কলকাতায় উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে ৩ দিন ব্যাপী ‘নোয়াখালী উৎসব’। যার জেরে ভারতে বসবাসকারী নোয়াখালীর মানুষের মুখে তৃপ্তির হাসি।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্যদিয়ে কলকাতার সল্টলেকের পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে সূচনা হয় নোয়াখালী উৎসব। তিনদিনের উৎসবের প্রথমদিন বাংলাদেশ থেকে এসেছেন প্রায় ১৫০ জন প্রতিনিধি।
পশ্চিমবঙ্গে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসবে শুভ সূচনা করেন। অনুষ্ঠানে দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত ও পতাকা উত্তোলন করা হয়। এছাড়া অতীত স্মরণ করে নোয়াখালীর কৃতি সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, অধ্যাপক মনোজ রায় ভৌমিক, বিশিষ্ট সাংবাদিক তরুণ চক্রবর্তী, সুকান্ত সাহা, ডাক্তার অর্চনা মজুমদার, ধিরাজ মোহন চন্দ্রসহ দুই বাংলার বিশিষ্ট জনেরা।
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ নোয়াখালী উৎসবকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে ভবিষ্যতে তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘আমার জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশে মামা বাড়ি নোয়াখালীতে। সে কারণেই আমার নোয়াখালীর লোকেদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো। এ সম্মেলনে দুই বাংলার মানুষ এসেছে। আমাদের এই সংগঠন সর্ব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। কে হিন্দু, মুসলিম, ব্রাহ্মণ আর কে চণ্ডাল -কারও মধ্যে কোনো ফারাক নেই। নোয়াখালী উৎসবের মঞ্চ থেকে এই বার্তাই দিতে চাই। স্বাধীনতা আন্দোলন ও বঙ্গভঙ্গের আন্দোলনে নোয়াখালীদের অবদান ভোলার নয়। ’
বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব নোয়াখালী উৎসবের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, এটা একটি আনন্দের সংবাদ এপার বাংলা ও ওপার বাংলার নোয়াখালীর বাসিন্দাদের নিয়ে আজকের এই অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের মধ্যে নিজেদের সমগ্র পৃথিবীর নোয়াখালীর বাসিন্দা এক জায়গায় নিয়ে এসে সামনের দিকে হাতে হাত রেখে এক সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া।
এদিনের অনুষ্ঠানে প্রায় শতাধিকের বেশি প্রতিনিধি বাংলাদেশের নোয়াখালী থেকে কলকাতায় নোয়াখালী উৎসবে অংশগ্রহণ করেছে বলে জানান আহ্বায়ক রক্তিম দাশ।
এবারে উৎসবে অংশ নিয়ে নোয়াখালীর বাসিন্দা ফরিদ আহমেদ বলেছেন, ভালোবাসা ও হৃদয়ের টানে শিকড়ের সন্ধানে আমরা কলকাতায় এসেছি। আজকের এ অনুষ্ঠান যারা আয়োজন করেছেন, তারা সবাই নোয়াখালীর ভূমিপুত্র। এদের কারও জন্ম এখানে হলেও তাদের পূর্বপুরুষের জন্ম বাংলাদেশের নোয়াখালীতে। তাদের রেখে যাওয়া স্কুল, কলেজ, মাঠ সবকিছুই আমরা ব্যবহার করে শিক্ষা অর্জন করছি। জ্ঞান অর্জনও করছি।
আগামী দিনে এই উৎসব বাংলাদেশেও হবে বলে মঞ্চ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।