সাড়ে চার বছর আগে সর্বশেষ ফিফটি করেছেন সৌম্য সরকার। সর্বশেষ ওয়ানডে শতকটিও করেছেন পাঁচ বছর আগে। সাড়ে চার বছরের মাঝে ব্যাট ধরতে পেরেছেন মোটে ছয়বার। অথচ আগের আট মাসে ব্যাটিং করেছেন ২০ ইনিংস।
পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, সর্বশেষ চার বছরে জতীয় দলে কতটা অনিয়মিত সৌম্য সরকার। বাংলাদেশ দলে তার আসা-যাওয়ার কারণ পড়তি ফর্ম। মাঝে এমনও সময় গেছে, প্রিমিয়ার লিগের একাদশ থেকে বাদ পড়তে হয়েছে সৌম্য সরকারকে।
ঘরোয়া ক্রিকেটে যে খুব ভালো করে আবার জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন, এমনও নয়।
তার নিউজিল্যান্ড সফরের দলভুক্তি নিয়ে বেশ আলোচনার ঝড় বয়ে যায়। তবে আজ সেসব অনেকটা শান্ত করেছেন নিজের ব্যাটে। ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসে করেছেন ১৬৯ রান। যদিও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি জিততে পারেনি বাংলাদেশ। সিরিজটিও হারতে হয়েছে। এই ম্যাচ শেষে সৌম্য বলেছেন, ‘আমরা ক্রিকেটাররা হাসার চাইতে বেশি কাঁদি।’
এক প্রশ্নের জবাবে এই বাঁহাতি ওপেনার বলেন, ‘ক্রিকেট খেলোয়াড়রা প্রতিদিন ভালো খেলবে না। আপনি যেমন একটা মানুষ প্রতিদিন ভালো খাবার আশা করবেন না, আমরাও প্রতিদিন ভালো খেলব আশা করি না। আমরা ক্রিকেটাররা হাসার চাইতে বেশি কাঁদি।
কেননা কেউ পুরো একটা সিরিজ খেললে ১-২টা ম্যাচ ভালো খেলে। বাকিটা তার খারাপই যায়। ওটা নিয়ে পড়ে থাকলে আমরা নিজেরাই পিছিয়ে যাব। সুতরাং যতটুকুই ইতিবাচক সেটা নিয়ে চিন্তা করা হয় বেশি। সৌম্য তার খারাপ সময়ে যাদের পাশে পেয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন, ‘সব কিছুর আগে আমি ধন্যবাদ দেব আমার পরিবারকে। আমার বউকে। সব কিছুতে সমর্থন করার জন্য। আমার সতীর্থরা তো আছেই।’
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন উঠল, দীর্ঘ সময় পড়তি ফর্মের মধ্য দিয়ে গেছেন সৌম্য। সে সময় তাকে নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তিগত আক্রমও করেছেন সমর্থকরা। কতটা কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে সৌম্যকে?
জবাবে বললেন, ‘একটা সময় দেখতাম কিন্তু শেষ এক বছর আমার ফোনে কোনো খবর আসে না। আমার ফেসবুকে, বন্ধু বা এমন কেউ ক্রিকেট নিয়ে কথা বললে আমি তার সঙ্গে থাকি না। যে ইতিবাচক কথা বলে আমি তার সঙ্গে থাকি। ইতিবাচক দিকগুলো চিন্তা করি। ভালো-খারাপ থাকবেই, খারাপ করলে তো আর ক্রিকেট ছেড়ে চলে যেতে পারব না, যেহেতু আমি ক্রিকেট খেলোয়াড়। ক্রিকেটের জন্যই এত দূর আসা।’
জীবন-জীবিকার জন্য খেলা চালিয়ে নিতে হয়েছে সৌম্যকে। সেখানেই একটু একটু করে নিজেকে তৈরি করেছেন তিনি, ‘আমি খেলোয়াড়, আমাকে তো খেলতেই হবে। ভালো করলে আপনারা ভালো লিখবেন, খারাপ করলে খারাপ লিখবেন। এটা আপনাদের কাজ। আমার কাজ খেলা, আমি খেলছি। এগুলো নিয়ে ওভাবে বেশি ভাবা হয়নি, ভাবলে নিজের ওপর বেশি চাপ আসত। নেতিবাচকতা বেশি আসত। আমি নিজের খেলার ওপর বিশ্বাস রেখেছিলাম, আমার যে প্রক্রিয়া ছিল, তার ওপর বিশ্বাস ছিল আমার।