ঢাকা ১০:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যশোরে যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

‘আমি ঘরে ভাত খাচ্ছিলাম। হঠাৎ চিৎকার শুনে বাড়ির বাইরে রাস্তায় বের হয়ে দেখি আমার ভাইয়ের হাত কেটে ফেলেছে, পা কেটে ফেলেছে, পেটে কুপিয়ে নাড়িভুড়ি বের করে ফেলে রেখে চলে গেছে।’ কাঁদতে কাঁদতে এভাবেই যুবলীগ নেতা মুরাদ হোসেনের হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিচ্ছিলেন তার ভাই বিএম ফরহাদ রেজা।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১০টার দিকে যশোরের অভয়নগরের সরদারপাড়ায় নিজের বাড়ি থেকে দেড়শ গজ দূরে রাস্তায় নির্মমভাবে যুবলীগ নেতা মুরদা হোসেনকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। মুরাদ হোসেন ওই এলাকার সাহাবুল ইসলামের ছেলে। তিনি নওয়াপাড়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।

নিহতের ভাই বিএম ফরহাদ হোসেন বলেন, আমার ভাই রবিন অধিকারী বেচার সঙ্গে চলাফেরা করতো। তাছাড়া যুবলীগের পদ-পদবী নিয়ে এলাকার কিছু সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। আমার ভাই নওয়াপাড়া বন্দরের একটি ঘাটের সরদার। ওর উপর এর আগেও দুইবার হামলা হয়েছে। এলাকার কিছু সন্ত্রাসীরা কিছুদিন আগে প্রকাশ্যে ওকে হত্যা করার হুমকিও দেয়। অনেকদিন ধরে আমার ভাইয়ের ক্ষতি করার জন্য চেষ্টা করছিল, শেষমেশ গতকাল রাত ১০টার দিকে মুরাদ বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিল। এমন সময় রাস্তায় আমার ভাইকে একা পেয়ে এলাকার কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠানে বসে বুকফাটা আহাজারি করছেন নিহত যুবলীগ নেতা মুরাদ হোসেনের বড় বোন লিলিমা বেগম। পাশেই বসে অঝরে কাঁদছিলেন নিহতের বাবা বৃদ্ধ সাহাবুল ইসলাম। দাদার কোলে বসে নির্বাক হয়ে মায়ের কান্নাঝরা মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে মুরাদ হোসেনের তিন মাস বয়সী শিশু। তৃতীয় শ্রেণীতে পড়া বড় ছেলেও মায়ের বুকে মাথা দিয়ে কেঁদেই যাচ্ছে। গোটা এলাকা জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

নিহতের বড় বোন লিলিমা বেগম বলেন, আমার ভাই অ্যাম্বুলেন্সেই মরার আগে সবার নাম বলে গেছে। কারা কারা ওরে মেরেছে সবকিছু বলে গেছে। ওরা চৌদ্দ জন মিলে আমার ভাইকে মেরেছে। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।

নিহতের বাবা সাহাবুল ইসলান বলেন, রাজনৈতিক পদ-পদবি কারণে আজকে আমার ছেলেটাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো। আমার ছেলে কাছে এই এলাকার কেউ বিপদে পড়ে এসে কোনোদিন ফিরে যায়নি। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই।

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিকুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত মরদেহ খুলনায় রয়েছে। ময়নাতদন্ত হওয়ার পর মরদেহ আসবে। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ বা মামলা করা হয়নি। আমাদের তদন্ত চলছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

৪৯ দিনে হাফেজ হওয়া সেই শিশুর ইচ্ছাপূরণ করলেন শায়েখ আহমাদুল্লাহ

যশোরে যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

আপডেট সময় ০৩:০৫:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

‘আমি ঘরে ভাত খাচ্ছিলাম। হঠাৎ চিৎকার শুনে বাড়ির বাইরে রাস্তায় বের হয়ে দেখি আমার ভাইয়ের হাত কেটে ফেলেছে, পা কেটে ফেলেছে, পেটে কুপিয়ে নাড়িভুড়ি বের করে ফেলে রেখে চলে গেছে।’ কাঁদতে কাঁদতে এভাবেই যুবলীগ নেতা মুরাদ হোসেনের হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিচ্ছিলেন তার ভাই বিএম ফরহাদ রেজা।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১০টার দিকে যশোরের অভয়নগরের সরদারপাড়ায় নিজের বাড়ি থেকে দেড়শ গজ দূরে রাস্তায় নির্মমভাবে যুবলীগ নেতা মুরদা হোসেনকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। মুরাদ হোসেন ওই এলাকার সাহাবুল ইসলামের ছেলে। তিনি নওয়াপাড়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।

নিহতের ভাই বিএম ফরহাদ হোসেন বলেন, আমার ভাই রবিন অধিকারী বেচার সঙ্গে চলাফেরা করতো। তাছাড়া যুবলীগের পদ-পদবী নিয়ে এলাকার কিছু সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। আমার ভাই নওয়াপাড়া বন্দরের একটি ঘাটের সরদার। ওর উপর এর আগেও দুইবার হামলা হয়েছে। এলাকার কিছু সন্ত্রাসীরা কিছুদিন আগে প্রকাশ্যে ওকে হত্যা করার হুমকিও দেয়। অনেকদিন ধরে আমার ভাইয়ের ক্ষতি করার জন্য চেষ্টা করছিল, শেষমেশ গতকাল রাত ১০টার দিকে মুরাদ বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিল। এমন সময় রাস্তায় আমার ভাইকে একা পেয়ে এলাকার কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠানে বসে বুকফাটা আহাজারি করছেন নিহত যুবলীগ নেতা মুরাদ হোসেনের বড় বোন লিলিমা বেগম। পাশেই বসে অঝরে কাঁদছিলেন নিহতের বাবা বৃদ্ধ সাহাবুল ইসলাম। দাদার কোলে বসে নির্বাক হয়ে মায়ের কান্নাঝরা মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে মুরাদ হোসেনের তিন মাস বয়সী শিশু। তৃতীয় শ্রেণীতে পড়া বড় ছেলেও মায়ের বুকে মাথা দিয়ে কেঁদেই যাচ্ছে। গোটা এলাকা জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

নিহতের বড় বোন লিলিমা বেগম বলেন, আমার ভাই অ্যাম্বুলেন্সেই মরার আগে সবার নাম বলে গেছে। কারা কারা ওরে মেরেছে সবকিছু বলে গেছে। ওরা চৌদ্দ জন মিলে আমার ভাইকে মেরেছে। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।

নিহতের বাবা সাহাবুল ইসলান বলেন, রাজনৈতিক পদ-পদবি কারণে আজকে আমার ছেলেটাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো। আমার ছেলে কাছে এই এলাকার কেউ বিপদে পড়ে এসে কোনোদিন ফিরে যায়নি। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই।

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিকুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত মরদেহ খুলনায় রয়েছে। ময়নাতদন্ত হওয়ার পর মরদেহ আসবে। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ বা মামলা করা হয়নি। আমাদের তদন্ত চলছে।