ঢাকা ০২:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ৪ আগষ্ট স্মরণে পালিত হয়েছে রক্তাক্ত মুন্সিগঞ্জ দিবস Logo ভারতের ওপর আবারো ‘উল্লেখযোগ্য হারে’ শুল্কারোপের হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের Logo “১/১১ এর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে”, বিতর্কিত স্ট্যাটাসটি ডিলিট করলেন মাহফুজ আলম Logo ৪ আগষ্ট স্মরণে পালিত হয়েছে রক্তাক্ত মুন্সিগঞ্জ দিবস Logo নতুন সংবিধান হলেই পরিবর্তন আসবে, এমন নয়: আসিফ নজরুল Logo ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন করে জুলাইয়ের চেতনার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে Logo জুলাই শহীদদের স্মরণে টংগিবাড়িতে ছাত্রশিবিরের বৃক্ষরোপণ অভিযান Logo জবিতে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন শহীদ সাজিদের মা Logo এক-এগারোর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে: মাহফুজ আলম Logo দেশ নিয়ে একটা ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চলছে: মির্জা ফখরুল

মধুর জিআই সনদ ভারতের দখলে, কিছু জানেন না সুন্দরবনের কর্তারা

টাঙ্গাইল শাড়ির পর এবার সুন্দরবনের মধুর ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বত্ব পেল ভারত। সুন্দরবনের আয়তন ও মধু উৎপাদন সবই বাংলাদেশ অংশে বেশি। তারপরও নিজেদের পণ্য হিসেবে মধুর আন্তর্জাতিক জিআই সনদ পেল ভারত।

অথচ জিআই সনদের বিষয়ে কিছুই জানে না বাংলাদেশ বন বিভাগ। এ নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ সুন্দরবন থেকে মধু আহরণ ও বিপণনের সঙ্গে জড়িতরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বহীনতার কারণে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ, আর ভারত এককভাবে হাতিয়ে নিয়েছে মধুর জিআই সনদ।

সুন্দরবনের মোট আয়তন ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশের বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা অংশে রয়েছে ৬ হাজার ৫১৭ বর্গ কিলোমিটার অর্থাৎ মোট আয়তনের ৬৬ ভাগ। আর ৩ হাজার ৪৮৩ বর্গ কিলোমিটার পড়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও উত্তর ২৪ পরগনায়, যা মোট আয়তনের ৩৪ ভাগ। বাংলাদেশ অংশে প্রতিবছর মধু আহরণ হয় প্রায় ৩০০ টন। আর ভারতে গত ৭ বছরে গড়ে ১৫৭ টন। সব বিবেচনায় বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বন উন্নয়ন করপোরেশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জিআই পণ্য হিসেবে মধুর আন্তর্জাতিক সনদ পেয়েছে ভারত।

মোংলা জয়মনি এলাকার বাসিন্দারা জানান, আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গহিন বনে গিয়ে মধু আহরণ করি, যা থেকে বন বিভাগের রাজস্ব দিয়ে আমরা কিছু টাকা উপার্জন করি। তবে মধুর ন্যায্যমূল্য আমরা পাই না। জিআই সনদ বাংলাদেশের পাওয়া গেলে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের পণ্য হিসেবে রপ্তানি হলে আমরা আরও বেশি মূল্য পেতাম।

মোংলা উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি শাজাহান ছিদ্দিকি বলছেন, বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বহীনতার কারণে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ, আর ভারত এককভাবে হাতিয়ে নিয়েছে মধুর জিআই সনদ। তাই যারা দায়িত্ব অবহেলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

সুন্দরবন খুলনা বিভাগের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো জানান, জিআই সনদ সম্পর্কে তাদের কিছু জানানো হয়নি। বাংলাদেশ আবেদন করেছে কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তর হয়ত বলতে পারবে।

জিআই সনদ নেওয়ার উদ্দেশ্য হলো, আন্তর্জাতিক মহলে পণ্যের ব্র্যান্ডিং, যা থাকলে ক্রেতারা সহজে বিশ্বাস করে এটি আসল পণ্য। তাই বাংলাদেশ সুন্দরবনের মধুর জিআই সনদ পাওয়ার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, এমনটা দাবি এ খাত-সংশ্লিষ্টদের।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

৪ আগষ্ট স্মরণে পালিত হয়েছে রক্তাক্ত মুন্সিগঞ্জ দিবস

মধুর জিআই সনদ ভারতের দখলে, কিছু জানেন না সুন্দরবনের কর্তারা

আপডেট সময় ০৪:৪৮:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

টাঙ্গাইল শাড়ির পর এবার সুন্দরবনের মধুর ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বত্ব পেল ভারত। সুন্দরবনের আয়তন ও মধু উৎপাদন সবই বাংলাদেশ অংশে বেশি। তারপরও নিজেদের পণ্য হিসেবে মধুর আন্তর্জাতিক জিআই সনদ পেল ভারত।

অথচ জিআই সনদের বিষয়ে কিছুই জানে না বাংলাদেশ বন বিভাগ। এ নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ সুন্দরবন থেকে মধু আহরণ ও বিপণনের সঙ্গে জড়িতরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বহীনতার কারণে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ, আর ভারত এককভাবে হাতিয়ে নিয়েছে মধুর জিআই সনদ।

সুন্দরবনের মোট আয়তন ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশের বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা অংশে রয়েছে ৬ হাজার ৫১৭ বর্গ কিলোমিটার অর্থাৎ মোট আয়তনের ৬৬ ভাগ। আর ৩ হাজার ৪৮৩ বর্গ কিলোমিটার পড়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও উত্তর ২৪ পরগনায়, যা মোট আয়তনের ৩৪ ভাগ। বাংলাদেশ অংশে প্রতিবছর মধু আহরণ হয় প্রায় ৩০০ টন। আর ভারতে গত ৭ বছরে গড়ে ১৫৭ টন। সব বিবেচনায় বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বন উন্নয়ন করপোরেশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জিআই পণ্য হিসেবে মধুর আন্তর্জাতিক সনদ পেয়েছে ভারত।

মোংলা জয়মনি এলাকার বাসিন্দারা জানান, আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গহিন বনে গিয়ে মধু আহরণ করি, যা থেকে বন বিভাগের রাজস্ব দিয়ে আমরা কিছু টাকা উপার্জন করি। তবে মধুর ন্যায্যমূল্য আমরা পাই না। জিআই সনদ বাংলাদেশের পাওয়া গেলে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের পণ্য হিসেবে রপ্তানি হলে আমরা আরও বেশি মূল্য পেতাম।

মোংলা উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি শাজাহান ছিদ্দিকি বলছেন, বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বহীনতার কারণে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ, আর ভারত এককভাবে হাতিয়ে নিয়েছে মধুর জিআই সনদ। তাই যারা দায়িত্ব অবহেলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

সুন্দরবন খুলনা বিভাগের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো জানান, জিআই সনদ সম্পর্কে তাদের কিছু জানানো হয়নি। বাংলাদেশ আবেদন করেছে কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তর হয়ত বলতে পারবে।

জিআই সনদ নেওয়ার উদ্দেশ্য হলো, আন্তর্জাতিক মহলে পণ্যের ব্র্যান্ডিং, যা থাকলে ক্রেতারা সহজে বিশ্বাস করে এটি আসল পণ্য। তাই বাংলাদেশ সুন্দরবনের মধুর জিআই সনদ পাওয়ার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, এমনটা দাবি এ খাত-সংশ্লিষ্টদের।