ঢাকা ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ফরিদপুরে আওয়ামীলীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ভোট চাওয়াকে কেন্দ্রে করে ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের যদুনন্দী বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের ২৫টি গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের সালথা ও নগরকান্দা উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-২ সংসদীয় আসন গঠিত। এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার (৯ ডিসেম্বর) যদুনন্দী বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাল হোসেন মিয়ার পক্ষে একটি বৈঠক হয়। সেখানে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহদাব আকবর লাবুকে নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন জামাল হোসেন মিয়ার অনুসারী মো. কাইয়ুম মোল্লা। এরপর থেকে বাজারে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছিল।

এ উত্তেজনার মধ্যে আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে যদুনন্দী বাজারে ভোট চাওয়াকে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাল হোসেন মিয়ার অনুসারী কাইয়ুম মোল্লার সমর্থকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহদাব আকবরের অনুসারী যদুনন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রব মোল্লা ও উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি খন্দকার সাজ্জাদ হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বেলা ১২টার দিকে উভয় পক্ষের অন্তত ৫ থেকে ৬ শতাধিক লোক ঢাল, সড়কি, কাতরাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এতে পুলিশের পাঁচ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। এর মধ্যে রাজু (২৩) নামে এক যুবক পুলিশের গুলিতে আহত হন। আহতদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মুকসুদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

নৌকার প্রার্থী শাহদাবের অনুসারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রব মোল্লা বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই যদুনন্দী নবকাম কলেজের ভেতর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জামালের সমর্থক কাইয়ুম মোল্লা ও তার লোকজন। পরে আমাদের লোকদের ওপর হামলা করলে সংঘর্ষ বাধে। এতে আমাদের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাল হোসেনের অনুসারী কাইয়ুম মোল্লা বলেন, সোমবার সকাল ৬টার দিকে আমাদের সমর্থক টুকু ও জাহাঙ্গীরের বাড়িতে গিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য তাদের হুমকি দেয় শাহদাবের অনুসারী আব্দুর রব মোল্লা ও খন্দকার সাজ্জাদ। পরে জাহাঙ্গীর যদুনন্দী বাজারে আসলে তাকে ধরে জুতা দিয়ে পেটায় খন্দকার সাজ্জাদ। এ নিয়ে পরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ লেগে যায়। এ ঘটনায় আমাদের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সালথা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) পরিমল কুমার বিশ্বাস বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে সালথা থানার এসআই শরিফুল ইসলাম, আবু রায়হান নূর, আব্দুল হালিম, কনস্টেবল রাজু হোসাইন ও বাবু মিয়া আহত হয়েছেন। এখন ওই এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ৮টি ঢাল ও কয়েকটি লাঠি উদ্ধার করা হয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

দিনাজপুরে ইসলামী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত

ফরিদপুরে আওয়ামীলীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ

আপডেট সময় ০৭:০২:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ভোট চাওয়াকে কেন্দ্রে করে ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের যদুনন্দী বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের ২৫টি গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের সালথা ও নগরকান্দা উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-২ সংসদীয় আসন গঠিত। এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার (৯ ডিসেম্বর) যদুনন্দী বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাল হোসেন মিয়ার পক্ষে একটি বৈঠক হয়। সেখানে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহদাব আকবর লাবুকে নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন জামাল হোসেন মিয়ার অনুসারী মো. কাইয়ুম মোল্লা। এরপর থেকে বাজারে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছিল।

এ উত্তেজনার মধ্যে আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে যদুনন্দী বাজারে ভোট চাওয়াকে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাল হোসেন মিয়ার অনুসারী কাইয়ুম মোল্লার সমর্থকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহদাব আকবরের অনুসারী যদুনন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রব মোল্লা ও উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি খন্দকার সাজ্জাদ হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বেলা ১২টার দিকে উভয় পক্ষের অন্তত ৫ থেকে ৬ শতাধিক লোক ঢাল, সড়কি, কাতরাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এতে পুলিশের পাঁচ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। এর মধ্যে রাজু (২৩) নামে এক যুবক পুলিশের গুলিতে আহত হন। আহতদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মুকসুদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

নৌকার প্রার্থী শাহদাবের অনুসারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রব মোল্লা বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই যদুনন্দী নবকাম কলেজের ভেতর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জামালের সমর্থক কাইয়ুম মোল্লা ও তার লোকজন। পরে আমাদের লোকদের ওপর হামলা করলে সংঘর্ষ বাধে। এতে আমাদের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাল হোসেনের অনুসারী কাইয়ুম মোল্লা বলেন, সোমবার সকাল ৬টার দিকে আমাদের সমর্থক টুকু ও জাহাঙ্গীরের বাড়িতে গিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য তাদের হুমকি দেয় শাহদাবের অনুসারী আব্দুর রব মোল্লা ও খন্দকার সাজ্জাদ। পরে জাহাঙ্গীর যদুনন্দী বাজারে আসলে তাকে ধরে জুতা দিয়ে পেটায় খন্দকার সাজ্জাদ। এ নিয়ে পরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ লেগে যায়। এ ঘটনায় আমাদের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সালথা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) পরিমল কুমার বিশ্বাস বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে সালথা থানার এসআই শরিফুল ইসলাম, আবু রায়হান নূর, আব্দুল হালিম, কনস্টেবল রাজু হোসাইন ও বাবু মিয়া আহত হয়েছেন। এখন ওই এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ৮টি ঢাল ও কয়েকটি লাঠি উদ্ধার করা হয়েছে।