ঢাকা ০৯:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে ভোটের পরদিন নৌকার ৪০ সমর্থকের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর

ঝিনাইদহে ভোটের পরদিন নৌকার ৪০ সমর্থকের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর

ঝিনাইদহে ভোটের পরদিন নৌকার প্রায় ৪০ সমর্থকের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে। প্রায় দুই শ মানুষ প্রথমে শুড়াপাড়া, পরে হিরাডাঙ্গা ও সবশেষে বাসুদেবপুর গ্রামে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে, অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের।

সোমবার (৮ জানুয়ারী) সকাল ৮টার পর থেকে এ হামলার ঘটনা ঘটে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নে। ঝিনাইদহ-২ (সদর ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকীর পক্ষে কাজ করায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের।

প্রসঙ্গত, ঝিনাইদহ-২ আসনে নির্বাচনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী জয়লাভ করেছেন। পরাজিত হয়েছেন দুইবারের সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পোড়াহাটি ইউনিয়নে নির্বাচনের শুরু থেকেই উত্তেজনা দেখা দেয়। নৌকার প্রার্থীর কর্মীদের বিরুদ্ধে ভোটের আগে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের মারপিট ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ছিল। এ নিয়ে যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম খলিলসহ বেশ কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলাও হয়েছে। এর জের ধরেই হামলা হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জয়ের পর স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা এই তাণ্ডব চালিয়েছেন অভিযোগ করে যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম খলিল বলেন, সকাল ৮টার দিকে হামলাকারীরা প্রথমে পোড়াহাটি ইউনিয়নের শুড়াপাড়া গ্রামে হামলা করে। তারা ওই গ্রামের আবদুল গনি মাস্টার, জয়নাল বিশ্বাস, নুর মোহাম্মদ, সব্দুল আলী, ইব্রাহিম হোসেন, বাবুর আলীসহ ১৫ জনের বাড়িঘরে হামলা করে। এরপর তারা পাশের হিরাডাঙ্গা গ্রামে হামলা চালায়। সেখানে যুবলীগ নেতা রাজাসহ তার পরিবারের আরও বেশ কয়েকজনের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। হিরাডাঙ্গার মতিয়ার রহমান শাহ, ফিরোজ আহম্মেদ শাহ, বিশারত আলী শাহসহ ১৫ জনের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সবশেষে হামলাকারীরা বাসুদেবপুর গ্রামের শের আলী, শরিফুল ইসলাম, সাইফুল ইসলামসহ ১০ জনের বাড়ি ভাঙচুর করে।

এ বিষয়ে নাসের শাহরিয়ারের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম খলিলের সঙ্গে নির্বাচনকেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব চলছিল পোড়াহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ওরফে হিরণের সঙ্গে। এ বিষয়ে শহিদুল মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

শুড়াপাড়া গ্রামে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত আবদুল গনি বলেন, তারা কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীরা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিল, সেইভাবে লোকজন জড়ো করেছে। তারা লাঠিসোঁটা আর ধারালো অস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালায়। নিজেদের ঘরের মালামাল রক্ষা করতে গিয়ে এই হামলার সময় কমবেশি চারজন আহত হয়েছেন।

ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন উদ্দিন বলেন, গ্রামগুলোর কিছু বাড়িঘর ভাঙচুরের খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় পুলিশি টহল রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ঝিনাইদহে ভোটের পরদিন নৌকার ৪০ সমর্থকের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর

আপডেট সময় ০৬:২৬:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৪

ঝিনাইদহে ভোটের পরদিন নৌকার প্রায় ৪০ সমর্থকের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে। প্রায় দুই শ মানুষ প্রথমে শুড়াপাড়া, পরে হিরাডাঙ্গা ও সবশেষে বাসুদেবপুর গ্রামে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে, অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের।

সোমবার (৮ জানুয়ারী) সকাল ৮টার পর থেকে এ হামলার ঘটনা ঘটে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নে। ঝিনাইদহ-২ (সদর ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকীর পক্ষে কাজ করায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের।

প্রসঙ্গত, ঝিনাইদহ-২ আসনে নির্বাচনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী জয়লাভ করেছেন। পরাজিত হয়েছেন দুইবারের সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পোড়াহাটি ইউনিয়নে নির্বাচনের শুরু থেকেই উত্তেজনা দেখা দেয়। নৌকার প্রার্থীর কর্মীদের বিরুদ্ধে ভোটের আগে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের মারপিট ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ছিল। এ নিয়ে যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম খলিলসহ বেশ কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলাও হয়েছে। এর জের ধরেই হামলা হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জয়ের পর স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা এই তাণ্ডব চালিয়েছেন অভিযোগ করে যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম খলিল বলেন, সকাল ৮টার দিকে হামলাকারীরা প্রথমে পোড়াহাটি ইউনিয়নের শুড়াপাড়া গ্রামে হামলা করে। তারা ওই গ্রামের আবদুল গনি মাস্টার, জয়নাল বিশ্বাস, নুর মোহাম্মদ, সব্দুল আলী, ইব্রাহিম হোসেন, বাবুর আলীসহ ১৫ জনের বাড়িঘরে হামলা করে। এরপর তারা পাশের হিরাডাঙ্গা গ্রামে হামলা চালায়। সেখানে যুবলীগ নেতা রাজাসহ তার পরিবারের আরও বেশ কয়েকজনের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। হিরাডাঙ্গার মতিয়ার রহমান শাহ, ফিরোজ আহম্মেদ শাহ, বিশারত আলী শাহসহ ১৫ জনের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সবশেষে হামলাকারীরা বাসুদেবপুর গ্রামের শের আলী, শরিফুল ইসলাম, সাইফুল ইসলামসহ ১০ জনের বাড়ি ভাঙচুর করে।

এ বিষয়ে নাসের শাহরিয়ারের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম খলিলের সঙ্গে নির্বাচনকেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব চলছিল পোড়াহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ওরফে হিরণের সঙ্গে। এ বিষয়ে শহিদুল মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

শুড়াপাড়া গ্রামে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত আবদুল গনি বলেন, তারা কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীরা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিল, সেইভাবে লোকজন জড়ো করেছে। তারা লাঠিসোঁটা আর ধারালো অস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালায়। নিজেদের ঘরের মালামাল রক্ষা করতে গিয়ে এই হামলার সময় কমবেশি চারজন আহত হয়েছেন।

ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন উদ্দিন বলেন, গ্রামগুলোর কিছু বাড়িঘর ভাঙচুরের খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় পুলিশি টহল রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।