ক্লিন এনার্জি, গ্রিন ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা ও জ্বালানি খাতে ব্যয় সাশ্রয়ে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এক্ষেত্রে, সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারে যুগোপযোগী একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ইউজিসিতে ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সৌর বিদ্যুৎ উন্নয়ন মডেল’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর এসব কথা বলেন।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)- এর জ্বালানি উপদেষ্টা ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. শামসুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার ও ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান বিশেষ অতিথি এবং কমিশনের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া স্বাগত বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে ক্যাবের গবেষণা সমন্বয়ক প্রকৌশলী শুভ কিবরিয়া ‘পরিবেশ সুরক্ষা ও সৌর বিদ্যুৎ উন্নয়নে সামাজিক আন্দোলন: প্রেক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়’, নোভেলটি এনার্জি লিমিটেডের প্রজেক্ট কনসালটেন্ট প্রকৌশলী মো. ইন্তিখাব আলম ‘সোলার পিভি সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট আন্ডার অপেক্স মডেল ফর পাবলিক ইউনিভার্সিটি’, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক তাসমিয়া বাতেন ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এনার্জি অডিট পরিচালনা’ এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নুসরাত চৌধুরী ও সিহাব উদ্দিন ‘অফ-গ্রিড/ অন-গ্রিড ডিসি/এসি সৌর বিদ্যুৎ প্লান্ট পারফরমেন্স স্টাডি’ বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন।
ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য প্রফেসর আলমগীর বলেন, মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনার আওতায় সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছে। কাজেই, এখন থেকেই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ক্লিন এনার্জি এবং গ্রিন ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হবে।
প্রফেসর আলমগীর বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি ২০০৮ অনুসারে ২০২১ সালের মধ্যে ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু যুগোপযোগী নীতিমালার অভাবে এ খাতে এক শতাংশও বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হয়নি। অবকাঠামো তৈরিতে সোলার প্যানেল স্থাপনের পাশাপাশি এখান থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে কিনা সংশ্লিষ্টদের খতিয়ে দেখা উচিত।
তিনি আরও বলেন, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সংকটে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী একটি পদক্ষেপ হতে পারে। সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে কার্বন নির্গমন হ্রাস পাবে, ব্যয় সাশ্রয় হবে এবং পরিবেশের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারের আগে ফিজিবিলিটি স্টাডি করার পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে প্রফেসর আলমগীর বলেন, বাস্তবতার নিরিখে বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সপ্তাহে একদিন অনলাইনে পাঠদান করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন কার্যক্রমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। লোডশেডিং ও জ্বালানি সংকটের এই সময়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে।