ঢাকা ০৭:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিন সেনা কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড দিল মিয়ানমারের

  • ফখরুল ইসলাম
  • আপডেট সময় ০৯:৩০:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • 191

তিন সেনা কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড দিল মিয়ানমারের

চীন-মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত একটি শহরের দখল ছেড়ে বিদ্রোহীদের কাছে আত্মসমর্পণের দায়ে তিন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে মিয়ানমার সামরিক জান্তা। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহরটির দখল ছাড়ায় ভূমিকা রাখা আরও তিন সেনা কর্মকর্তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমারের সামরিক সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি খবরটি দিয়েছে। কয়েক মাস যুদ্ধের পর গত জানুয়ারিতে শান রাজ্যের লাউক্কাই শহরের দখল ছেড়ে দিয়ে শত শত জান্তা সেনাসহ জাতিগত বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সমন্বিত গ্রুপ থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের কাছে আত্মসমর্পণ করেন ওই সেনা কর্মকর্তারা।

মিয়ানমার জান্তার ইতিহাসে এই আত্মসমর্পণকে অন্যতম বড় ক্ষতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। সমর্থকদের মধ্যে জান্তা নেতৃত্বের প্রতি সমালোচনা আরও তীব্র হয়েছে এ ঘটনায়।

আত্মসমর্পণের পর বিদ্রোহী অ্যালায়েন্স জান্তা অফিসার ও তাদের সৈন্যদের এলাকা ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সামরিক সূত্র এএফপিকে বলেছে, লাউক্কাই শহরের কমান্ডারসহ তিনজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেলকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্য একটি সামরিক সূত্র এই শাস্তি নিশ্চিত করেছে। লাউক্কাইতে আত্মসমর্পণে ভূমিকা রাখার জন্য অন্য তিন ব্রিগেডিয়ার জেনারেলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে সূত্র দুটি জানিয়েছে।

মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), আরাকান আর্মি (এএ) এবং তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) সমন্বয়ে গঠিত থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের দখলকৃত বৃহত্তম শহর হচ্ছে এই লাউক্কাই।

গত অক্টোবরের শেষ দিকে উত্তর মিয়ানমারের একটি অংশজুড়ে আক্রমণ শুরু করে এই অ্যালায়েন্স। এরপর ধারাবাহিকভাবে চীনের সঙ্গে সীমান্তে বেশ কয়েকটি শহর এবং লাভজনক বাণিজ্য কেন্দ্র দখল করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর এই জোট।

মিয়ানমারে ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। এরপর থেকেই দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে চলছে সংঘাত। গত তিন বছরে গৃহযুদ্ধ মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে দেশটির অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থায়।

এরই মধ্যে দেশের বহু এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা সরকার। ক্রমেই বিদ্রোহী জোট শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ২০২৩ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঐক্য হলে যুদ্ধ গতি পায়। জান্তা বাহিনীর স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল (এসএসি) বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক পরাজয়ের স্বাদ পেতে থাকে। এতে জান্তা বাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা ও মনোবল ভেঙে পড়েছে, অভিজাত বিভাগগুলোর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য বিনষ্ট হয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ চালু করলো পাকিস্তান

তিন সেনা কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড দিল মিয়ানমারের

আপডেট সময় ০৯:৩০:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

চীন-মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত একটি শহরের দখল ছেড়ে বিদ্রোহীদের কাছে আত্মসমর্পণের দায়ে তিন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে মিয়ানমার সামরিক জান্তা। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহরটির দখল ছাড়ায় ভূমিকা রাখা আরও তিন সেনা কর্মকর্তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমারের সামরিক সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি খবরটি দিয়েছে। কয়েক মাস যুদ্ধের পর গত জানুয়ারিতে শান রাজ্যের লাউক্কাই শহরের দখল ছেড়ে দিয়ে শত শত জান্তা সেনাসহ জাতিগত বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সমন্বিত গ্রুপ থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের কাছে আত্মসমর্পণ করেন ওই সেনা কর্মকর্তারা।

মিয়ানমার জান্তার ইতিহাসে এই আত্মসমর্পণকে অন্যতম বড় ক্ষতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। সমর্থকদের মধ্যে জান্তা নেতৃত্বের প্রতি সমালোচনা আরও তীব্র হয়েছে এ ঘটনায়।

আত্মসমর্পণের পর বিদ্রোহী অ্যালায়েন্স জান্তা অফিসার ও তাদের সৈন্যদের এলাকা ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সামরিক সূত্র এএফপিকে বলেছে, লাউক্কাই শহরের কমান্ডারসহ তিনজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেলকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্য একটি সামরিক সূত্র এই শাস্তি নিশ্চিত করেছে। লাউক্কাইতে আত্মসমর্পণে ভূমিকা রাখার জন্য অন্য তিন ব্রিগেডিয়ার জেনারেলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে সূত্র দুটি জানিয়েছে।

মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), আরাকান আর্মি (এএ) এবং তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) সমন্বয়ে গঠিত থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের দখলকৃত বৃহত্তম শহর হচ্ছে এই লাউক্কাই।

গত অক্টোবরের শেষ দিকে উত্তর মিয়ানমারের একটি অংশজুড়ে আক্রমণ শুরু করে এই অ্যালায়েন্স। এরপর ধারাবাহিকভাবে চীনের সঙ্গে সীমান্তে বেশ কয়েকটি শহর এবং লাভজনক বাণিজ্য কেন্দ্র দখল করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর এই জোট।

মিয়ানমারে ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। এরপর থেকেই দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে চলছে সংঘাত। গত তিন বছরে গৃহযুদ্ধ মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে দেশটির অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থায়।

এরই মধ্যে দেশের বহু এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা সরকার। ক্রমেই বিদ্রোহী জোট শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ২০২৩ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঐক্য হলে যুদ্ধ গতি পায়। জান্তা বাহিনীর স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল (এসএসি) বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক পরাজয়ের স্বাদ পেতে থাকে। এতে জান্তা বাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা ও মনোবল ভেঙে পড়েছে, অভিজাত বিভাগগুলোর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য বিনষ্ট হয়েছে।