দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ডাক্তার সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর সমর্থকরা বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দুই শতাধিক ভ্যান নিয়ে প্রচারণা করেন। পরে চুক্তি অনুযায়ী ভাড়া না দেওয়ার অভিযোগে নাটোর-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করেন ভ্যানচালকরা। প্রায় আধা ঘণ্টা পর পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) রাতে বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া কালিকাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, নাটোর-৪ আসনের নৌকার প্রার্থী ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর সমর্থনে স্থানীয় নৌকার সমর্থকরা প্রায় দুই শতাধিক ভ্যান নিয়ে দিনব্যাপী প্রচারণা (শোডাউন) করেন।
ভ্যানচালকদের দাবি, সারা দিন ভ্যান নিয়ে প্রচারণা করার বিনিময়ে ৫০০ টাকা দেওয়ার চুক্তি ছিল। কিন্তু সারা দিন প্রচার-প্রচারণা শেষে প্রার্থীর মালিকানাধীন এস আর পাটোয়ারী এডুকেয়ার বিদ্যালয়ে জমায়েত হলে সেখানে দায়িত্বে থাকা নির্বাচনি সমন্বয়কারী ও বনপাড়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লুৎফর রহমান তাদের ১০০ টাকা দিলে ভ্যানচালকরা এর প্রতিবাদ করেন। এসময় লুৎফর রহমান এক চালককে কয়েকটি চড় দিলে সব ভ্যানচালকরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। প্রতিবাদে নাটোর-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ চালকরা।
প্রচারণায় অংশ নেওয়া জোয়াড়ি ইউনিয়নের বাহিমালী গ্রামের ভ্যানচালক শমসের আলী ও জাবেদ বলেন, শর্ত অনুযায়ী আমরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভ্যান নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নৌকার শোডাউন করি। দুপুরে কেউ আমাদের খাবারও দেয়নি। সন্ধ্যায় যখন ১০০ টাকা দেয় তখন মন খারাপ হয়। এর প্রতিবাদ করলে কাউন্সিলর লুৎফর আমাদের একজনকে মারধর করে। আমরা গরিব মানুষ। এমন অমানবিক আচরণ কেন করবে? আমাদের অধিকাংশই এই টাকা নিয়ে বাজার করে পরিবারকে খাওয়াতে হয়। আমরা এর বিচার চাই।
কাউন্সিলর লুৎফর রহমান মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এলাকার ভ্যানচালকরা জানায়, টাকা ছাড়া স্বেচ্ছায় তারা একদিন নৌকার প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর পক্ষে ভ্যান নিয়ে প্রচারণা করবে। সে কথা অনুযায়ী, গতকাল তারা প্রচারণাও করেন। সারা দিন প্রচারণা শেষ করে এলে আমি মানবিকভাবে তাদের (ভ্যানচালক) চা-নাস্তা করার জন্য ১০০ টাকা করে দিতে চাই। এসময় একজন ছবি তুলতে থাকে। নিষেধ করলে অপরিচিত অনেক ভ্যানচালক তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এই পরিস্থিতি তৈরি করে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) শরীফ আল রাজীব বলেন, মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।