দেশের নিট রিজার্ভ ২০ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৯ দশমিক ১৭ বিলিয়ন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা মহবিল (আইএমএফ) ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণ পাওয়ায় রিজার্ভের এই উল্লম্ফন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস হিসাবে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রোববার (১৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন তথ্য জানান। মুখপাত্র বলেন, গত শুক্রবার দুই দাতাসংস্থা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে যোগ হয় ১.০৯ বিলিয়ন ডলার।
এ সময় ৫ ইসলামী ব্যাংককে চিঠির বিষয় স্বীকার করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ বিষয়ে মুখপাত্র বলেন, ‘তাদেরকে সতর্কতামূলক চিঠি দেওয়া হয়েছে। সতর্কতা বাণী, এটা সিদ্ধান্ত না।’
এর আগেও আইসিবি ইসলামী ব্যাংককে ৭০০ কোটি টাকার সাপোর্ট দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পাঁচ ইসলামী ব্যাংক ২০ কর্মদিবসের মধ্যে ঘাটতি সমন্বয় না করলে অন্যান্য ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ হবে কি না, তা পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগ সিদ্ধান্ত নেবে।’
বিভিন্ন ব্যাংকের চলতি হিসাবে ঋণাত্মক হলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সাপোর্ট দেওয়া হয়, যা পরে সমন্বয় করে নেওয়া হয়- এটি চলমান প্রক্রিয়া বলেও জানান তিনি।
চলতি ডিসেম্বরের প্রথম দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, আল আরাফাহ ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংককে চিঠি দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, ‘চিঠি পাওয়ার ২০ কর্মদিবসের মধ্যে চলতি হিসাবের ঋণাত্মক স্থিতি সমন্বয়ের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পত্র প্রাপ্তির ২০ কর্মদিবসের মধ্যে আবশ্যিকভাবে আপনাদের চলতি হিসাবের ঋণাত্মক স্থিতি সমন্বয়ের জন্য আপনাদেরকে পরামর্শ প্রদান করা হলো।’
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমন্বয়ে ব্যর্থ হলে পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক এর সঙ্গে আপনাদের সম্পাদিত ‘ক্লিয়ারিং সেটেলমেন্ট এর জন্য নির্ধারিত হিসাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ সংরক্ষণ’ চুক্তি মোতাবেক আপনাদেরকে সব বা নির্দিষ্ট কোনো ক্লিয়ারিং প্লাটফর্ম থেকে বিরত রাখা হবে।
এদিকে গত এক বছর ধরে তারল্য সংকটে ভুগছে ইসলামী ধারার এ পাঁচ ব্যাংক। এসব ব্যাংকে আমানত বাড়লেও চাহিদামতো নগদ জমা (সিআরআর) ও বিধিবদ্ধ জমার (এসএলআর) টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখছে না। ফলে নিয়মিত দণ্ড সুদ বা জরিমানা গুনতে হচ্ছে। আবার এই জরিমানার টাকাও দিচ্ছে না কেউ কেউ।
২০ দিন পর সমন্বয় না করলে ব্যাংকগুলোর লেনদেন বন্ধ হবে কি না জানতে চাইলে মুখপাত্র মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক জানান, আমরা নিয়ম অনুযায়ী চিঠি দিয়েছি, সমন্বয় না করলে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এটাও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত।