছু নির্ভর করছে আগামী কয়েকটা দিনের ওপর : ফখরুল

সব কিছু নির্ভর করছে আগামী কয়েকটা দিনের ওপর : ফখরুল

বাংলাদেশ এক ‘ভয়াবহ’ অবস্থায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ব্রি. জে. (অব.) আ স ম হান্নান শাহর সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা একটা ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছি। সেই অবস্থা থেকে বের হতে না পারলে গোটা জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। আজকে এই বিপদ, এই সংকট শুধু বিএনপির নয়। এই সংকট আজকে সমগ্র জাতির। আমরা ভবিষ্যতে স্বাধীন থাকব কি না, আমার স্বাধীনতা থাকবে কি না, আমার সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না, আমার দেশ করদ রাজ্যে পরিণত হবে কি না, আমার গণতান্ত্রিক অধিকার থাকবে কি না, আমার প্রতিনিধি আমি নির্বাচিত করতে পারবে কি না- তার সব কিছু নির্ভর করছে আগামী কয়েকটা দিনের মধ্যে। ফখরুল বলেন, আমার একটাই কথা … যারা সংগ্রাম করছেন, তাদের আরো বেশি করে শক্তিশালী হয়ে এই আন্দোলনকে, এই সংগ্রামকে রাজপথে বিস্তৃত করে দিয়ে সাধারণ মানুষকে নামিয়ে আনতে হবে।

সাধারণ মানুষকে যখন রাজপথে নামিয়ে আনতে পুরোপুরিভাবে সক্ষম হব, সেদিনই আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, ওরা (ক্ষমতাসীনরা) কতটা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে… এখন দল ভাঙার চেষ্টা করে। দল কখন ভাঙতে যায়, যখন সে বোঝে দুর্বল। আজকে তারা (সরকার) আমাদের দলছুট, বহিষ্কৃত লোকজনকে নিয়ে আবার দল তৈরি করে ঝামেলা করতে চায়। আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলছি, এগুলো করে কোনো লাভ হবে না। মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে। মানুষ একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় সব দলের অংশগ্রহণে। এর বিকল্প তারা কিছু চায় না। আন্দোলন দমানো যাবে না উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব আমরা পালন করছি।

আমরা রাস্তায় নেমেছি, প্রায় এক বছর ধরে রাস্তায় নেমেছি, এর মধ্যে আমাদের ২২ জন তরুণ-যুবক নেতার প্রাণ গেছে রাস্তায় পুলিশের গুলিতে, আমাদের নামে অসংখ্য মামলা হয়েছে, আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী জেলে গেছে। তার পরেও আমাদেরকে কখনো দমিয়ে রাখতে পারছে না, পারবেও না। এখন আমাদের রোড মার্চ হচ্ছে, এতে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ হচ্ছে কি না আপনারা দেখেন। আমি নিজে একটা রোড মার্চে ছিলাম বগুড়া থেকে রাজশাহীতে… রাস্তার দুই ধারে অগণিত পুরুষ-মহিলা-নারী-শিশু, স্কুলের ছেলে-মেয়েরা স্কুল থেকে বেরিয়ে আসছে… তারা এই রোড মার্চকে স্বাগত জানাচ্ছে এবং এই সরকারের পতন চাচ্ছে। সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ওরা দেশকে ভয়াবহ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। আলজাজিরা মিডিয়ার করেসপডেন্ট, তার সঙ্গে আমার কথা হচ্ছিল কয়েক দিন আগে। তিনি বলছেন যে আমি তো এখানে আছি, আসছি …কোনো দিন ভাবিনি যে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাব। এখন চিন্তা করতে শুরু করেছি যে বাংলাদেশে থাকব না। কেন?

তিনি বলেন, আমাদের বহু বুদ্ধিজীবী এখন টেলিভিশনের টক শোতে আসেন না। কারণ কী? তাদের ভয় দেখানো হয় যে আপনারা যদি গিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাহলে আপনাদের বিপদ হবে। বিপদের মধ্যে যে সবচেয়ে টাচি জায়গায় আঘাত করবে তারা। ছেলে-মেয়েরা যদি স্কুল-কলেজে পড়ে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, হুমকি দেওয়া হয় অদৃশ্য জায়গা থেকে… এই রাষ্ট্রে আমরা বাস করছি। আজকে দুর্ভাগ্যজনক হলো- আমরা যারা স্বাধীনতাযুদ্ধে জড়িত ছিলাম আমরা এটা ভাবতেও পারি না যে আমাদেরকে এখন গার্ডেডওয়েতে কথা বলতে হবে, আমাদের ভাবতে হয়- এখন কোথায় যাব, না যাব, কার বিয়েতে যাব, অনুষ্ঠানে যাব কি যাব না… এই বিষয়গুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

সংগঠনের সভাপতি গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনাসভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, শ্রমবিষয়ক সহসম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, কৃষক দলের সহসভাপতি ওমর ফারুক শাফিন, প্রয়াত আ স ম হান্নান শাহর ছেলে জেলা সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান, স্থানীয় নেতা খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা, সাংবাদিক রাশেদুল হক বক্তব্য দেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

কলকাতায় ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারধর

সব কিছু নির্ভর করছে আগামী কয়েকটা দিনের ওপর : ফখরুল

আপডেট সময় ০৫:১৬:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বাংলাদেশ এক ‘ভয়াবহ’ অবস্থায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ব্রি. জে. (অব.) আ স ম হান্নান শাহর সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা একটা ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছি। সেই অবস্থা থেকে বের হতে না পারলে গোটা জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। আজকে এই বিপদ, এই সংকট শুধু বিএনপির নয়। এই সংকট আজকে সমগ্র জাতির। আমরা ভবিষ্যতে স্বাধীন থাকব কি না, আমার স্বাধীনতা থাকবে কি না, আমার সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না, আমার দেশ করদ রাজ্যে পরিণত হবে কি না, আমার গণতান্ত্রিক অধিকার থাকবে কি না, আমার প্রতিনিধি আমি নির্বাচিত করতে পারবে কি না- তার সব কিছু নির্ভর করছে আগামী কয়েকটা দিনের মধ্যে। ফখরুল বলেন, আমার একটাই কথা … যারা সংগ্রাম করছেন, তাদের আরো বেশি করে শক্তিশালী হয়ে এই আন্দোলনকে, এই সংগ্রামকে রাজপথে বিস্তৃত করে দিয়ে সাধারণ মানুষকে নামিয়ে আনতে হবে।

সাধারণ মানুষকে যখন রাজপথে নামিয়ে আনতে পুরোপুরিভাবে সক্ষম হব, সেদিনই আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, ওরা (ক্ষমতাসীনরা) কতটা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে… এখন দল ভাঙার চেষ্টা করে। দল কখন ভাঙতে যায়, যখন সে বোঝে দুর্বল। আজকে তারা (সরকার) আমাদের দলছুট, বহিষ্কৃত লোকজনকে নিয়ে আবার দল তৈরি করে ঝামেলা করতে চায়। আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলছি, এগুলো করে কোনো লাভ হবে না। মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে। মানুষ একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় সব দলের অংশগ্রহণে। এর বিকল্প তারা কিছু চায় না। আন্দোলন দমানো যাবে না উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব আমরা পালন করছি।

আমরা রাস্তায় নেমেছি, প্রায় এক বছর ধরে রাস্তায় নেমেছি, এর মধ্যে আমাদের ২২ জন তরুণ-যুবক নেতার প্রাণ গেছে রাস্তায় পুলিশের গুলিতে, আমাদের নামে অসংখ্য মামলা হয়েছে, আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী জেলে গেছে। তার পরেও আমাদেরকে কখনো দমিয়ে রাখতে পারছে না, পারবেও না। এখন আমাদের রোড মার্চ হচ্ছে, এতে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ হচ্ছে কি না আপনারা দেখেন। আমি নিজে একটা রোড মার্চে ছিলাম বগুড়া থেকে রাজশাহীতে… রাস্তার দুই ধারে অগণিত পুরুষ-মহিলা-নারী-শিশু, স্কুলের ছেলে-মেয়েরা স্কুল থেকে বেরিয়ে আসছে… তারা এই রোড মার্চকে স্বাগত জানাচ্ছে এবং এই সরকারের পতন চাচ্ছে। সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ওরা দেশকে ভয়াবহ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। আলজাজিরা মিডিয়ার করেসপডেন্ট, তার সঙ্গে আমার কথা হচ্ছিল কয়েক দিন আগে। তিনি বলছেন যে আমি তো এখানে আছি, আসছি …কোনো দিন ভাবিনি যে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাব। এখন চিন্তা করতে শুরু করেছি যে বাংলাদেশে থাকব না। কেন?

তিনি বলেন, আমাদের বহু বুদ্ধিজীবী এখন টেলিভিশনের টক শোতে আসেন না। কারণ কী? তাদের ভয় দেখানো হয় যে আপনারা যদি গিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাহলে আপনাদের বিপদ হবে। বিপদের মধ্যে যে সবচেয়ে টাচি জায়গায় আঘাত করবে তারা। ছেলে-মেয়েরা যদি স্কুল-কলেজে পড়ে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, হুমকি দেওয়া হয় অদৃশ্য জায়গা থেকে… এই রাষ্ট্রে আমরা বাস করছি। আজকে দুর্ভাগ্যজনক হলো- আমরা যারা স্বাধীনতাযুদ্ধে জড়িত ছিলাম আমরা এটা ভাবতেও পারি না যে আমাদেরকে এখন গার্ডেডওয়েতে কথা বলতে হবে, আমাদের ভাবতে হয়- এখন কোথায় যাব, না যাব, কার বিয়েতে যাব, অনুষ্ঠানে যাব কি যাব না… এই বিষয়গুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

সংগঠনের সভাপতি গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনাসভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, শ্রমবিষয়ক সহসম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, কৃষক দলের সহসভাপতি ওমর ফারুক শাফিন, প্রয়াত আ স ম হান্নান শাহর ছেলে জেলা সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান, স্থানীয় নেতা খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা, সাংবাদিক রাশেদুল হক বক্তব্য দেন।